ইসি গঠন প্রসঙ্গ-রাষ্ট্রপতি বললে অনুসন্ধান কমিটি করবে সরকার

রাষ্ট্রপতির সম্মতি পেলে নির্বাচন কমিশন গঠনে অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন করবে সরকার। এ ক্ষেত্রে নতুন বিধি বা আইন প্রণয়ন করা হবে। সরকারের উচ্চপর্যায় এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেবে সরকারি দল আওয়ামী লীগ।


রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে কোনো প্রস্তাব দেওয়া হবে না। এমনকি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে কারও নামও প্রস্তাব দেওয়া হবে না। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত সরকার কার্যকর করবে। জানতে চাইলে যোগাযোগমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নেব। আমরা কোনো প্রস্তাব দেব না। তিনি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের কথা বললেও আমরা তা মানব।’
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিতর্ক এড়াতে রাষ্ট্রপতি ২২ ডিসেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেন। এরই মধ্যে জাতীয় পার্টি, সিপিবি, বিকল্পধারা, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), গণফোরাম, জাতীয় পার্টি (জেপি), ইসলামিক ফ্রন্ট, ইসলামী ঐক্যজোট, এলডিপি ও সাম্যবাদী দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে।
আজ বিএনপি ও কাল বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর সংলাপ শেষ হবে। এরপর রাষ্ট্রপতি মতামত দেবেন বলে বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে।
সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর বেশির ভাগই নির্বাচন কমিশন গঠনে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে। সাংবিধানিক পদে আছেন এমন ব্যক্তিদের নিয়ে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের জন্য দলগুলো মত দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইন বা বিধি প্রণয়নেরও দাবি জানানো হয়েছে।
সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে লইয়া এবং রাষ্ট্রপতি সময়ে সময়ে যেইরূপ নির্দেশ করিবেন, সেইরূপ সংখ্যক অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে লইয়া বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধানাবলীসাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দান করিবেন।’
তবে কোনো আইন না থাকায় রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
সংবিধানে নির্দেশনা থাকলেও গত ৪০ বছরে দেশে এ-সংক্রান্ত কোনো আইন করা হয়নি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই নতুন আইন প্রণয়নের কথা বলা হচ্ছে। কমিশন একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের খসড়াও তৈরি করেছে।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে। ২০০৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হন এ টি এম শামসুল হুদা এবং নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত হন ছহুল হোসাইন। অপর কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন যোগ দেন একই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি। সংবিধান অনুসারে এসব পদের মেয়াদ পাঁচ বছর।

No comments

Powered by Blogger.