শীতে ঠাণ্ডাজনিত অ্যালার্জি

শীতকালে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ে। এ সময় একটু অসতর্ক হলেই বিভিন্ন রোগ আক্রমণ করতে পারে। শীতকালে বেশি কষ্ট হয় শিশু ও বৃদ্ধদের। তাই এ সময় তাদের প্রতি একটু বেশি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া কারও ঠাণ্ডায় অ্যালার্জি থাকলে এ সময় খুব সহজেই তা বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। এ বিষয়ে ডা. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, অ্যালার্জি থেকে যেমন ঠাণ্ডা লেগে থাকে, তেমনি অতিরিক্ত ঠাণ্ডায়ও অ্যালার্জির প্রভাব দেখা দিতে পারে।


শীতকালের আবহাওয়া যেহেতু শুকনো, তাই এ সময় বাতাসে ধুলোবালির পরিমাণও বেশি থাকে। এই ধুলোবালি থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে। শীতকালে তাই প্রয়োজনের অধিক সময় বাইরে না থাকাই ভালো। এ সময় সকাল এবং রাতে কুয়াশা পড়ে। হাঁপানির সমস্যা থাকলে ধুলোবালিতে হাঁপানি বেড়ে যায় এবং অতিরিক্ত ঠাণ্ডা লেগে নিউমোনিয়াও হতে পারে। এ ছাড়া বসন্ত ঋতুতে বাতাসে ফুলের রেণু ভেসে বেড়ায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে এই রেণু আমাদের নাকে প্রবেশ করে। এর কারণেও অ্যালার্জি হতে পারে।
লক্ষণ
অ্যালার্জি হলে নাক দিয়ে পানি পড়বে এবং সে সঙ্গে মাথাব্যথা করবে। এ ছাড়া মাথার সামনের দিকে কপালে এবং চোয়ালে সাইনাসের ব্যথা হতে পারে। অতিরিক্ত ঠাণ্ডার ফলে কানে প্রদাহ দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া বহুদিন ঠাণ্ডা থাকার ফলে ছোটদের নিউমোনিয়া হতে পারে। ঠাণ্ডার প্রভাবে অনেক সময় স্বরযন্ত্রে প্রদাহের সৃষ্টি হয় এবং গলা ফুলে যায়। এ ছাড়া ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগার ফলে হাঁপানির সমস্যাও দেখা দেয়।
ঠাণ্ডার কারণে কানে প্রদাহের সৃষ্টি হলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে। কিছু অ্যালার্জির সঙ্গে ভাইরাস থাকে। এতে ভয় না পেয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করলে দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব। এ ছাড়া অ্যালার্জির সঙ্গে অনেক সময় ব্যাকটেরিয়াও আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এ অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক সেবন প্রয়োজন। ঠাণ্ডায় নিউমোনিয়া বেড়ে গেলে মুখে না নিয়ে শিরাতে অ্যান্টিবায়োটিক নিতে হবে।
যাদের হাঁপানির সমস্যা আছে, তাদের এ সময় একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে। ধুলোবালিতে খুব বেশি ঘোরাফেরা করা যাবে না। খেয়াল রাখতে হবে যেন ঠাণ্ডা না লাগে। গরম কাপড়গুলো সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। হাঁপানির ভাব থাকলে রেশমি বা পশমি কাপড় না পরে সুতি কাপড় পরাই সবচেয়ে ভালো। শীতে যেহেতু ধুলোবালিটা বেশি থাকে, তাই প্রতিদিন বিছানা-বালিশ ঝেড়ে মুছে রাখতে হবে। সম্ভব হলে লেপ, কম্বল রোদে দেওয়া যেতে পারে। এতে ধুলো-ময়লা কিছু কম লাগবে। বাইরে থেকে ফেরার পর ভালো করে কুসুম গরম পানি দিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে নিতে হবে। শীতকালে গোসলের সময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা ভালো। এতে ঠাণ্ডা লাগার ভয় কিছুটা কম থাকে। যাদের নিউমোনিয়ার সমস্যা রয়েছে, তাদের সকাল এবং রাতে কুয়াশা থাকা অবস্থায় বাইরে না যাওয়াই শ্রেয়।

লেখা : ফারহানা ইমা

No comments

Powered by Blogger.