সুযোগ কাজে লাগাতে হবে, বাড়াতে হবে সক্ষমতা-ভারতের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা

বিশ্বমন্দার কারণে দেশের বহির্বাণিজ্য যখন ভারসাম্য রক্ষায় হিমশিম খাচ্ছে, তখন ২৫টি বাদে বাংলাদেশের সব পণ্য ভারতীয় বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশসুবিধা পাওয়ার সংবাদটি নিঃসন্দেহে আশা জাগায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সম্প্রতি আদ্দুতে ১৭তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (সাফটা) আওতায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য স্পর্শকাতর পণ্য ৪৮০ থেকে ২৫টিতে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেন।


এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনপত্র রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে পৌঁছেছে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাণিজ্যসচিব একে বাংলাদেশের জন্য বড় পাওয়া বলে অভিহিত করেছেন।
এখন প্রশ্ন হলো, এই সুবিধা আমরা কতটা কাজে লাগাতে পারব। সাফটার আওতায় এই সুবিধা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশ যথাক্রমে আফগানিস্তান ও মালদ্বীপও পাবে। দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় নেপাল ও ভুটান আগে থেকেই এ সুবিধা পেয়ে আসছে। ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশ এ থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হওয়ার কথা। বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা আছে। কেননা মূল ভূখণ্ড থেকে সেখানে পণ্য পরিবহন সময় ও ব্যয়সাপেক্ষ। নেতিবাচক তালিকা তুলে নেওয়ার পর আন্তরিক চেষ্টা চালালে এখন আমরা সেই সুযোগ পুরো কাজে লাগাতে পারব।
বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৪০৭ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। ভারত থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে ৪৫৮ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য। এবং ভারতে রপ্তানি হয় ৫১ কোটি ২০ লাখ ডলারের পণ্য। চীনের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি আরও বেশি।
বাণিজ্য বৈষম্য কমাতে হলে সক্ষমতা অর্জনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দেশের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদনের বিকল্প নেই। এখন ভারতীয় বাজারের কথা মাথায় রেখে মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে মনোযোগ বাড়াতে হবে। দ্বিতীয়ত, ভারতের পক্ষ থেকে যেসব অশুল্ক বাধা রয়েছে তাও দূর করতে সরকারকে উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে।
সর্বোপরি আমাদের উৎপাদিত পণ্যের মান এমন হতে হবে, যার প্রতি আমদানিকারকেরা সহজেই আকৃষ্ট হয়। একই সঙ্গে দামও হতে হবে যুক্তিসংগত। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ক্রেতা ধরে রাখতে পণ্যের উৎকর্ষই একমাত্র নিয়মক।

No comments

Powered by Blogger.