১১৪টি যুদ্ধবিমান কিনতে দ্রুত টেন্ডার, বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা চুক্তির দোরগোড়ায় ভারত

রাফাল বিতর্কের মধ্যেই ফের ১১৪টি যুদ্ধবিমান কিনতে চলেছে ভারত। বিশ্বের সবচেয়ে বড় চুক্তির বরাত দেওয়ার শেষ ধাপে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ভারতীয় সেনার ক্ষমতা বাড়াতে এবং পুরনো যুদ্ধবিমানগুলি ধাপে ধাপে বাতিল করার লক্ষ্যে এই বরাতের প্রক্রিয়া দ্রুত কার্যকরী করার চেষ্টা চলছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্রে খবর। নির্দিষ্ট করে যুদ্ধবিমানের কথা না বললেও বায়ুসেনার চাহিদা পূরণে কার্যকরী পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে সংসদে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েক।
বরাতের হিসেবে এই চুক্তির মূল্য প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় এক লক্ষ তিন হাজার কোটি টাকা। বছরখানেক আগে প্রকাশ্যে আসা একটি সরকারি নথি থেকে জানা গিয়েছিল, যুদ্ধবিমানের চুক্তিতে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি করে এমন বেশ কয়েকটি সংস্থা আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বোয়িং, লকহিড মার্টিন কর্পোরেশন, সাব এবি-র মতো সংস্থা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, নথিপত্র প্রায় তৈরি। শেষ মুহূর্তে চূড়ান্ত খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখে খুব শীঘ্রই আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে।
কিন্তু চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ৮৫ শতাংশ যুদ্ধবিমানই ভারতে তৈরি করতে হবে। কেন্দ্রের একটি সূত্রে খবর, বোয়িং এর চুক্তি রয়েছে হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্যাল লিমিটেড এবং মহিন্দ্রা ডিফেন্স-এর সঙ্গে। এফ-২১ এর জন্য লকহিডের চুক্তি রয়েছে টাটা গ্রুপের সঙ্গে। অন্য দিকে আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে সাব এবির। ফলে যে সংস্থাই বরাত পাক, এই যৌথ উদ্যোগেই তৈরি হবে নুতন যুদ্ধবিমান। চুক্তির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পর প্রথম ধাপের যুদ্ধবিমান ভারতের হাতে তুলে দিতে হবে তিন বছরের মধ্যে।
সংসদে শ্রীপদ নায়েক সম্প্রতি জানিয়েছেন, বায়ুসেনার চাহিদা পূরণে দ্রুত চুক্তি কার্যকর করার প্রক্রিয়া এগোচ্ছে। শুরু হয়েছে যুদ্ধজাহাজ, ট্যাঙ্কার-সহ অন্যান্য বেশ কিছু যুদ্ধাস্ত্র কেনার জন্য প্রাথমিক নথিপত্র তৈরির কাজ। এছাড়া সাবমেরিন কেনার জন্য আগ্রহী সারা বিশ্বের সংস্থাগুলিকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রতিরক্ষায় আধুনিকীকরণ এবং অস্ত্রভাণ্ডার বাড়ানো কার্যত অপরিহার্য হয়ে উঠেছে মোদী সরকারের কাছে। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা হামলার পাকিস্তানের অত্যাধুনিক এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে ডগ ফাইটে নামাতে হয়েছিল পুরনো মিগ ২১-কে। যা বায়ুসেনা মহলে ‘উড়ন্ত কফিন’ নামেও পরিচিত। ফলে সেগুলি বাতিল করে আধুনিক যুদ্ধবিমান যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখেই দ্রুত চুক্তি কার্যকর করার দিকে এগোচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

No comments

Powered by Blogger.