মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ। স্বাধীনতার ৪৭তম বার্ষিকী। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল সূচনার দিন। স্বাধীনতার বাঁধনহারা আনন্দে, উৎসবে উদ্বেলিত হওয়ার দিন। যাদের ত্যাগ আর রক্তে অর্জিত  এই স্বাধীন ভূখণ্ড সেই বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন। মুক্তির আনন্দে সমৃদ্ধির শপথে মুষ্টিবদ্ধ হওয়ার দিন। ১৯৭১ সালের এ দিনে স্বাধীনতার ঘোষণায় উদ্দীপ্ত হয়ে মুক্তির লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছিল মুক্তিকামী জনতা। ঘোষণা হয়েছিল বাংলার স্বাধীনতা। নানা আয়োজনে এবার পালিত হচ্ছে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। পুরো জাতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করবে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহীদদের। উৎসবের আনন্দে পালিত হবে স্বাধীনতার বার্ষিকী। শ্রদ্ধার সঙ্গে জাতি স্মরণ করবে স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আজ সরকারি ছুটির দিন। দিবসটি উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারিভাবে পালিত হবে নানা কর্মসূচি। দিবসটি উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।
প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে জাতীয় দিবসের আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোক সজ্জিত করা হয়েছে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও রঙিন পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রসমূহ প্রকাশ করেছে বিশেষ ক্রোড়পত্র।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সারা দেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্র, হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা, সরকারি মাতৃ ও শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। স্বাধীনতা দিবসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করবে। কর্মসূচির মধ্যে আছে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী।
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করবে।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দু’দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় ও দেশব্যাপী দলীয় সকল কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং সকাল ৬টায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে ও সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন।
সকাল ১১টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন।
দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে তিনটায় রাজধানীর ফার্মগেটের খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা বক্তব্য রাখবেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ গৃহীত কর্মসূচি দেশবাসীর সঙ্গে একাত্ম হয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য দলের শাখাসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসমূহের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীসহ সর্বস্তরের জনগণ ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে আগামীকাল রাজধানীতে শোভযাত্রা বের করবে বিএনপি। জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, গণফোরাম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশু পার্কে বিনা টিকিটে প্রবেশ উন্মুক্ত রেখেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত এই পার্কে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে সকাল-সন্ধ্যা কেবলমাত্র শিশুদের জন্য বিনা টিকিটে প্রবেশ ও অন্যান্য সুবিধা উপভোগ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.