বাংলাদেশে নির্যাতন ও দায়মুক্তির সংস্কৃতি চলছে

মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, ৪২ বছর ধরে বাংলাদেশে নির্যাতন ও দায়মুক্তির সংস্কৃতি চলছে।
গতকাল সাভারের ব্র্যাক-সিডিএমে মানবাধিকার রক্ষাকর্মীদের নিয়ে অধিকার এ সম্মেলন শুরু করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইইউ সহায়তায় ‘এডুকেশন অন দ্য কনভেনশন এগেইনস্ট টর্চার অ্যান্ড অপক্যাট অ্যায়ারনেস প্রোগ্রাম ইন বাংলাদেশ’ এর আওতায় এই সম্মেলনটি আয়োজন করে অধিকার। সম্মেলনে ৪০টি জেলার ৯০ জন মানবাধিকার কর্মী অংশগ্রহণ করেন যারা তৃণমূল পর্যায়ে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করেন। সম্মেলন উদ্বোধন করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য অ্যাডভোকেট ফৌজিয়া করিম ফিরোজ। অধিকারের প্রেসিডেন্ট ড. সি আর আবরারের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব কো-অপারেশন ফিলিপ জ্যাক। বক্তৃতা করেন এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনেরর প্রতিনিধি মো: আশরাফুজ্জামান এবং অধিকারের সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খান।

অধিকারের প্রেসিডেন্ট ড. সি আর আবরার বলেন, অধিকার সারা দেশে ৪০০ জন মানবাধিকার রক্ষাকর্মীদের নিয়ে কাজ করছে। মানবাধিকারের কাজ করতে গিয়ে তারা পুলিশি নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন এবং তাদের প্রতিনিয়ত প্রশাসনের অসযোগিতা ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হয়। এও কারণে অধিকার পিরিওডিক্যালি মানবাধিকার রাকর্মীদের সম্মেলন করে যাতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা এবং সমাধানের পথ বের করা যায়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি ফিলিপ জ্যাক বলেন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন এবং স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মূল নীতি। ইইউ বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে কাজ করছে এবং এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে প্রাধান্য দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন, গ্রাম্য আদালত প্রকল্পে সহায়তা, স্থানীয় সরকারব্যবস্থার উন্নয়ন এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মূলস্রোতে যুক্ত করতে এবং সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করা।

তিনি আরো বলেন, কোনো পরিস্থিতিতেই নির্যাতন-নিপীড়নকে বৈধ্যতা দেয়া যাবে না। নির্যাতনের ঘটনার একটি বড় অংশই অপ্রকাশিত থাকে। এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের প্রতিনিধি মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, একজন মানবাধিকার কর্মী কখনো অতিরঞ্জিত কিছু বলতে এবং সত্য গোপন করতে পারেন না। কিন্তু রাষ্ট্র কিছু নীতিমালা দ্বারা পরিচালিত হয়। এই প্রতিষ্ঠান বা নীতিমালা থেকে কিছু চাওয়ার সৃষ্টি হয় যা খুবই মৌলিক। অধিকারের সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খান বলেন, স্বাধীনতার প্রায় ৪১ বছর পরও দায়মুক্তির সংস্কৃতি অব্যাহত রয়েছে। যার ফলে নির্যাতন, নিপীড়ন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুম চলছে। বাংলাদেশের প্রতিটি সরকারের হাতে রক্তের দাগ লেগে আছে। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর অধিকার প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংগঠনটি তৃণমূল পর্যায়ের মানবাধিকার কর্মীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। মানবাধিকার কর্মীদের এমনভাবে কাজ করতে হবে যাতে সরকার বুঝতে পরে তাদের কর্মকাণ্ড প্রতিনিয়ত মনিটর করা হচ্ছে এবং যাতে তারা চাপের মধ্যে থাকে। তিনি আরো বলেন, এনজিও নিয়ন্ত্রণ আইন পাস করার আগেই তা প্রয়োগ করা শুরু করে মানবাধিকার কর্মীদের কাজে বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। বাংলাদেশে মানবাধিকার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য মানবাধিকার কর্মীদের ভ্যানগার্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ��� ��O� �-� �ারি কাজ করে চলেছেন। তাই হয়তো আন্দোলনে জোর ধরলে বাহানা বানিয়ে সরকার ওদের দাবি মেনে নেবে, এমন ধারণাও দিচ্ছেন অনেকে।

এমন বক্তব্যও বিরল নয় যে, ইদানীং তেহরিকে ইনসাফের রেটিং কমে যাওয়ায় দলটি আন্দোলনের পথে থামতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

No comments

Powered by Blogger.