রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া-১৫০০ শিশু হাসপাতালে ভর্তি, একজনের মৃত্যু

তলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলাসহ চাঁদপুর সদর ও পার্শ্ববর্তী জেলার শিশুদের মধ্যে ব্যাপক হারে রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। তীব্র শীতের কারণে এ রোগ দেখা দিয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
গত ২০ দিনে অন্তত দেড় হাজার শিশুকে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণাকেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) মতলব শাখায় ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে রায়হান নামের একটি শিশু ১৪ ডিসেম্বর মারা যায়।


আইসিডিডিআরবি মতলব শাখা সূত্র জানায়, ১ থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত রোটা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সেখানে এক হাজার ৫০০টি শিশু ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে চাঁদপুর সদরের ২২০, ফরিদগঞ্জের ১১৫, হাইমচরের ৩৫, হাজীগঞ্জের ১২০, কচুয়ার ৯০, মতলব উত্তরের ১০৫, মতলব দক্ষিণের ১১০ ও শাহরাস্তির ৬০, কুমিল্লার বরুড়ার ১৪৫, লাকসামের ৫৫, দাউদকান্দির ৩০ ও চান্দিনার ৫২ এবং লক্ষ্মীপুর সদরের ৭০ ও রায়পুরের ১২০ জন। অন্যরা কুমিল্লা সদর ও তিতাস এবং লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার।
সূত্র বলেছে, বর্তমানে যে হারে (গড়ে প্রতিদিন ৭৫ জন) রোগী ভর্তি হচ্ছে, তা বছরের স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি।
গতকাল মঙ্গলবার আইসিডিডিআরবির মতলব শাখায় গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রের আন্তবিভাগ ও বহির্বিভাগ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীতে ঠাসা। তাদের বেশির ভাগই এক বছর বয়সী শিশু। গতকালও ৯২ জন ভর্তি হয়েছে।
হাজীগঞ্জ উপজেলার মতিনাবাদ গ্রামের রীতা চক্রবর্তী জানান, তাঁর সাত মাস বয়সী মেয়ে নিবেদিতাকে ১৭ ডিসেম্বর ভর্তি করানো হয়েছে। তাকে গ্লুকোজ স্যালাইন, রাইস স্যালাইন ও কলা খেতে দেওয়া হয়েছে। এখন অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে।
মতলব দক্ষিণের খাদেরগাঁও এলাকার ফাতেমা আক্তার বলেন, তাঁর নয় মাস বয়সী ছেলে হাসানকেও ১৭ ডিসেম্বর ভর্তি করা হয়েছে। হাসানকে বেবি জিংক, রাইস স্যালাইন, কলা ও সুজি খেতে দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে চলছে বুকের দুধ। পরিস্থিতি এখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে।
জানতে চাইলে কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা চন্দ্রশেখর দাস প্রথম আলোকে বলেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় তীব্র শীতে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এটাকে রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া বলা হয়। তিনি বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের গ্লুকোজ স্যালাইন, সুজি, রাইস স্যালাইন ও বেবি জিংক দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া শিশুদের ঘন ঘন বুকের দুধ এবং খাওয়ার স্যালাইন খাওয়াতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চন্দ্রশেখর দাস আরও বলেন, কেন্দ্রে পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। বিলম্বে ভর্তির কারণে শিশু রায়হান মারা গেছে বলে তিনি জানান। শিশুটির বাড়ি কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি গ্রামে।

No comments

Powered by Blogger.