আর্তপীড়িতের সেবক- জীবন্ত কিংবদন্তি দানবীর হাজী হাশেম

এক জীব্তি কিংবদন্তি হাজী আবুল হাশেম। মানবদরদী দানবীর, এ যুগের হাজী মুহসীন ও হাতেম তাই হিসাবে পরিচিত তিনি। শতাব্দী ছুঁই ছুঁই ৯৫ বছর বয়সী মানুষটি এখনও বয়সের ভারে নুয়ে পড়েননি।
এখনও বৃৰের ঋজুতা নিয়ে মেরম্নদ- সোজা, আর বুক টান টান করে আলস্য আর কান্তিকে জয়ের মাধ্যমে ছুটে বেড়ান দেশের এক প্রাপ্ত থেকে অপর প্রাপ্ত।
এ মানুষটির সখ্য আর ভালবাসার জোয়ার এসে পৌঁছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি গ্রামে। নাম পলসা। মহানন্দা নদীর তীরে ঐতিহ্যবাহী ঐতিহাসিক এই গ্রামটির অবস্থান। গ্রামের মানুষ নিজেদের অর্থে প্রতিষ্ঠা করেছে একটি মাধ্যমিক স্কুল। নাম পলসা হাইস্কুল। স্কুলটি ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে একটি ভিন্ন মাত্রার ইতিহাস। আর সেই ইতিহাসের স্রষ্টা জীবন্ত কিংবদন্তি হাজী আবুল হাশেম। কুমিল্লার চাপীতলা গ্রামে জন্ম হওয়া এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বর্তমানে ঢাকার ধানমণ্ডিতে অবস্থান করলেও নজর রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্কুলটির প্রতি। সাড়ে তিন শ' মাইল দূরে ঢাকায় অবস্থান করেও সর্বক্ষণিক নজর রেখে অভিভাবকের ভূমিকায় মনিটরিং করছেন গ্রামের স্কুলটিকে। কখনও ঘোষণা দিয়ে, আবার কখনও বিনা ঘোষণায় অকাতরে মুক্তহাতে সাহায্য করে চলেছেন। একাধিক শিৰাথর্ীর পোশাক থেকে শুরু করে বিনা পয়সায় পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। যুগিয়েছেন বই খাতা কালি কলমের পয়সাও। স্কুলের পাঠকৰ নির্মাণ থেকে শুরম্ন করে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থাও করেছেন তিনি। স্কুলটিতে দীর্ঘদিন ধরে ছিল না খেলার মাঠ। স্কুল সংলগ্ন বিশাল খাদ ও গর্ত (৬৮০ ী১৬৫ ফিট) ভরাট করেছেন ২ লাখ টাকার অনুদান দিয়ে। খাদটি ভরাট করায় বিরাট খেলার মাঠ নিয়ে মহানন্দার ধারে স্কুলটির অবস্থান একটি মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
হাজী আবুল হাশেম নতুন করে ঘোষণা করেছেন আরও দু'লাখ টাকার অনুদান দেবার। যাতে এই টাকা দিয়ে মাঠের রৰণাবেৰণে বাঁধ দিয়ে বন্যায় মাঠটি রৰা করা যায়। একই সঙ্গে তার অনুদানে গড়া স্কুলের মেধা তালিকায় জিপিএ পাওয়া শিৰাথর্ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে নতুন ঘোষণা দেন আরও ৫০ হাজার টাকার। এ টাকা এক শ' শিৰাথর্ীর আগামী এক বছরের টিউশন ফি বাবদ খরচ হবে।
এটি তাঁর জীবনের একটি খ- চিত্র। এই ধরনের শতাধিক প্রতিষ্ঠান তিনি প্রত্যৰভাবে দেখভাল করেন দেশজুড়ে। তার মধ্যে স্কুল-কলেজ ছাড়াও মাদ্রাসা, মসজিদ ও এতিমখানাও রয়েছে। দানবীর হাজী হাশেম শুধু এখানেই নয়, কুমিলস্না, ঢাকা ছাড়াও দেশের প্রায় ২৬টি জেলার বিভিন্ন প্রত্যনত্ম গ্রামে প্রায় ছুটে যান আর্তমানবতার সেবায়। মানুষ কষ্ট দুঃখ ও জরার মধ্যে রয়েছে, চিকিৎসা পাচ্ছে না কিংবা মেধা থাকার পরেও লেখাপড়া হচ্ছে না এ ধরনের খবর পাওয়া মাত্র ছুটে যান, পাশে দাঁড়ান, সাহায্যের হাত প্রসারিত করেন দানবীর এই ব্যক্তিত্ব। অসহায় আর্তপীড়িত মানুষের কল্যাণে জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়ে এসে প্রতিশ্রম্নতি আরও দৃঢ় করেছেন, অনুকরণীয় সেবা দিয়ে যাবেন শেষ দিন পর্যনত্ম।
_ডিএম তালেবুন নবী,
চাঁপাইনবাবগঞ্জ

No comments

Powered by Blogger.