মোহামেডানের বিদায়

ক্স সিটির মতো অখ্যাত দলের বিপক্ষে হারার পরই কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন মোহামেডান সমর্থকরা। শেষ ম্যাচ জিততে হবে মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে কাগজে-কলমে দ্বিতীয় সেরা দলটিকে হারানো যে কঠিন তা ধরেই রেখেছিলেন সবাই। নাম আর জার্সির ভারে যদি কিছু হয়? ভেতরে ভেতরে এমন আশা ছিল সমর্থকদের। কিন্তু জয় তো দূরের কথা, উল্টো মোহামেডানকে হারতে হয়েছে।
ফলে গত আসরের মতো এবারও ফেডারেশন কাপ ফুটবলের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হলো সমর্থকপুষ্ট ক্লাবটিকে। প্রথম ম্যাচে বিজেএমসির বিপক্ষে ড্র, পরের দুই ম্যাচে কক্স সিটি ও মুক্তিযোদ্ধার কাছে হার_ তিক্ত অভিষেক হলো ক্লাবটির নতুন কোচ এমেকার। তিন ম্যাচ পরই সমর্থকদের রোষানল থেকে বাঁচতে পুলিশি নিরাপত্তায় থাকতে হয়েছে এক সময় মোহামেডানের হয়ে ঢাকার মাঠ কাঁপানো এ নাইজেরিয়ানকে।
জয় প্রয়োজন ছিল দুই দলেরই। মোহামেডান পারেনি। আগের ম্যাচে বিজেএমসির কাছে হারা মুক্তিযোদ্ধা মোহামেডানকে হারিয়ে নিশ্চিত করে শেষ আটে খেলা। অথচ গতকাল মোহামেডানের শুরুটা ছিল সুন্দর, যা দেখে আশায় বুক বেঁধেছিলেন সমর্থকরা। প্রথমার্ধের ৩৫ মিনিট পর্যন্ত বল দখলে এগিয়েছিল মোহামেডান। ছোট ছোট পাস আর পরিকল্পিত খেলা ছিল চোখে পড়ার মতো; কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার ভাগ্য সহায়ক এক গোল পাল্টে দেয় ম্যাচের দৃশ্যপট।
মোহামেডান বিদেশিদের মধ্যে উইলকক নামের এক ফরোয়ার্ড ছাড়া অন্যদের মান নিয়ে প্রশ্ন সবার। কোচ এমেকাও তাদের পারফরম্যান্সে হতাশ 'কয়েকজনকে চলে যেতেই হবে।' খেলোয়াড়দের আগে পরখ করেননি? 'আমি তাদের দু'জনকে ভালো করে চিনি, যারা আমার সাবেক ক্লাবে খেলেছেন; কিন্তু এখানে এমন হচ্ছে কেন বুঝতে পারছি না। হয়তো নতুন জায়গা আর নতুন ট্রেনিংয়ে তারা খাপ খাওয়াতে পারছেন না'_ বলেন এমেকা।
তিনি বলেন, 'কেবল আমিই নই, মোহামেডানের অফিসিয়াল, সমর্থক সবাই হতাশ। মোহামেডান সমর্থকরা কখনোই এমন ফল দেখতে চান না।' এ দলটি নিয়ে বেশি ভালো আশা করা যায় না বলেও উল্লেখ করেন মোহামেডান কোচ।
চ্যালেঞ্জ ছিল মুক্তিযোদ্ধার কোচ সফিকুল ইসলাম মানিকেরও। কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে প্রয়োজন ছিল জয়, সেসঙ্গে পুরনো ক্লাবের বিপক্ষে প্রতিশোধ। যদিও প্রতিশোধ কথাটি বলতে চাননি তিনি_ 'প্রতিশোধ নয়, আমি ভেবেছি দল নিয়ে। আমাদের কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়া নিয়ে সংশয় ছিল। কৌশলে খেলে প্রয়োজনীয় জয় তুলে নিয়েছি।'
৩৭ মিনিটে এমিলির গোলে এগিয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা। নাইজেরিয়ান সানডে লাইন থেকে বল ধরে মাইনাস করলে এমিলি শুয়ে পড়ে গোল করেন। ৪১ মিনিটে সানডের শট মোহামেডানের নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার গোললাইন থেকে ক্লিয়ার না করলে প্রথমার্ধেই ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে পারত মুক্তিযোদ্ধা। তখন সফল না হলেও ৫৫ মিনিটে এমিলির বদলি হিসেবে মাঠে নেমেই ব্যবধান বাড়িয়ে দেন মিঠুন চৌধুরী। মামুনুলের পাস থেকে গোল করেন তিনি। মিঠুনের ক্রস থেকে তার ১০ মিনিট পর সানডে গোল করলে ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায় মোহামেডানের। ৭০ মিনিটে উইলককের গোল কেবল পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.