কালবৈশাখীর প্রলয় নাচ by হাসান আজিজুল হক

কালবৈশাখী নিয়ে স্মৃতিচারণা । কারণ এ মুহূর্তে আমার সামনে কালবৈশাখীও নেই, এখন সেটার চেহারাও আগের মতো দেখি না। এই প্রসঙ্গটিই এত বেশি অন্য রকম যে সাহিত্যিককে প্রশ্ন করার মতো বিশেষ কিছু নয়। এক হিসেবে এই প্রসঙ্গটি সাহিত্যে যেকোনো পাঠককে জিজ্ঞেস করতে পারা যায়, যদি জিজ্ঞেস করা হয়: আচ্ছা আপনি তো


চমৎকারভাবে বাংলা সাহিত্য পাঠ করেছেন, আপনি বাংলা সাহিত্যের একজন মনোযোগী পাঠক, কালবৈশাখীটা সাহিত্যে কীভাবে এসেছে, বলুন তো? তাঁকে জিজ্ঞেস করলে অনেকটা মানে পাওয়া যায়। আমার নিজের কাছে এই প্রসঙ্গটি বেশ অস্বস্তিকর, কেননা আমি কি বাংলা সাহিত্যের সবটুকু পড়েছি বা সবটা পড়ে ফেলা সম্ভব? কাজেই আমার মনে পড়ে না, কালবৈশাখী নিয়ে আলাদা কোনো আলোচনা কোথাও দেখেছি বা অন্য রকম কোনো চিত্র; এ মুহূর্তে তেমনভাবে মনেও পড়ছে না।
ছোটবেলায়, স্কুলে পড়ার সময় শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্তর তৃতীয় খণ্ড থেকে একটা অংশ আমাদের পাঠ্য ছিল। সেই অংশটির নাম ছিল—সমুদ্রের ঝড়। সেটা তো ঠিক কালবৈশাখী নয়, সাইক্লোন। সমুদ্রের মধ্যে যে সাইক্লোন হয়, তার অবিকল বা জীবন্ত বর্ণনা তাতে ছিল। অসাধারণ এক বর্ণনা শরৎচন্দ্রের সেই লেখাটিতে আছে। আমি বরং বলব যে ঝড় সম্বন্ধে যারা কিছু জানতে চায়, আমাদের বাংলা সাহিত্যের কোথায় কী আছে, সে বরং শ্রীকান্তর তৃতীয় খণ্ডটি দেখতে পারে। শ্রীকান্ত যখন রেঙ্গুন যাচ্ছে তখন সমুদ্রে যে ঝড় উঠল এবং প্রথম খবরটি দিল একজন খালাসি, নোয়াখালীর ভাষায়, সাবধানে থাকবেন, ঝড় হতে পারে; এরপর ঝড় কীভাবে চারপাশ ছেয়ে ফেলল, লোকজন কীভাবে খোলের মধ্যে ঢুকে পড়ল, গাছতলায় মুরগি এবং ছাগলগুলো কীভাবে মারা গেল ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ অসম্ভব সুন্দরভাবে সেখানে লেখা আছে।
কালবৈশাখীর বারবার উল্লেখ আমরা রবীন্দ্রনাথে পাই। গানের ভেতরে বা বৈশাখের নানা বর্ণনায় রবীন্দ্রনাথ কতভাবে স্তব করেছেন তার কোনো অন্ত নেই। আমার মনে হয় কালবৈশাখী নিয়ে, বৈশাখী ঝড় নিয়ে, এই বিষয়গুলো রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যে ভরপুর হয়ে রয়েছে। তাঁর ‘১৪০০ সাল’ কবিতাটি বুঝি সে রকম, তিনি লিখেছিলেন—‘আজি হতে শতবর্ষ পরে’ এ রকম অজস্র কবিতা তাঁর আছে।
এ মুহূর্তে আমার মনে পড়ছে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস, বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ উপন্যাসও এবং আমি যদি অতিরিক্ত ভক্তি না দেখাই তাহলে বলতে পারি, পৃথিবীর সাহিত্যে এক অনন্য উপন্যাস হচ্ছে পুতুলনাচের ইতিকথা। এই উপন্যাসটির একেবারে শুরুতেই যেটা আছে, ‘হারু ঘোষ গাছের তলায় দাঁড়িয়েছিল’, এভাবেই আছে, ঠিক মুখস্থ আমি বলতে পারছি না; ‘এই সময় আকাশের দেবতা তাহার দিকে চাহিয়া কটাক্ষ করিলেন।’ এখান থেকেই বোঝা যায়, আকাশের এই কটাক্ষ হচ্ছে বজ্রাঘাত। বজ্রাঘাত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হারু ঘোষের চেহারা কীভাবে বদলে গেল তা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উপন্যাসে অতি সুন্দরভাবে লিপিবদ্ধ আছে। এ রকম আকস্মিক আকাশ থেকে বজ্র নেমে আসা, কালবৈশাখী দেখা দিয়েছিল বলেই। গ্রামের সরল লোক হারু ঘোষ গাছের তলায় আশ্রয় নিয়েছিল বলেই মানিক এমন অসাধারণ বর্ণনা লিখতে পেরেছিলেন। কালবৈশাখী বা ঝড়ের কথা তো আলাদাভাবে মূল্যায়ন করার মতো সাহিত্যিক কোনো বিষয় নয়, কারণ ঝড়ের বর্ণনা যেমন আছে, তেমন জোছনার বর্ণনা আছে। আছে অন্ধকারের বর্ণনা। কিন্তু বৈশাখী ঝড় বলে সাহিত্যিক জায়গা থেকে আলাদাভাবে দেখার কিছু আছে বলে মনে হয় না। বর্ণনাটুকু বিশ্লেষণ করা ছাড়া।
আমার নিজের জীবন সম্পর্কে বলতে পারি, ঝড় নিয়ে আমার কিছু অভিজ্ঞতা আছে। এর ফলে ধারণা হয়, ঝড়ের নানা রূপ আছে। এই বাংলায় আমরা কালবৈশাখীর চেহারাটা অত স্পষ্ট দেখিনি। এখানে যা দেখেছি—সামুদ্রিক ঝড়, বন্যা এবং জলোচ্ছ্বাস। এসব আমি স্বচক্ষে দেখিনি। কিন্তু ঘটে যাওয়ার পর যে বিশাল বিস্তৃত মহাশ্মশানের মতো একটা জনপদ বিধ্বস্ত অবস্থায় চোখে পড়ে, তা আমি প্রত্যক্ষ করেছি। তখন বুঝতে পেরেছি, সমুদ্র থেকে উদ্ভূত যে জলোচ্ছ্বাস, সেটা সারা দেশকে কীভাবে ভূপাতিত করতে পারে। এর চেহারাটা কিন্তু সাহিত্যের বর্ণনার চেয়েও খুব অসাধারণভাবে এসেছে আমাদের চিত্রকলায়। বিশেষ করে একজনের কথা আমি বলব—জয়নুল আবেদিন। তাঁর চিত্রকলায় এ বিষয়টি অসাধারণভাবে এসেছে। দুটি ব্যাপার উল্লেখ করার মতো—একটা হচ্ছে দুর্ভিক্ষ নিয়ে তাঁর বিখ্যাত নকশাগুলো তো আছেই, দ্বিতীয়ত, সামুদ্রিক ঝড়ের, জলোচ্ছ্বাসের ওপর চিত্রকলা। মনে আছে, প্রথম দিনেই আমরা খবর পেলাম ২০ হাজার লোক মারা গেছে?
মনপুরা দ্বীপ। মনপুরার ঘটনা ঘটার কয়েক দিন পরে আমি একটা ছবি দেখেছিলাম, খবরের কাগজে বেরিয়েছিল—একজন ক্যামেরাম্যানের ধারণ করা অর্থাৎ জলোচ্ছ্বাস নিয়ে আমাদের চিত্রকলা যেমন অসাধারণ ছবি করেছে, তেমনি ক্যামেরাম্যান চমৎকার কিছু ছবি ধারণ করেছিল। পরে সেটি উদ্ধার করা হয়েছিল। সেখানে দেখেছিলাম, দুই গাছের মাঝখান থেকে বাবুই পাখির বাসার মতো একটা কিছু ঝুলছে বাতাসে। ভালো করে তাকিয়ে দেখছি, সেটা একটা শিশুর মৃতদেহ। এই শিশুটি দুই গাছের মাঝখানের ডালে আটকে গেছে। পানি ওই পর্যন্ত উঠেছিল। পাওয়া তো গেছে শিশুটি, কিন্তু পা এমনভাবে আটকানো আছে যে সে আর নিচে পড়তে পারেনি। পানি সরে গেছে। পরিষ্কারভাবে গাছটি দেখা যাচ্ছে, সেই গাছের একেবারে ওপরে ছোট্ট বাবুই পাখির বাসার মতো একটা শিশু ঝুলছে। প্রায় শুকিয়ে গেছে। এই দৃশ্য দেখেছিলাম।
এরপর দেখেছি একটি তালগাছের চেহারা, যে তালগাছে আমাদের কাঁসার যে বাটি আছে, সেই কাঁসার বাটি রান্নাঘর থেকে উড়ে গিয়ে তালগাছটার মাথার ঠিক নিচে, যেখানে গাছটা শেষ হয়ে গেছে, সেখানে অর্ধেকটারও বেশি সেই কাঁসার বাটি পুঁতে আছে। আমি যখন দেখেছি তখন তো পানি সরে গেছে। কাজেই তালগাছটার কত ওপরে পানি যেতে পারে আন্দাজ করলে বোঝা যায়। তার আগেই যে ঝড় উঠেছিল, সেই সময় রান্নাঘর থেকে একটা কাঁসার বাটি উড়ে গিয়ে সেই তালগাছটার ওপরে পড়েছিল এবং ওই কঠিন তালগাছকে ভেদ করে তীরের মতো গেঁথে আছে।
কালবৈশাখী সম্বন্ধে আমার নিজের আরও কিছু কথা বলতে পারি, ছোটবেলাকার স্মৃতি থেকে। আমার যে অঞ্চলে জন্ম, সেই অঞ্চল এবং সাধারণভাবে গোটা বাংলাদেশই, আবহাওয়ার দিক থেকে এলোমেলো ছিল না। এখন যেমন বর্ষাকালে, মাঝে বা শেষের দিকে বর্ষা এল বা বর্ষা এলই না; তখন কিন্তু এসব ছিল না। তখনকার দিনে ঋতুগুলো আসত অনেকটা ঘড়ির কাঁটা ধরে ধরে। আমার পরিষ্কার মনে আছে, পয়লা বৈশাখ থেকেই আরম্ভ হয়ে যেত কালবৈশাখী। এটা মনে থাকার কারণ হচ্ছে, চৈত্রসংক্রান্তির দিনে, শেষ দিনে আমাদের পাশের গ্রামে একটা বিশাল পুজোর আয়োজন হতো এবং তারপরই একটা মেলা বসত। মেলাটা হতো পয়লা বৈশাখে। খুব বড় মেলা। এই মেলার স্মৃতি নিয়ে আমি অনেক কথা লিখেছি এবং ভবিষ্যতে আরও কিছু লেখার প্রত্যাশা করি। আমি জানতাম, মেলা যেদিন থেকে শুরু হবে কালবৈশাখীও সেদিন থেকে শুরু হবে এবং তাই-ই হতো। আর দেরিও হতো না তেমন। ঠিক যেমন বসন্ত চলে গেল, বৈশাখ এসে প্রবেশ করল। এটা পরিষ্কার বোঝা যেত। কালবৈশাখীর সময় মেলায় যাব, মেলাতে তো প্রতিদিন যাওয়া হতো না; পয়সা কিছু জোগাড় হলে যেতাম। মেলায় যাব, বিকেলবেলা আকাশ একেবারে নীল, তীব্র রোদ। সেই সময় সাবধানে বেরুতে হতো। কারণটা হচ্ছে বোশেখ মাসের দুপুরবেলা বাবা চাইতেন ঘুমুতে হবে। ঘুম আসুক বা না আসুক, দুপুরবেলা ঘর অন্ধকার করে বাবা শুইয়ে রাখতেন। তখন মনে হতো বন্দিশালায় আটকে পড়েছি। খুব খারাপ লাগত। তখন গরম বা শীতকাল কোনো কিছু মানতে ইচ্ছে করত না। ফলে আমি অপেক্ষা করতাম, কখন রোদ পড়ে আসবে, কয়েক আনা পয়সা পেয়েছি, এটা নিয়ে মেলাতে যাব আর কি। বিকেলে যখন বের হব, আকাশ অত্যন্ত পরিষ্কার। কোনো মেঘ নেই। তৈরি হব, ঠিক সেই সময় পশ্চিম-দক্ষিণ কোণে অথবা উত্তর-পূর্ব কোণও হতে পারে একটুখানি, খুব সামান্য বিদ্যুতের মতো আভাস দেখা গেল। এটাই হচ্ছে কুলক্ষণ। এরই মধ্যে আকাশের কোণে বিদ্যুতের মতো চিড়িক চিড়িক আলো বিচ্ছুরিত হতে লাগল। সে এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার, মেঘটাকে চিরে একটা বিদ্যুতের রেখা ঝিলিক দিয়ে চমকে উঠছে। পাঁচ মিনিট সময় লাগত না, কেমন করে সমস্ত আকাশ মেঘে ঢেকে গেল; পশ্চিমাকাশে প্রথমে এবং হুড়হুড় করে সমস্ত আকাশ। তারপর বিকট শব্দ, যেন কোথাও অনেকগুলো লোক একসঙ্গে শব্দ করছে, ওখানে তো গাছপালা কম, বিশাল মাঠ—একেকটা গাছ যেন মহীরুহ, উন্মুক্ত মাঠ দিয়ে, অনেক সময় মাঠেই থেকে যেতাম, সেই বিশাল মাঠ পেরিয়ে আসতাম কালবৈশাখীকে উপেক্ষা করে। যে দেখেনি সে এই অভিজ্ঞতাটা টের পাবে না। ধুলো আসছে, বাতাসে শুকনো পাতা কিছু আসছে আর একটা প্রকাণ্ড বেগ, সেই বেগটার কথা ভাবা যায় না। এরপর বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি, আমরা যে যার মতো আশ্রয় নিয়ে নিয়েছি। এমনটা আমি অনেকবার দেখেছি। একবার দেখলাম, সার্কাসের এক বিরাট তাঁবু, ওখানে আমি গিয়েছিলাম, ঝড়ের সঙ্গে তাঁবুটা আকাশে উঠে পড়ল। তারপর দেখছি যে ন্যাকড়ার মতো ছিঁড়ে ছিঁড়ে কোথায় যে উধাও হয়ে গেল। সাধারণত সেই কালবৈশাখীটা আসার পরই প্রবলবেগে বৃষ্টি শুরু হতো। ভালো বৃষ্টি। তবে সেই বৃষ্টিটা খুব উপকারী। কখনো বেশি, কখনো কম। সেই সার্কাসের তাঁবু উড়ে যাওয়ার দৃশ্যটা এখনো চোখে ভাসে।
একবার আমি বড় চাচার সাইকেল নিয়ে বাড়িতে ফিরছি। কমপক্ষে আড়াই মাইল দীর্ঘ একটা মাঠ পেরুতে হবে। একটা গ্রাম থেকে আরেকটা গ্রাম, মাঝখানে কিছু নেই। এই মাঠের মাঝখানে যখন এসেছি—রাস্তায় গ্রীষ্মকালে জমির ধান বয়ে বয়ে গরুর গাড়ি নানা রকম রাস্তা তৈরি করে ফেলেছে। ওই রাস্তা ধরে সাইকেল চালাতে বেশ মজাই লাগত। যখন আমি আসছি, মাঝামাঝি যখন এসে পড়েছি তখন দেখছি, পূর্বদিক থেকে একটা ঝড় আসছে। আমি শুধু ভাবছি যে সাইকেলটা চালিয়ে নিয়ে সামনের গ্রামটার মধ্যে কোনো রকম ঢুকতে পারলে জানে বেঁচে যাব। হঠাৎ বাতাস আমাকে এমন কাবু করে ফেলল, প্যাডেল করার আর দরকার হচ্ছে না। মনে হচ্ছে সাইকেলটা উড়ছে। তখন প্যাডেল করা বন্ধ করে দিয়ে সাইকেলটাকে কন্ট্রোল করতে আমি হ্যান্ডেল দুটো চেপে ধরে আছি, তা না হলে সাইকেলসহ আমাকে উড়িয়ে নেবে। গ্রামে ঢুকতে পারলাম না, তার আগেই বৃষ্টি থামল। সামনেই একটা বড় গাছের নিচে আশ্রয় নিলাম। রাত হয়ে গেছে। বাড়ি ফিরতে হবে। সাইকেল নিয়ে ফেরা মুশকিল। এঁটেল মাটির রাস্তার কাদায় সাইকেল অচল হয়ে গেল। সাইকেলটা রাস্তার পাশে রেখেই বাড়ি চলে এলাম। পরের দিন গিয়ে দেখি, আমার যেমন সাইকেল তেমনই পড়ে আছে। এ রকম কিছু অভিজ্ঞতা আমার আছে। এখন আর তেমন করে কালবৈশাখী দেখি না।
আমার আত্মজীবনীর দুটি খণ্ড বেরিয়েছে—ফিরে যাই ফিরে আসি আর উঁকি দিয়ে দিগন্ত; এতে আমার ছোটবেলার নানা কথা আছে। কালবৈশাখীর কথা এখানেও কিছু পাওয়া যাবে। আমার নিজের অভিজ্ঞতাগুলোই সেখানে লিখেছি। স্মৃতিকহন হলেও এখানে কেবল আমার নিজের কথাই নেই বরং সেই সময়ের মাটি, মানুষ, পরিবেশ এবং আবহাওয়াকে চিত্রিত করার একটা প্রয়াস এতে আছে। ছোটবেলায় আমি একবার একটা অশ্বথগাছ দেখেছিলাম, ঝড়ের মধ্যে, স্কুলের মাঠ থেকে ফুটবল খেলে ফেরার সময়ে, প্রবল কালবৈশাখীতে একটা অশ্বথগাছ দেখলাম, ঝড়ে গাছটা কাঁপছে, নড়ে উঠল, তারপর পড়ে গেল শেকড় উপড়ে। এটা আমার উঁকি দিয়ে দিগন্ত-এ আছে।

No comments

Powered by Blogger.