দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মৃত্যুর মিছিল

শ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় বিষাক্ত মদপানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত পাওয়া খবরে মৃত্যু হয়েছে ১৪৩ জনের। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার ১২টি গ্রামে লোকজন ওই বিষাক্ত মদ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কলকাতার বাঙুর হাসপাতালের সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।


১৯ ডিসেম্বর এ ব্যাপারে এক সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চোলাই মদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারপিছু ২ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এখন পর্যন্ত অসুস্থর সংখ্যা ২০১। এদের মধ্যে অনেকেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক তাদেরকে ডায়মন্ড হারবার থেকে কলকাতার বাঙুর ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মগরাহাট, উস্তি ও মন্দিরবাজার এলাকার লোকজন বিষাক্ত মদপানে অসুস্থ হতে শুরু করে। ওই বিষাক্ত মদ পানকারী সবাই দরিদ্র শ্রমজীবী শ্রেণীর মানুষ।
শুধু ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালেই ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া এমআর বাঙুর হাসপাতালে ১৬ জন এবং মগরাহাটে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৃতদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তীব্র শ্বাসকষ্টের কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ এখনও মূল হোতাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। তাদের খোঁজে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শনে যান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চৌধুরী মোহন জাটুয়া।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চোখ জ্বালা, খিঁচুনি ইত্যাদি উপসর্গ নিয়ে বুধবার ভোর থেকেই খাপুর, কচুয়াপাড়া, সংগ্রামপুর, কালিকাপোতা, বামনাপাড়া, সেকেন্দরপুর, ধান্যকাটাসহ আরও বেশ কয়েকটি এলাকার অনেক বাসিন্দা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে অনেকে মারা যান। হাসাপাতালে নেওয়ার পরও মৃতের সংখ্যা বাড়তেই থাকে। চোলাই মদ বিক্রি ভারতে অবৈধ হলেও সস্তায় পাওয়া যায় বলে দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ তাই পান করে।
ঠিক কী কারণে ওই চোলাই মদে বিষক্রিয়া হয়েছিল তা অবশ্য এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। আগে চোলাইর সঙ্গে মিথাইল অ্যালকোহল মিশিয়ে দেওয়ায় মদ বিষাক্ত হয়ে উঠত। খবর :বিবিসি, এনভিটিভ, আনন্দবাজার

No comments

Powered by Blogger.