বায়তুল মুকাদ্দাসে মার্কিন দূতাবাস চালু: গাজায় ৫২ ফিলিস্তিনি শহীদ

জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধন। উপস্থিত ছিলেন ইভানকা ট্রাম্প।
পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাসে (জেরুজালেম) মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধনের দিনে ইহুদিবাদি ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে অন্তত ৫২ ফিলিস্তিনি শহীদ এবং ২,৪০০ জন আহত হয়েছেন। ২০১৪ সালের গাজা যুদ্ধের পর একদিনে ফিলিস্তিনি হতাহতের এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যা।
আজ (সোমবার) ইসরাইলের স্থানীয় সময় বিকাল চারটার দিকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প ও ইভানকার স্বামী জেরার্ড কুশনার। কুশনার-ইভানকা দম্পতির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিফেন মিউচিন ও উপ-পরাষ্ট্রমন্ত্রী জন সুলিভান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী ঘোষণায় ইসরাইলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রেইডম্যান বলেন, “আজ আমরা ইসরাইলের জেরুজালেমে আমেরিকার দূতাবাস খুলছি।”
অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বক্তব্য রাখেন ভিডিও লিংকের মাধ্যমে। তিনি বলেন, “ইসরাইল একটি সার্বভৌম জাতি। তাদের নিজেদের রাজধানী নির্ধারণের অধিকার আছে। কিন্তু বহুদিন ধরে আমরা এই সুষ্পষ্ট বিষয়টিকে স্বীকৃতি দিতে পারিনি।”
একটি দীর্ঘস্থায়ী ‘শান্তি প্রক্রিয়া’ ত্বরান্বিত করার জন্যও ট্রাম্প প্রতিশ্রুতিব্ধ বলে জানান।
এদিকে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দূতাবাসের উদ্বোধনী বক্তব্যে ট্রাম্পকে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং দিনটিকে ইসরাইলের জন্য ‘গৌরবোজ্জ্বল দিন’ বলে বর্ণনা করেন।
অন্যদিকে, দূতাবাস খোলার আগে থেকেই গাজা সীমান্তে বিক্ষোভ করেছে ফিলিস্তিনিরা। এসময় নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীর উপর গাজার আকাশ থেকে ইসরাইলি ড্রোন হামলা হয়। কাটাতাঁরের বেড়ার ওপার থেকে ইসরাইলি সেনারা ছুঁড়তে থাকে গুলি। বিক্ষোভকারীদের দমন করতে ইসরাইলি সেনাদের ছোঁড়া টিয়ারশেল আকাশ থেকে পড়তে থাকে বৃষ্টির মতো। আর এ ঘটনায় হাজারো বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনি গুলি আর টিয়ারশেলের আঘাতে হতাহতের শিকার হয়।
স্থানীয় সাংবাদিকরা বলছেন, গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় এদিনের বিক্ষোভে অনেক বেশি ফিলিস্তিনি অংশ নিয়েছে। এছাড়া পশ্চিম তীর, বেথেলহেমেও বিক্ষোভ করেছে হাজারো ফিলিস্তিনি। সংঘর্ষে নিহতদের মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সী ৬ শিশু এবং হুইলচেয়ারে চলাফেরা করা এক ব্যক্তিও আছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে হুইলচেয়ারে বসা এক ফিলিস্তিনিকে গুলতি দিয়ে পাথর ছুড়তে দেখা যায়।
নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার লক্ষ্যে গত ৩০ মার্চ থেকে ভূমি দিবস পালন করছেন ফিলিস্তিনিরা। তখন থেকে আজকের আগ পর্যন্ত ইসরাইলি সেনারা গুলি করে ৪৫ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্ব উদ্বেগ প্রকাশ করলেও যুক্তরাষ্ট্র দখলদার ইসরাইলকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.