ভোট পরীক্ষা by রোকনুজ্জামান পিয়াস

খুলনা মহানগরের প্রায় পাঁচ লাখ ভোটারের অপেক্ষার প্রহর শেষ। আজ ভোট উৎসবের দিন। দিনভর সারা দেশের মানুষের দৃষ্টি থাকবে এ  শিল্পনগরীতে। এ নির্বাচন প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সামনেও কঠিন পরীক্ষা। সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে দলীয় প্রার্থী বিজয়ী করার সরকারি দলের সামনে এক চ্যালেঞ্জ। একই সঙ্গে বিরোধী জোট মরিয়া এ সিটিতে জয়ী হয়ে নিজেদের প্রতি মানুষের আস্থার প্রমাণ দিতে। জাতীয় নির্বাচনের আগে এ সিটিতে শান্তিপূর্ণ ভোট করার বড় পরীক্ষা নির্বাচন কমিশনের সামনে। আজ বিকালেই ভোট গ্রহণ শেষে জানা যাবে হার-জিতের আসল চিত্র। এদিকে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে প্রচার-প্রচারণা শেষ হওয়ার পর ভোটের আগের রাতে উত্তাপ ছড়িয়েছেন প্রার্থীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রার্থী ও তাদের কর্মীদের হয়রানির অভিযোগ এসেছে ভোটের আগের রাতেও। নিজ দলীয় এক কাউন্সিলর প্রার্থীর বাড়ি পুলিশ ঘেরাও করার অভিযোগে রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অবস্থান করে প্রতিবাদ জানান বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি সেখানেই অবস্থান করছিলেন। খুলনার পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার, নগরীর হোটেলে অবস্থান নেয়া বহিরাগত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও কাউন্সিলর প্রার্থীর বাড়ি ঘেরাওকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে তিনি সেখানে অবস্থান করেন। নির্বাচন সামনে রেখে গত কয়েকদিন ধরে খুলনার পরিস্থিতি সারা দেশের মানুষের নজর কেড়েছে। তাই তাদের উৎসুক চোখও থাকবে এ মহানগরীর দিকেই। শুধু ভোটের মাঠের দিকে নয়, মানুষের নজর থাকবে নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন পরিচালনাকারী নানা ব্যক্তি-গোষ্ঠীর দিকে। কারণ এ কমিশনের অধীনে কোনো বড় ধরনের নির্বাচন এটাই প্রথম। খুলনার মানুষের ভাষ্য, কমিশনের জন্য এটা একটা এসিড টেস্ট। এ নির্বাচনে কমিশনের ভূমিকা কেমন হবে তার ওপরই নির্ভর করবে আস্থা-অনাস্থার বিষয়। এদিকে গতকাল দিন ও রাতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী, এজেন্ট ও নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশি অ্যাকশন দেখা গেছে। এ নির্বাচনের অধিকাংশ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হয়েছে। নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিপক্ষ মেয়র প্রার্থী সরকারি দলের তালুকদার আবদুল খালেক ও বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তফসিল ঘোষণার প্রথম থেকে প্রতিদিনই নানা কারণে কমিশনে অভিযোগ করেছে বিএনপি প্রার্থী। কিন্তু কোনোটারই সুরাহা হয়নি এ পর্যন্ত। জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত বিএনপি ২৯টা অভিযোগ করেছে কমিশনে। এদিকে উৎসবে ভোট হলেও নগরীজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গতকাল দিনভর ও রাতের বিভিন্ন সময় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তার করতে তাদের বাড়িতে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ওইসব নেতৃবৃন্দকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের হুমকি ধমকি দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, খুলনা ছেড়ে যেতে। এতে আতঙ্কে অনেক নেতাকর্মীই এলাকা ছাড়া হয়েছেন। ভুক্তভোগী নেতাদের বক্তব্য, গ্রেপ্তারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রশাসন তা মানছে না। অপরদিকে গতকাল থেকেই মহানগরীর বাইরে থেকে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা বিভিন্ন হোটেলে এসে জড়ো হয়েছে- এমন খবর চাউর হয়েছে। এ ব্যাপারেও অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি। সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার ও ভোট কেন্দ্রের অনেক আনসারও দলীয় বিবেচনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি পর্যবেক্ষক নিয়োগেও দলীয়করণের অভিযোগ রয়েছে। সূত্রমতে, আওয়ামী সমর্থক স্বপন গুহ পরিচালিত এনজিও রূপান্তর ও বিতর্কিত এনজিও উত্তরণ-এর কর্মীদেরকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এসব এনজিও’র আড়ালে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে মাঠ পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত নগরজুড়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকের আধিপত্য ছিল। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী নিজে ছাড়াও প্রতিদিনই তার পক্ষে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় খণ্ড খণ্ডভাবে প্রচারণা চলেছে। অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর প্রচারণা তেমনটা চোখে পড়েনি। তার পক্ষে নেতাকর্মীরা মাঠে নামলেই গ্রেপ্তারসহ নানাভাবে হয়রানি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ নিয়ে খুলনাবাসীর মধ্যেও নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের বক্তব্য, এই জুলুম-নির্যাতন করে বিএনপি প্রার্থী মঞ্জুর জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নীরব বিপ্লব হবে এমনটাও মন্তব্য করেছেন অনেকে। ভাসমান ভোটারদের বেশির ভাগের মনেই এই গ্রেপ্তার অভিযান নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করতে দেখা গেছে। সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা ভোট দিতে চান। কিন্তু আদৌ সে সুযোগ পাবেন কিনা- এমন আশঙ্কা রয়েছে তাদের মধ্যে। গতকাল কথা হয় পিকচার প্যালেস মোড়ে অবস্থিত একটি সেলুনের কর্মচারী তাপসের সঙ্গে। তিনি জানান, নির্বাচন হবে। তবে তা হবে এক তরফা। নজরুল ইসলাম মঞ্জুর ভোটাররা মাঠেই যেতে পারবে না। তারা যেন ভোট দিতে না পারে, সেভাবেই আগে থেকে সবকিছু সেট করা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন এই সেলুন কর্মচারী। নগরীর অধিকাংশ ভোটারের সঙ্গে কথা বলে একই রকম মন্তব্য পাওয়া গেছে।
এদিকে গতকাল দিন ও রাতের বিভিন্ন সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন এলাকায় তালিকা ধরে ধরে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে ২৬ নং ওয়ার্ডের ভোটার কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা গালিব ইমতিয়াজ নাহিদের বাড়িতে দুপুর সোয়া ২টার দিকে পুলিশ অভিযান চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, অভিযানের খবর পেয়ে নাহিদ আগেই বাড়ি থেকে সরে পড়ে। পরে পুলিশ বাড়িতে থাকা নাহিদের পিতা-মাতাকে শাসিয়ে যায়। নাহিদকে তাৎক্ষণিকভাবে খুলনা ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দেয় তারা। অন্যথায় তাদেরকেও ধরে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। জানা গেছে, প্রথমে দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন সাদা পোশাকের পুলিশ যায়। এরপর একটি পিকআপ ভ্যান অভিযানে অংশ নেয়। ওই অভিযানের নেতৃত্বে ছিল সোনাডাঙ্গা থানার এসআই শহিদুল ইসলাম। এরপর বিকালের দিকে আবারো অভিযান চালায়। এই ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। খুলনা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শরিফুল ইসলাম বাবু জানান, পুলিশ তার বাড়িতেও বিকাল তিনটার দিকে অভিযান চালিয়েছে। এলাকা ছাড়ার জন্য তার বাবা মাকেও শাসিয়ে গেছে। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদল নেতা রুবেল আহমেদের বাড়ি গিয়ে হুমকি ধমকি প্রদান করে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ। রুবেলকে না পেয়ে তার ছোট ভাইকে তুলে নিতে যায়। তবে কৌশলে পালিয়ে যায়। কাউকে না পেয়ে বাড়ির মহিলা সদস্যদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে তারা। রাত আটটার দিকে সোনাডাঙ্গা পুলিশ গ্রেপ্তার করে মহানগর বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম তুহিনকে।
নগরীর কিছু কিছু এলাকায় সরকার দলীয় প্রার্থীর লোকেরা সাধারণ ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর খবরও পাওয়া গেছে। বিশেষ করে বিহারী ক্যাম্পগুলোতে সরকারদলীয় নেতাদের প্রভাব থাকে বরাবর। ১, ৫ ও ৭ নম্বর বিহারী ক্যাম্প এলাকায় এবং নগরীর রেললাইন এলাকার নিম্নবিত্ত কিছু ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই এলাকার কিছু ভোটারকে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য সরকারদলীয় প্রার্থীর লোকেরা হুমকি দিয়েছে। বিসিক শিল্প নগরীর কয়েকজন কারখানা শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের এলাকায় দলে দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন প্রার্থীর লোকজন আসে। সাধারণ শ্রমজীবীদের টার্গেট করে ভোট কেনে।
জাতীয় নির্বাচনের বার্তা দিতে চায় ইসি: সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে খুলনায় বিরাজ করছে জাতীয় নির্বাচনের আবহ। ভোটের পরিবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র পরস্পরবিরোধী অবস্থান ও প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে উত্তাপ ছড়াচ্ছে রাজনীতিতে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বছরের শুরুতে এ সিটি নির্বাচনের দিকে এখন সবার নজর। নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও ভোটার- সবার কাছে এ নির্বাচনের বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। এ নির্বাচন থেকেই বার্তা যাবে আরো চার সিটির ভোটের। জাতীয় নির্বাচনও কেমন হবে তার আভাসও মিলবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের বার্তা দেয়ার কথা বলেছেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। গতকাল তিনি বলেন, সামনে সংসদ নির্বাচন। আরো সিটি ভোট রয়েছে তার আগে। খুলনার মাধ্যমে আমরা সবাইকে বার্তা দিতে চাই-সুষ্ঠু নির্বাচনে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। সব সময় সুষ্ঠু নির্বাচন করবো আমরা। কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর গত বছর কুমিল্লা ও রংপুর সিটিতে ভোট করে সব মহলের প্রশংসা কুড়ায়। কুমিল্লায় বিএনপি ও রংপুরে জয় পায় জাতীয় পার্টি। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসি সংলাপে নিবন্ধিত সব দলসহ অংশীজনের মতামত নেয়। তাতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির পথও প্রশস্ত হয়। কিন্তু এ বছরের শুরুতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপ- নির্বাচন এবং উত্তর-দক্ষিণের নতুন ৩৬টি ওয়ার্ডের ভোট আটকে যাওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়ে ইসি। তবে বছর শেষে সংসদ নির্বাচনের আগে গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি ভোটের পরিস্থিতির দিকে নজর রয়েছে সব মহলের। এ অবস্থায় ১৫ই মে গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তারিখ দেয়া হয়। মাঝপথেই গাজীপুরের ভোট আটকে যাওয়ায় সরকার ও ইসির দিকে সমালোচনার তীর। খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হচ্ছে না জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলটি বলেছে, এমপি-মন্ত্রীরা প্রচারে নামতে পারেনি। অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠ চষে বেড়াচ্ছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডার বলেও অভিযোগ করে ক্ষমতাসীন দল। অন্তত এক ডজন দাবি নিয়ে লিখিত সুপারিশও দেয় আওয়ামী লীগ। নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল কমিশনকে বলেছে, খুলনার পুলিশ কমিশনারসহ তিন পুলিশ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
সরকারের পাশাপাশি ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দলটি। রিটার্নিং অফিসারকে প্রভাবিত করতেই ইসি’র একজন যুগ্ম সচিবকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। সেনা মোতায়েনের পক্ষে-বিপক্ষে দলগুলো বক্তব্য দিলেও কমিশন শুরুতেই বলে দিয়েছে, স্থানীয় সরকারে নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে না। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হবে। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটের সামগ্রী পৌঁছে গেছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মাঠে টহল ও কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। দলীয় এ ভোটে প্রার্থীদের বাকযুদ্ধ ও পাল্টাপাল্টি অভিযোগ থাকলেও শেষ মুহূর্তে ভোটের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, খুলনা সিটি এলাকা এখন ঠাণ্ডা অবস্থা। ভোট নিয়ে কারও কোনো আর শঙ্কা নেই। যারা অভিযোগ করেছে তাদের বুঝাতে সক্ষম হয়েছি-অভিযোগগুলো সত্যি নয়। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, খুলনা সিটি করপোরেশনে ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ড, ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। ভোটকেন্দ্র ২৮৯টি ও মোট ভোটকক্ষ ১ হাজার ৫৬১টি। ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। মেয়র পদে প্রার্থী পাঁচজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন এবং সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জনসহ মোট ১৯১ জন প্রার্থী খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটগ্রহণ উপলক্ষে খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ২২ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রতি ওয়ার্ডে পুলিশের মোবাইল ফোর্স এবং প্রতি তিন ওয়ার্ডের জন্য একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে র‌্যাবের একটি করে মোবাইল টিম টহল দিচ্ছে। নির্বাচনী এলাকায় ১৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ২০ জন পর্যবেক্ষক ও ৯ জন পর্যবেক্ষক সহায়ক নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া ৬০ জন এক্সিকিউটিভ এবং ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখান থেকে সার্বক্ষণিক নির্বাচনী এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ এবং নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.