নাটকীয় জয়ে সিরিজ পাকিস্তানের পানেসারের জবাবে রহমান

স্পোর্টস ডেস্ক: টার্গেট ছিল মাত্র ১৪৫। প্রথম ইনিংসে ৩২৭ রান করা ইংল্যান্ড দলের জন্য এটি অর্জনদুরূহ কোন স্কোর হতে পারে না। পাকিস্তানি শিবিরে তাই নেমে আসে কালো ছায়া। সমর্থক মহলে হাহাকার- হার বোধহয় আর এড়ানো গেল না। কিন্তু না, ক্রিকেট যে গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। কালো মেঘ সরিয়ে ফকফকে আলো বেরিয়ে আসতে বেশি সময় লাগেনি। দিনের খেলা শেষ হতে তখনও অনেকটাই বাকি। ঘূর্ণিঝড়ে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। খেলা ফুরিয়ে যায় একদিন আগেই। অধিনায়ক স্ট্রস কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সে যেন বালির বাঁধ। দু’ঘণ্টার চেয়ে বেশি সময় লাগেনি, উল্টে গেছে গণেশ। লক্ষ্যের অর্ধেকটা পথ পেরুতেই জ্বালানি শেষ। ইংল্যান্ড অলআউট ৭২ রানে। হারের ব্যবধানও ৭২। টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে এত কম রানে আর অলআউট হয়নি ইংল্যান্ড। প্রথম টেস্টে জিতে এগিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। কাল দ্বিতীয় টেস্টের জয়ে নিশ্চিত হয়ে যায় তিন টেস্টের সিরিজ। পর  আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে চারদিনের বেশির ভাগ সময়ে খেলার নিয়ন্ত্রণ ইংলিশদের হাতে থাকলেও রহমান-আজমল জুটির ঘূর্ণি ছিনিয়ে নেয় সব। পাকিস্তান কাল তাদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছিল ৪ উইকেটে ১২৫ রান নিয়ে। সেই রানের সঙ্গে আর ১০০ রানও যোগ করতে পারেনি তারা। ২১৪ রানে অলআউট। ফলে মাত্র ১৪৪ রানের পুঁজি পায় তাদের বোলাররা। আসাদ শফিকের বিদায়ের পর পাকিস্তানের আর কেউ বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেনি। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও তাদের লেজটা কাটা পড়ে দ্রুত। ১৯৮/৭ লাঞ্চের পরই ২১৪/১০ হয়ে যায়। ইংলিশ স্পিনাররাও যে দুর্বল নন তার প্রমাণ দিয়ে ৮ উইকেট তুলে নেন পানেসার-সোয়ান। অবশ্য এর মধ্যে ৬টিই ভারতীয় বংশোদ্ভূত মন্টি পানেসারের। চা বিরতির আগেই ইংলিশরা বুঝে যায় সামনে কঠিন সময়। ২২ ওভারে বহু কষ্টে ৩৯ রান তুলতে হারায় তার চার উইকেট। চা পান করে নেমে স্ট্রস-প্রায়র প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন কিন্তু আবদুর রহমান তা ব্যর্থ করে দেন। ইংল্যান্ড তাদের শেষ পাঁচ উইকেট হারায় পাঁচ রানে। ১৪ টেস্টের ক্যারিয়ারে ৩১ বছর বয়সী বাঁহাতি রহমানের এটিই সেরা বোলিং নৈপুণ্য। স্পিনার সোয়ানকে লেগবিফোর করে টেস্টে শততম উইকেটটি নেন সাঈদ আজমল। ৩৫ ছুঁই ছুঁই এ বোলারের এটি কেবল ১৯তম টেস্ট। ৩রা ফেব্রুয়ারি সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টটি শুরু হবে দুবাইতে।
টস: পাকিস্তান (ব্যাটিং)
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ২৫৭/১০, মিসবাহ ৮৪, আসাদ শফিক ৫৮, ব্রড ৪/৪৭ সোয়ান ৩/৫২
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩২৭/১০, কুক ৯৪, ট্রট ৭৪, ব্রড ৫৮, আজমল ৪/১০৮, হাফিজ ৩/৫৪
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ২১৪/১০, আজহার আলী ৬৮, আসাদ শফিক ৪৩, পানেসার ৬/৬২
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: টার্গেট(১৪৫)    রান    বল    ৪    ৬
স্ট্রস ক এলবি ডব্লিউ ব রহমান    ৩২    ১০০    ৩    ০
কুক ক অ্যান্ড ব হাফিজ    ৭    ৪০       ০     ০
বেল  ব আজমল      ৩    ৩       ০    ০
পিটারসেন এলবি ব রহমান    ১    ৮    ০    ০
মরগান ব রেহমান    ০    ২    ০    ০
প্রায়র ক শফিক ব আজমল    ১৮    ৪৫    ১    ০
ট্রট এলবি ডব্লিউ ব রহমান    ১    ১১    ০    ০
ব্রড ব রহমান    ০    ২    ০    ০
সোয়ান এলবি ডব্লিউ ব আজমল    ০    ৪    ০    ০
অ্যান্ডারসন ক গুল ব রহমান    ১    ২    ০    ০
পানেসার অপরাজিত    ০    ০    ০    ০
অতিরিক্ত(লেগ বাই-৯)    ৯
মোট (অল আউট, ৩৬.১ ওভার)        ৭২
উইকেট পতন: ১-২১ (কুক, ১৪.৬ ওভার), ২-২৬ বেল, ১৭.১ ওভার), ৩-৩৩ (পিটারসন, ২০.৪ ওভার), ৪-৩৭ (মরগান, ২০.৬ ওভার), ৫-৫৬ (স্ট্রস, ২৮.৬ ওভার), ৬-৬৮(ট্রট, ৩৪.৩ ওভার), ৭-৬৮ (ব্রড, ৩৪.৫ ওভার), ৮-৭১  (সোয়ান, ৩৫.৪ ওভার), ৯-৭২ (প্রায়র, ৩৫.৬ ওভার), ১০-৭২ (অ্যান্ডারসন, ৩৬.১ ওভার)।
বোলিং : হাফিজ ৮-৩-১১-১,গুল ৩-০-৫-০, আজমল ১৫-৭-২২-৩, রহমান ১০.১-৪-২৫-৬
ফল: পাকিস্তান ৭২ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা: আবদুর রহমান

No comments

Powered by Blogger.