খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র এখন মৃতপ্রায়

এক কালের খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র নদ এখন মৃতপ্রায়। এ নদের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর। স্রোতস্বিনী নদটি পরিণত হয়েছে ফসলী মাঠ আর ইটের ভাঁটিতে।
নদের পানি হ্রাস পাওয়ায় একদিকে নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সঙ্কট দেখা দিয়েছে চাষাবাদে। ক্রমাগত পলি জমে ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্য ক্রমশই কমে যাচ্ছে। নাব্য হ্রাস পাওয়া এ নদের দুই পাড়ে অপরিকল্পিত মাটি উত্তোলনসহ গড়ে তুলেছে কয়েকটি ইট ভাঁটি। সেই ইটের ভাঁটির ইট তৈরিতে সমানে ব্যবহার হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদের মাটি। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব অংশের ব্রহ্মপুত্র নদের সেতুর দুই পাড়ে পাথর ক্রাশিং ও মাটি ভরাট করে নদের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। সরকার দীর্ঘদিন ধরে ব্রহ্মপুত্র নদটি পুনর্খনন বা সংস্কার করার কোন উদ্যোগ নেয়নি। ফলে প্রতি বছরই উজান থেকে আসা পলি ও নদের তীরে গড়ে ওঠা পাথর ক্রাশিংয়ের ফলে ক্রমে নদটি ভরাট হয়ে পড়ছে। এক সময় ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে ময়মনসিংহ থেকে ভৈরব হয়ে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা তীরবর্তী জনপদ ও হাটবাজারগুলোতে পণ্য আনা-নেয়া করা হতো। এতে পণ্য পরিবহন খরচ পড়ত অনেক কম। বর্তমানে যা কল্পনাও করা যায় না। চর জেগে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এসব এলাকার বিভিন্ন হাট-বাজারের মালামাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহন সমস্যা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য দারম্নণভাবে বিঘি্নত হচ্ছে। সড়কপথে পণ্য পরিবহনে খরচ পড়ছে বেশি। তাই অনেক জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় মতার বাইরে চলে গেছে। বর্ষা মৌসুম ছাড়া বর্তমানে ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন স্থানে থাকে হাঁটুপানি। লোকজন সহজে নদটি পায়ে হেঁটে পার হতে পারে। এতে নৌ পরিবহন তো দূরের কথা, সাধারণ ডিঙ্গি নৌকাও চলাচল করতে পারছে না। শুকিয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে বহু জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হচ্ছে।
_কাজী ইসফাক আহমেদ বাবু, ভৈরব

No comments

Powered by Blogger.