কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হোক by আনিসুর রহমান

মাওলানা আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে আনীত মানবাধিকারবিরোধী অপরাধের বিচারের রায় হয়েছে গতকাল সোমবার। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা মানবাধিকারবিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাদের বিচারের দাবি ৪১ বছর ধরে এ দেশের সর্বস্তরের মানুষ করে আসছে।
এই বিচার শুরু হয় দীর্ঘদিন পর। প্রথম থেকেই মানুষের প্রত্যাশা ছিল আইনানুগ বিচার। বিচারে স্বচ্ছতা ও আইনি সুযোগ-সুবিধার বিষয়টিও বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছিল। আমি মনে করি, ট্রাইব্যুনাল গঠনের সময় সেসব দিকে কর্তৃপক্ষ নজর দিয়েছে। সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। সেটা আমাদের প্রচলিত আইনের ভিত্তিতেই হয়েছে। যদি কেউ মনে করে যে সে আইনের বিধান অনুযায়ী বিচার পায়নি, তাহলে তার আপিল করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এটা আইনি সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে অবশ্যই উল্লেখ করার মতো একটি দিক। বাচ্চু রাজাকারের বিচারের আরেকটি বিষয় এখানে উল্লেখ করার মতো। ১৯৭১-এ মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে তার বিরুদ্ধে যখন বিচার কার্যক্রম শুরু হয়, তখন থেকেই সে পলাতক। অনুপস্থিত ব্যক্তিও যাতে আইনি সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেদিকেও নজর দেওয়া হয়েছে। সরকার অভিযুক্তের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে। সেই আইনজীবী আইনি লড়াই করেছেন বাচ্চু রাজাকারের হয়ে। ফলে বিচার প্রক্রিয়াকে একতরফা বলার সুযোগও আর থাকছে না।
একাত্তরে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের মতো অপরাধের সঙ্গে আরো যারা যুক্ত ছিল, হানাদারদের অপকর্মের সহযোগিতা করেছিল, সেই অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে আইনানুগ শাস্তি প্রদান করা হোক- এমন দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে এ দেশের মানুষ। সেই দাবিরই প্রতিফলন ঘটেছে ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে। তাই আমি মনে করব, এখনো যারা বিচারাধীন আছে, তাদের বিচারও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। সেসব বিচারও যেন সঠিক আইন অবলম্বন করে পরিচালিত হয়, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়। প্রত্যাশা থাকবে, পরবর্তী বিচারগুলোর ক্ষেত্রেও আদালত তার নিজস্ব গতিতে চলবে। যথারীতি সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিচারকাজ সম্পন্ন হবে।
বিচারকাজ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের কোটি মানুষের একটি বড় দাবি পূরণ হবে বলে আমি মনে করি।
গ্রন্থনা : মোস্তফা হোসেইন

No comments

Powered by Blogger.