সুরমা-চন্দনার বুকজুড়ে ফসলের চাষ

সিলেটের প্রমত্তা সুরমা এখন মরা নদীতে পরিণত হচ্ছে। সর্বত্র জেগে উঠেছে বিশাল চর। নদীর বুকে চাষ হচ্ছে সবজি। এক সমকার খরস্রোতা সুরমা এখন স্রোতহীন।
বর্ষা মৌসুম ছাড়া পানি থাকে না। চলতে পারে না ডিঙ্গি নৌকা পর্যন্ত। নদীব ভরাট হয়ে গেছে। জলের পরিবর্তে নদীর বুকজুড়ে শুধু চর আর চর। হেঁটে পার হয়ে যায় লোকজন। গভীরতা কমে যাওয়ায় ভরাট হওয়া সুরমার জলধারণ মতা এখন খুবই কম। মরে গেছে সুরমার উৎসমুখে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলশীদ থেকে সুরমার শুরম্ন। এতে জেলার বিভিন্ন স্থানে যোগ হয়েছে ভারতের মেঘালয় থেকে বয়ে আসা ছোট বড় কয়েকটি নদী। নদীর উৎসমুখ অমলশীদে পানি হ্রাস পাওয়ায় ও চর গজে ওঠায় হারিয়েছে খরস্রোত। ফলে মেঘালয় থেকে বয়ে আসা নদীগুলো হয়ে আগত পাথর বালু ও মাটিতে সুরমার বুকে আজ বিশাল বিশাল চর।
একই অবস্থায় দৰিণ অঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম নদী চন্দনার ৰেত্রেও। চন্দনা নদীর মূল উৎস পদ্মা নদী। পদ্মা থেকে প্রবাহিত ধারা গতমপুরের কাছে এসে পদ্মার গর্ভ থেকে জন্ম দিয়েছে চন্দনার। চন্দনা-পাংশা, বালিয়াকান্দি, মধুখালী, বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা ও কাশিয়ানীর ভেতর দিয়ে ভাটিয়াপাড়া ঘাটের মধুমতি নদীতে গিয়ে মিশেছে। ষাটের দশকের মাঝামাঝি পর্যনত্ম এ নদীর যৌবন ছিল। ছিল উচ্ছল কুমারীর মতো তরঙ্গদোলা। অথচ সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে এ নদীর যৌবন হারিয়ে যেতে থাকে। ৭৫ পরবর্তী সময় থেকে ফারাক্কার হিংস্র ছোবলে এ নদীর গতিধারা হয়ে যায় সম্পূর্ণ রম্নদ্ধ। কালের বিবর্তনে আজ বিলুপ্তির পথে চন্দনা-বারাশিয়া। বর্তমান চন্দনার দিকে তাকালে দেখা যায় তার রম্নৰ বুক চিরে ফসলের চাষ হচ্ছে। জল নেই, তরঙ্গ নেই, নেই উচ্ছলতা। বিবর্তনের পলি জমে কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে চন্দনা-বারাশিয়া।
- সালাম মাশরুর, সিলেট
বিকে সিকদার সজল, মধুখালী

No comments

Powered by Blogger.