বিশেষ এজলাসে শুনানি শুরু

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে বিশেষ এজলাসে শুরু হয়েছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের মামলার শুনানি। গতকাল সোমবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন বিশেষ এজলাসে শুনানি গ্রহণ করেন।এর আগে ঢাকা জজ আদালতে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর এজলাস কক্ষে এ মামলার শুনানি হতো। গত বৃহস্পতিবার সরকার কারাগারের পাশে বিশেষ এজলাসে মামলার বিচার কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউককে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদনের ওপর শুনানি হয় গতকাল।

শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২৩ অক্টোবর বাকি আসামিদের অব্যাহতির আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেন। গত বৃহস্পতিবার পুলিশের সাবেক আইজি খোদা বঙ্কে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদনের ওপর শুনানি হয়।
সিনিয়র আইনজীবী আবদুর রেজাক খান অভিযুক্ত ডিউকের পক্ষে আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদনের শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ডিউক এ ঘটনার কোনো কিছুর সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। প্রথমবার দাখিল করা অভিযোগপত্রে তাঁকে আসামি করা হয়নি। কিন্তু ঘটনার সাত বছর পর সম্পূরক অভিযোগপত্রে তাঁকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জড়িত করা হয়েছে।
গতকাল দুটি মামলার প্রথম ও সম্পূরক অভিযোগপত্রের কারাবন্দি ৩২ আসামিকে কড়া নিরাপত্তায় বিশেষ আদালতে হাজির করা হয়। এজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় আদালতের নিরাপত্তায়। মামলার একমাত্র জামিনে থাকা আসামি আরিফুল ইসলাম আরিফ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নানা অব্যবস্থাপনা : আদালত সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিশেষ এজলাসে গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি মামলার শুনানির পরিবেশ ছিল না। এজলাসে আইনজীবীদের বসার জন্য পর্যাপ্ত চেয়ার বা বেঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়নি। ছোট্ট একটি কাঠগড়ায় মাত্র তিন-চারজন আসামি দাঁড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। সংবাদকর্মীদের বসার জন্য কোনো ব্যবস্থাই রাখা হয়নি।
প্রথম চার্জশিটভুক্ত ২২ আসামির মধ্যে ১৪ জন কারাগারে রয়েছেন। বাকিরা পলাতক। সম্পূরক চার্জশিটে অভিযুক্ত ৩০ জনের মধ্যে আছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউক, বিগত জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ।
গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরকের পৃথক দুই মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে গত ৩ জুলাই।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। তিনি আহত হয়ে প্রাণে বেঁচে গেলেও বর্তমান রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন ওই ঘটনায় নিহত হন। আহত হন বহু নেতা-কর্মী।