ছাত্রলীগের গুলি থেকে রক্ষা পেল না অনাগত শিশু

ছাত্রলীগের গুলি থেকে রক্ষা পায়নি মায়ের গর্ভে থাকা এক মেয়ে শিশু। মাগুরা শহরের দোয়ারপাড় কারিগরপাড়ায় আজ বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূ গুলিবিদ্ধ এবং ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি বোমার আঘাতে জখম হয়েছেন। এ ছাড়া সংগঠনের এক কর্মীকে প্রতিপক্ষ কুপিয়ে জখম করেছে। তিনজনকেই মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা সদর হাসপাতালে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী অস্ত্রোপচারের পর নাজমা খাতুন (৩৫) নামের ওই গৃহবধূ একটি কন্যাশিশুর জন্ম দেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই গৃহবধূ ও নবজাতক দুজনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মাগুরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক শফিউর রহমান বলেন, অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর তলপেটে বিদ্ধ হওয়া বুলেটটি গর্ভে থাকা মেয়ে শিশুকে ভেদ করে মায়ের মাংশপেশির ভেতর ছিল। বুলেটটি শিশুটির বেশ কয়েক জায়গায় আঘাত করে। শিশুটি শ্বাসকষ্টে ভুগছে। মেয়ে এবং মা দুজনের অবস্থা সংকটাপন্ন।
পুলিশ ও ছাত্রলীগ সূত্রের ভাষ্য, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দোয়ারপাড় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সরকার দলীয় এই ছাত্র সংগঠনের দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় সংঘর্ষও হয়েছে। এক প‌ক্ষের নেতৃত্বে আছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ভুঁইয়া। অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংগঠনটির সাবেক কর্মী আজিব্বর শেখ ও মুহম্মদ আলী। দুই পক্ষই প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব সাইফুজ্জামান শিখরের অনুসারী।
কামরুল ভুঁইয়ার সমর্থক আলমগীর হোসেনকে (২৮) গত বুধবার কুপিয়ে জখম করার জের ধরে আজ বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে কামরুল ভুঁইয়ার সমর্থকেরা আজিব্বরের মোটরসাইকেলটি পুড়িয়ে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজিব্বর শেখ ও মুহম্মদ আলীর সমর্থকেরা কামরুল ভুঁইয়ার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় কামরুলের বড় ভাই বাচ্চু ভুঁইয়ার নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নাজমা খাতুন (৩৫) গুলিবিদ্ধ এবং চাচা মমিন ভুঁইয়া (৬৫) বোমার আঘাতে আহত হন। এ ছাড়া তাঁরা মিরাজ শেখ (২৭) নামে কামরুলের এক সমর্থককেও কুপিয়ে জখম করেন। পরে তিনজনকেই হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মীর মেহেদি হাসান বলেন, তিনি ঘটনাটা শুনেছেন। তবে বিস্তারিত শুনেননি। তিনি বলেন, বিবদমান দুই পক্ষের কেউই বর্তমান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী নয়। তাঁরা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মী।
এদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান মুন্সী প্রথম আলোকে বলেন, এই ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.