আলোচনার কেন্দ্রে যারা

মাহমুদ আব্বাস ও খালেদ মেশাল : পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ও ফাতাহ নেতা মাহমুদ আব্বাস এবং হামাস নেতা খালেদ মেশাল এ বছর সাফল্যের মুখ দেখেছেন। আব্বাস তার রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবি জাতিসংঘে নিয়ে গেছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। এটা মূলত ফিলিস্তিনের নৈতিক জয়। এ ছাড়া তাদের কূটনৈতিক জয় হিসেবেও দেখছেন বিশ্লেষকরা। এ ছাড়া এ বছরই বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রের সমর্থন আদায়


করেছেন মাহমুদ আব্বাস। অন্যদিকে হামাস নেতা মেশালের সবচেয়ে বড় জয় হচ্ছে ইসরায়েলি সেনা সদস্য গিলাদ শালিতের মুক্তির বিনিময়ে তিনি হাজারখানেক হামাস সদস্যকে কারাগার থেকে মুক্ত করেছেন। এ ছাড়া বছরের শেষের দিকে দুই দল নির্বাচনের বিষয়ে একমত হওয়া তাদের একটি বড় অর্জন।
আদেলে : ভদ্র-নম্র, মার্জিত পোশাকপরা ২১ বছর বয়সী ব্রিটিশ গায়িকা আদেলে জানুয়ারি মাসে তার অ্যালবাম প্রকাশ করেন। ২১ নামের ওই অ্যালবাম ব্রিটেনসহ বিশ্বজুড়ে পপ সঙ্গীতের জগৎজুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিল। 'অ্যালবামের আই হ্যাড হোপ দ্যাট ইউ সি মাই ফেস অ্যান্ড বি রিমাইন্ডেড ইট ইজ নট ওভারস' শিরোনামের গানটি আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। এক সময় ধারণা করা হচ্ছিল এ গানটি ফ্লিটউড ম্যাকসের সাড়া জাগানো 'রোমারস' গানটির সমান জনপ্রিয়তা লাভ করবে। সোরামর গানটিকে এ সময় পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেমের গান বলে মনে করা হয়। ২১ নামের অ্যালবামটি মোট ১ কোটি ৩০ লাখ কপি বিক্রি হয়। যা এ বছরের বিক্রির তালিকায় শীর্ষে।
আল শাবাব : সোমালিয়ার আল কায়েদা ঘনিষ্ঠ জঙ্গি সংগঠন আল শাবাব। সোমালি সরকার রাজধানী থেকে তাদের বিতাড়িত করেছে বলে ঘোষণা দিয়েছে। তারপরও জাতিসংঘ জানিয়েছে, খরাপীড়িত ও দুর্ভিক্ষ আক্রান্ত বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা আল শাবাবের কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষত আল শাবাব নিয়ন্ত্রিত এলাকায় যেতে পারছে না ত্রাণকর্মীরা। এ ছাড়া কেনিয়ায় হামলা অব্যাহত রেখেছে তারা। কেনিয়ায় বিদেশি পর্যটকদের অপহরণ অব্যাহ রেখেছে আঞ্চলিক জঙ্গিগোষ্ঠী শাবাব।
অজ্ঞাত ব্যক্তি : এ বছর বেশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে হ্যাকাররা। অজ্ঞাতপরিচয়ে বিভিন্ন দেশ এবং সংগঠনের ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে তারা। হ্যাকিংকে তারা সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করেছেন। বিশেষত এ বছর সনির প্লে স্টেশন হ্যাক করেছে এ অজ্ঞাত পরিচয়ধারী হ্যাকাররা। শিশু পর্নোগ্রাফি সম্বন্ধেও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে তারা।
এশাম এল এরিয়ান ও রাশিদ ঘানুচ্চি : এ বছরই পতন হয়েছে তিউনিসিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট জিনে আল আবেদিন বেন আলি ও মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের। এ বছরই দেশ দুটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। দুটি দেশে ইসলামপন্থিদের জয়জয়কার। এ ছাড়াও এ তালিকায় রয়েছেন তিউনিসিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বেন আলি, ইতালির প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বার্লুসকোনি, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ, নরওয়ে গণহত্যাকারী ব্রেইভিক, বিশ্বের শীর্ষ ধনী ওয়ারেন বাফেট। সূত্র : দ্য টাইম


ইউকিয়ো আমানো : ৬৪ বছয় বয়সী জাপানি কূটনীতিক ইউকিয়ো আমানো জাতিসংঘ পরমাণু সংস্থা আইএইএর মহাসচিব। তেহরান পরমাণু কার্যক্রমের বিষয়ে তিনি সতর্ক করেছেন যা ওয়াশিংটন, প্যারিস ও লন্ডনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ ছাড়া ইরানের পরমাণু কার্যক্রমের ওপর দীর্ঘ গবেষণা এবং এ বছরের শেষ দিকে ইরানের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন তিনি। যার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের ওপর অবরোধ আরোপ করেছে পশ্চিমারা। যদিও রাশিয়া ও চীন পশ্চিমাদের ওই নিষেধাজ্ঞা অনুসরণ করেনি। ২০১২ সালেও আমানো ইরানের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কাড়তে পারেন।
তিউনিসিয়ার নির্বাচনে জয়লাভ করেছে দীর্ঘদিন নির্বাসনে থাকা ধর্মীয় নেতা রশিদ ঘানুচ্চির এন্নাদাহ পার্টি। মিসরের বিজয়ের পথে মুসলিম ব্রাদারহুড নেতৃত্বাধীন ইসলামপন্থিরা। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের নজর তাদের দিকেই।
ব্রাদারহুডের নেতা এশাম এল এরিয়েনকে আরব বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করছেন অনেকেই। তবে ইসলামপন্থিদের জয়ে পশ্চিমারা মনে করছে আকাশ থেকে এখনও মেঘ কেটে যায়নি। এ কারণে সামনের বছর পশ্চিমাদের নজরে থাকবেন তারা।

No comments

Powered by Blogger.