কয়েকদিনের ট্রেনিংয়ে কী বীরত্ব না দেখাল মুক্তিরা-সাক্ষাৎকার by আরপি সিং

সাক্ষাৎকার গ্রহণ:অজয় দাশগুপ্ত রাজেন্দ্র পল সিং শিখ ধর্মাবলম্বী। একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে লড়েছেন আমাদের হয়ে। বয়স তখন মাত্র ২২ বছর (জন্ম ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৮)। ডিসেম্বরের শুরুতে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনীর সঙ্গে তিনি প্রবেশ করেন বাংলাদেশে। এ সময়ে একটি বড় গেরিলা দলের সঙ্গী হয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে লড়তে গিয়েই তিনি শিখ ধর্মাবলম্বীদের পরিচয়ের আবশ্যকীয় চিহ্ন লম্বা চুল


ও দাড়ি বিসর্জন দেন। চার দশক পরও তিনি রয়ে গেছেন ক্লিন শেভড। মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে থেকে অসম সাহসে লড়ার জন্য পেয়েছেন 'বিশিষ্ট সেবা মেডেল'। বিজয়ের চলি্লশ বছর উদযাপনের সময়ে তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার ইচ্ছা একাত্তর বিষয়কে উপজীব্য করে একটি পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ রচনা এবং বাংলা ও হিন্দিতে টিভি ধারাবাহিক নির্মাণ। এর কাজও শুরু হয়েছে। ঢাকা সফরকালে সমকালের সঙ্গে তিনি একাত্তরের নানা প্রসঙ্গে কথা বলেছেন
স্বাধীনতা সংগ্রামী বাবার কথা
রাজেন্দ্র পল সিংয়ের বসবাস ভারতের উত্তর প্রদেশে। তার বাবা ভগ সিং পাঞ্জাবি। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অবসান ঘটানোর সংকল্প নিয়ে তিনি লড়েছেন। ভগৎ সিংয়ের সহকর্মী ছিলেন তিনি। জেল এড়াতে আত্মগোপনে থেকেছেন। পালিয়ে থেকেছেন বর্তমান মিয়ানমারে। সেখানে অং সান সু চির বাবা জেনারেল অং সানের সানি্নধ্য পেয়েছেন। পুলিশ তার সন্ধান পেয়ে গেলে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রামে আসেন। সেখান থেকে পালিয়ে ঢাকায়। ১৯৪২ সালে মহাত্মা গান্ধীর 'ভারত ছাড়' আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ছিলেন। পরে উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর জেলায় কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশের পাশে
রাজেন্দ্র পল সিং সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ১৯৬৯ সালে। ১৯৭১ সালে পদ ছিল ক্যাপ্টেনের। সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলেও বাংলাদেশের নেতাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে না, এ বিষয়ে দিলি্লর ক্ষমতাসীনরা নিশ্চিত ছিলেন বলে তিনি জানান এবং এটা ধরে নিয়েই ইন্দিরা গান্ধীর সরকার সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। দিলি্লর এটা জানা ছিল, পাকিস্তানি শাসকরা মনে করত যে কেন্দ্রের ক্ষমতায় বাঙালিদের মূল দল আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হলে পূর্ব পাকিস্তানকে আগের মতো শোষণ করা যাবে না। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ছিল এরই পরিণতি। একাত্তরের প্রথমদিকে ভারতের কাছে নিশ্চিত খবর আসে যে, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে তড়িঘড়ি করে দুই ডিভিশন সৈন্য পূর্ব পাকিস্তানে নেওয়া হয়েছে। একই সময়ে বেলুচিস্তানের কসাই হিসেবে কুখ্যাতি পাওয়া টিক্কা খানকে নিয়োগ দেওয়া হয় আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে। এসবই ছিল স্পষ্ট ইঙ্গিতবহ। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ যে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না, বরং সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, ভারত এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি নানা সূত্রে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে অবহিত করা হয় বলে রাজেন্দ্র পল সিং জানান। নির্বাচনে নিরঙ্কুশ রায় পেয়েও দলটি যে ক্ষমতায় যাচ্ছে না, সেটা বঙ্গবন্ধুও জানতেন। তিনি দলের নেতৃত্বকে সেভাবেই প্রস্তুত করেন। তিনি এটাও মনে করতেন যে, ব্যক্তিগতভাবে তিনি ভারতে চলে গেলে পাকিস্তানি শাসকরা প্রচার করবে যে, সবকিছু ভারতের পরিকল্পনামতো ঘটছে। সম্ভবত এ কারণেই তিনি ২৫ মার্চ রাতে বাসভবনে অবস্থানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, যা ছিল চরম ঝুঁকিপূর্ণ। একজন সাচ্চা দেশপ্রেমিকই কেবল এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। শেখ কামাল বলেছেন, ২৫ মার্চ সকালেও বাবা তাকে বলেছেন_ তিনি বাসা ছেড়ে সরে গেলে পাকিস্তানিরা তাকে ধরার জন্য চরম নৃশংসতা চালাবে। আর ভারতে গেলে বলবে, 'বাংলাদেশের জনগণ নয়, ভারতই সবকিছুর মূলে।' তবে বঙ্গবন্ধু জেলে কিংবা মুক্ত জীবনে যেখানেই থাকুন না কেন, জনগণ তাকেই নেতা হিসেবে বেছে নিয়েছে। মৃত্যুর পরও তাকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায়নি। বললেন আরপি সিং।
শরণার্থীর স্রোত
একাত্তরের মার্চের দিকে রাজেন্দ্র পল সিংয়ের (আরপি সিং) ইউনিট ছিল পশ্চিম দিনাজপুরের রায়গঞ্জ এলাকায়। ২৫ মার্চের পর সেখানে শরণার্থীরা দলে দলে যেতে থাকে। তাদের কাছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতার বিবরণ শোনেন। নির্যাতিত অনেক নারী-পুরুষও সীমান্ত অতিক্রম করে। ভারত সরকার এ সময়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিভিন্ন সূত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেঙ্গল রেজিমেন্ট, পূর্ব পাকিস্তানের পুলিশ ও সীমান্ত রক্ষার জন্য মোতায়েন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস_ এসবের বাঙালি অফিসার ও জওয়ানরা পাকিস্তানি বাহিনীকে সামরিকভাবে মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এমন ধারণা ভারতে ছিল বলে তিনি জানান। কিন্তু ২৫-২৬ মার্চের অপারেশন সার্চলাইট বাস্তবায়নের মাধ্যমে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাদের বিপুল ক্ষতিসাধনে সক্ষম হয়। এ বাস্তবতায় বাঙালি তরুণদের নিয়ে বড় ধরনের মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বাংলাদেশ সরকার। ভারত সরকারও এ বাস্তবতায় তার কৌশলে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনে। রাজেন্দ্র পল সিং বলেন, মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেওয়া তরুণদের দেখেছি, তারা বাসস্থান ও খাদ্যের জন্য মোটেই উদ্বিগ্ন ছিল না। তারা চেয়েছে সামরিক ট্রেনিং এবং অস্ত্র ও গুলি। তারা দেশের জন্য জীবনদানে প্রস্তুত হয়েই ঘর ছেড়েছে। পাকিস্তানি শাসকরা বাঙালিদের এ অদম্য মনোভাব আদৌ বুঝে উঠতে পারেনি। ২৫ মার্চ ও পরের কয়েকটি দিন প্রচণ্ড হামলায় তারা বাঙালিদের প্রতিরোধ ক্ষমতা চুরমার করে দিয়েছে বলে আত্মপ্রসাদ লাভ করেছিল। কিন্তু দেখা গেল, বাংলাজুড়ে মুক্তিবাহিনী সক্রিয়। এপ্রিল-মে মাসে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দেশছাড়া হতে বাধ্য করা হলো। তাদের ধারণা ছিল, হিন্দুরা ভারতে গিয়ে মুসলিমবিদ্বেষ ছড়াবে এবং সেখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হবে। এভাবে ভারত বাংলাদেশকে সহযোগিতার পথ থেকে সরে দাঁড়াবে। কিন্তু তাদের হতাশ হতে হলো যখন দেখল যে প্রতিরোধ সংগ্রাম ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করছে। 'মুসলমান-হিন্দু সবাই অস্ত্র হাতে নিয়ে পাক বাহিনীকে মোকাবেলা করবে, এটা তাদের হিসাবেই ছিল না', স্মৃতিচারণ করেন আরপি সিং।
শেখ কামালের প্রশিক্ষক
বাংলাদেশ সরকার এ সময়ে নিয়মিত সেনাবাহিনী গড়ে তোলার জন্যও পদক্ষেপ গ্রহণ করে। শুরু হয় সামরিক প্রশিক্ষণ। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামালের সঙ্গে এখানেই রাজেন্দ্র পল সিংয়ের সাক্ষাৎ হয়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু অসাধারণ জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। তিনি বন্দি থাকা অবস্থায়ও তার নামেই যুদ্ধ পরিচালনা হচ্ছিল। তার দুই তরুণ পুত্র শেখ কামাল ও শেখ জামাল মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেয়। কামালের সাহচর্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ভারত ও অন্যান্য দেশের সেনাবাহিনীতে অফিসার পদে ট্রেনিং গ্রহণকারীরা অনেক সুবিধা পায়। কিন্তু বাংলাদেশের জন্মলগ্নে যারা চরম ঝুঁকি নিয়ে এ ট্রেনিং গ্রহণ করেন, তারা অশেষ কষ্ট সহ্য করেছেন। শেখ কামালও ব্যতিক্রম ছিলেন না। তিনি ছিলেন স্বল্পভাষী ও বিনয়ী। পাকিস্তান আমলে তার বাবাকে বারবার জেলে নেওয়া হয়। 'কামালের কাছ থেকেই জেনেছি, বড় বোন শেখ হাসিনা ও তার পরীক্ষার সময়েও শেখ মুজিবকে ধরে নিয়েছে পুলিশ', বলেন তিনি। ট্রেনিং শেষ হতে না হতেই তাদের চলে যেতে হয় রণাঙ্গনে। নৌ-কমান্ডো হিসেবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরাও চট্টগ্রাম, চাঁদপুর ও চালনা বন্দরে পাকিস্তানি জাহাজে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। 'মাত্র কয়েকদিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে কী বীরত্বই না মুক্তিযোদ্ধারা দেখিয়েছিল! তাদের স্যালুট', বলেন আরপি সিং।
ডিমলা রণাঙ্গনে
আরপি সিং একাত্তরের ৩ ডিসেম্বর নীলফামারী জেলার ডিমলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তার সঙ্গে ছিলেন আটশ পঞ্চাশ জনের মুক্তিযোদ্ধার একটি দল। তারা জলঢাকার মিরগঞ্জ ও ডোমারের বোড়াগাড়ি মুক্ত করেন। ডিমলায় পাকিস্তানি বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি ছিল। এ সময়ে আরপি সিং কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে বাংলার কৃষকের বেশ ধারণ করেন। তাদের পরনে লুঙ্গি, হাতে কৃষিকাজের সরঞ্জাম। শীতের মধ্যেও খালি পায়ে চলেছেন জমির মধ্য দিয়ে। পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের যেতে দেয়। এর ফলে তারা পেছন দিক থেকে পাকিস্তানি অবস্থানে আক্রমণ চালাতে সক্ষম হন। 'তবে সবকিছুই সম্ভব হয়েছে স্থানীয়দের সর্বাত্মক সহযোগিতার কারণে', আরপি সিং বলেন। এ যুদ্ধে ৫-৬ জন পাকিস্তানি সেনা মারা যায়, বাকিরা পালিয়ে যায়। ৭ ডিসেম্বর মুক্ত হয় বোড়াগাড়ি। ১০ ডিসেম্বর মিরগঞ্জ থেকে পালানোর সময় পাকিস্তানি সেনারা একটি বড় সেতু উড়িয়ে দেয়। 'তবে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ করে দিতে স্থানীয় জনগণ দ্রুতই বাঁশের সেতু তৈরি করে দেয়। আমাদের লক্ষ্য ছিল দ্রুত রংপুর চলে যাওয়া এবং এভাবে তা সম্ভব হয়', স্মৃতিচারণ করেন তিনি। পথে কালীগঞ্জে বড় ধরনের প্রতিরোধের শঙ্কা ছিল, কিন্তু পাকিস্তানিরা পালিয়ে যায়। এসব অভিযানের সময় কমান্ডার আরপি সিং ছিলেন লুঙ্গি পরা। তবে তার কমান্ড প্রদানের কাজ সহজ হয়ে যায় স্থানীয়রা একটি মোটরসাইকেল সংগ্রহ করে দেওয়ায়। ১৬ ডিসেম্বর তার দল ছিল রংপুর মেডিকেল কলেজে। পরে তাকে পাঠানো হয় পশ্চিম পাকিস্তানের রণাঙ্গনে। সেখানে যুদ্ধ অবসানের পর ফের আসেন রংপুর মেডিকেলে নিজের ইউনিটে। পাকিস্তানি কয়েকজন যুদ্ধবন্দির সঙ্গে তার কথা হয়। তারা বাঙালিদের বিরুদ্ধে নানাভাবে বিষোদ্গার করে।
নৃশংসতা
মুক্ত ডিমলায় খাবার খেতে বসেছে আরপি সিংয়ের দল। সেখানে এক বৃদ্ধ এসে হাজির। কখনও হাসছেন, কখনও কাঁদছেন। তিনি যে উন্মাদ হয়ে গেছেন, সেটা বুঝতে সময় লাগেনি। তাকে শান্ত করার চেষ্টা হয়। কিন্তু যে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তার জীবনে ঘটে গেছে তা কোনোভাবেই তার জন্য স্বাভাবিক জীবন নিয়ে আসতে পারে না। তার ছেলে যোগ দিয়েছেন মুক্তিবাহিনীতে। স্থানীয় রাজাকাররা এ খবর জেনে পাকিস্তানি সেনাদের একটি দল নিয়ে এক রাতে তার বাড়িতে হাজির হয়। তার ওপর নিষ্ঠুর অত্যাচার চালিয়ে জানতে চাওয়া হয় ছেলের গেরিলা ক্যাম্পের অবস্থান। কিন্তু কোনো খবর বের করতে না পেরে তার কিশোরী মেয়েকে সামনে নিয়ে আসা হয় এবং তাকে বাধ্য করা হয় শ্লীলতাহানিতে। এরপর হানাদার বাহিনীর সদস্যরা একে একে তাকে ধর্ষণ করে। অপমানে, ঘৃণায় মেয়েটি ওই রাতেই আত্মহত্যা করে। এ ঘটনা বর্ণনা করার সময় আরপি সিং অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, এমন নিষ্ঠুরতা ভাবাই যায় না। 'ওই ব্যক্তির সঙ্গে আর দেখা হয়নি। গত চার দশক এই কষ্টের স্মৃতি বহন করে চলেছি। তার মুক্তিযোদ্ধা ছেলে যুদ্ধ শেষে বাবা-মায়ের কাছে ফিরেছিল কি-না, সেটাও জানি না', বলছিলেন ডিমলা মুক্ত করার সাহসী যোদ্ধা সে সময়ের ক্যাপ্টেন আরপি সিং।
মীরগঞ্জের এক বাঙ্কারে তিনি দেখা পেয়েছিলেন নির্যাতিত দুই তরুণীর। পাকিস্তানি সেনা কমান্ডারের বাঙ্কারে তাদের পাওয়া যায়। তাদের একজনের পা উড়ে গেছে মাইন বিস্ফোরণে, আরেকজনের শরীরেও গুরুতর জখম। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর অগ্রাভিযান রুখতে পাকিস্তানি সৈন্যরা মাইন পুঁতে রাখে এবং তা কাজ করছে কি-না সেটা পরীক্ষার জন্য পাঠায় তাদের সঙ্গে থাকতে বাধ্য করা দুই মেয়েকে। সেখানে 'সফল পরীক্ষায় তারা গুরুতর আঘাত পায়', বলছিলেন ব্রিগেডিয়ার হিসেবে অবসর গ্রহণকারী আরপি সিং। 'ওরা কী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছিল?' তার এ প্রশ্নের উত্তর তো আমাদেরও জানা নেই। আরেক তরুণ গেরিলা ধরা পড়েছিল পাকিস্তানিদের হাতে। পরে দেখেছেন তার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ। জামা দেখে তাকে চিনতে পেরেছিলেন। 'এভাবে কত রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে যে জন্ম বাংলাদেশের', আরপি সিং আবার চোখ মুছলেন।
সমকাল :সাক্ষাৎকার প্রদানের জন্য ধন্যবাদ
আরপি সিং : বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা এবং সমকালের পাঠকদের ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.