নওগাঁর শিমুলতলী সেতু আট বছরেও হলো না

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার শিমুলতলী সেতুর নির্মাণকাজ আট বছরেও শেষ হয়নি। সেতুটির কাজ নির্ধারিত সময় শেষ না হওয়ায় ইতিমধ্যে ব্যয় বেড়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নওগাঁ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এলজিইডি ২০০৪ সালে ধামইরহাটের শিমুলতলী এলাকায় আত্রাই নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়। ব্যয় ধরা হয় প্রায় ছয় কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
সাড়ে পাঁচ মিটার চওড়া এবং প্রায় ৪০০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণের প্রথম ধাপে ঠিকাদারের মাধ্যমে দুই কোটি ১১ লাখ ৭৩ হাজার টাকায় ১৮টি পিলার নির্মাণের কাজ শেষ হয় ২০০৫ সালে।
পরে ২০০৬ সালের প্রথম দিকে এলজিইডি সেতুর বাকি কাজ করানোর জন্য দরপত্র আহ্বান করে। এ পর্যায়ের শুরুতে চার কোটি ৪৮ লাখ ১১ হাজার টাকার এ কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি কিছু কাজ করে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখে। ফলে প্রায় এক বছর নির্মাণকাজ বন্ধ থাকে।
এলজিইডির নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু মো. শাহরিয়ার জানান, নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে দিলে প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানা করা হয়। এরপর ২০০৯ সালে সেতুর বাকি কাজ করার জন্য দরপত্র আহ্বান করলে ছয় কোটি ১০ লাখ ৮২ হাজার টাকার এই কাজ পায় নওগাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জে ই অ্যান্ড এমএসএইচ জেভি। কিন্তু ঠিকাদার নির্ধারিত সময় কাজ শেষ করতে না পেরে সময় বাড়ানোর আবেদন জানালে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ঠিকাদারকে চলতি বছর জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার সময় দিয়েছে।
নওগাঁর জে ই অ্যান্ড এমএসএইচ জেভির স্বত্বাধিকারী শামসুল হক বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সময়মতো অর্থ ছাড় না করায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। তবে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের দুজন ঠিকাদার তাঁদের কাজ শেষ না করে ইস্তফা দেওয়ায় এবং মন্ত্রণালয় থেকে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগসহ সেতুর ব্যয় বৃদ্ধির অনুমোদন পেতে দেরি হওয়ায় মাঝে কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকে। তবে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরু করার পর আর সমস্যা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন-আমাইতারা সড়কে শিমুলতলী এলাকায় আত্রাই নদীর ওপর ওই সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে নওগাঁর ধামইরহাট ও সাপাহার উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ বৃদ্ধিসহ রাজশাহী, বগুড়া, জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সঙ্গে উল্লিখিত দুই উপজেলাবাসীর সড়ক যোগাযোগ সহজ হবে।
শিমুলতলী গ্রামের আফজাল হোসেন বলেন, সেতুটি নির্মাণ হলে কৃষিপ্রধান এই এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য কৃষকেরা স্বল্প সময় ও কম খরচে উপজেলা সদরে নিতে পারবেন।

No comments

Powered by Blogger.