পার্বত্য অঞ্চলে সংঘাত অপ্রত্যাশিত নয় by আবদুল মান্নান

খাগড়াছড়ি জ্বলছে। কারফিউ'_এমন শিরোনামের পত্রপত্রিকা পড়তে নিশ্চয় এ মুহূর্তে কারও ভাল লাগার কথা নয়। বিশেষ করে যখন দেশে একটা গণতান্ত্রিক সরকার ৰমতায়, বয়স যার এক বছরের কিছু বেশি।
সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এক বছর আগে তিনি অসাধারণ পারদর্শিতার সঙ্গে বিডিআর সঙ্কট মোকাবেলা করেছেন। তার সরকার বিশ্বমন্দা মোকাবেলাও অনেকাংশে সফল হয়েছে। তার এসব সফলতা দেশে এবং দেশের বাইরে নন্দিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে অশানত্মি সৃষ্টি, সংঘাত, সংঘর্ষ, জীবনহানি দেশের মানুষকে বিচলিত করেছে। যারা বাংলাদেশের রাজনীতির সামান্য খোঁজখবর রাখেন, তাদের কাছে পুরো বিষয়টা অনাকাঙ্ৰিত হলেও অপ্রত্যাশিত ছিল না। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর যখন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৰমতায় তখন তার সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে একটি শানত্মিচুক্তি স্বাৰরিত হয়েছিল। আশা করা হয়েছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে বিরাজমান প্রায় আড়াই দশকের যুদ্ধাবস্থার বুঝি এবার অবসান হবে। শানত্মিচুক্তি স্বাৰরের পর দীর্ঘদিনের রণকানত্ম শানত্মিবাহিনী যখন পরের বছর ফেব্রম্নয়ারি মাসে তাদের অস্ত্র জমা দেয় তখন সেই আশা আরও জোরালো হয়েছিল। সে সময় এই চুক্তি স্বাৰরের বিষয়টিও সব মহলে প্রসংশিতও হয়েছিল। এরকম একটি দীর্ঘদিনের সংঘাতময় পরিস্থিতির তৃতীয় পৰের সহায়তা ছাড়া অবসান হওয়ার দৃষ্টানত্ম অনেকটা বিরল।
যদিও শানত্মিচুক্তি স্বাৰরিত হয় ১৯৯৭ সালে, এর প্রস্তুতি শুরম্ন হয় বেগম জিয়ার প্রথম সরকারের আমলেই। যদিও সে সময় তা সম্পূর্ণভাবে সফল হয়নি। অবশ্য দীর্ঘদিনের একটি সংঘাতময় সমস্যা অল্প সময়ের সমাধান হবে তা প্রত্যাশা করা সমীচীনও নয়। শেখ হাসিনা সরকার গঠনের অব্যবহিত পর চুক্তি স্বাৰরের প্রস্তুতি হিসেবে বেশ কয়েকটি কার্যকর পদৰেপ গ্রহণ করা হয়। তার মধ্যে একটি ছিল দেশের কিছু বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী ও সাংবাদিককে পার্বত্য অঞ্চলে পাঠিয়ে পাহাড়ীদের মধ্যে হতে অবস্থার সঙ্কট দূর করতে সরকারকে সহায়তা করা। কিছুটা জনসংযোগ কাজ। এমন একটি ছোট দলের সঙ্গে ১৯৯৭ সালের মে মাসে আমার সুযোগ হয়েছিল সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে চড়ে তিন দিনের এক সফরে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকা সফর করা এবং পাহাড়ীর ও কোন কোন এলাকায় বাঙালীদের সঙ্গে কথা বলা। দলে আরও ছিলেন অধ্যাপক মমতাজউদ্দিন আহমদ, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, ড. মুনতাসীর মামুন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিৰক ড. জরিন রহমান খান। আমি চট্টগ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা হওয়াতে আমার একটা বাড়তি সুবিধা ছিল। ভাষাগত সুবিধার কারণে স্বল্পসময়ে আমি পাহাড়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে সৰম ছিলাম। অধ্যাপক মমতাজউদ্দিন দীর্ঘদিন চট্টগ্রামে শিৰকতা করেছেন। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা বুঝলেও বলতে পারেন না তেমন একটা। ড. মুনতাসির মামুন বুঝেন, বলার চেষ্টা করেন। যখন আমাদের এ সফর তখনও শানত্মিচুক্তি আদৌ হবে এমন সমঝোতায় সরকার ও শানত্মিবাহিনীর পেঁৗছেনি। পৰে-বিপৰে অনেক সভা-সেমিনার হচ্ছে। প-িতরা পত্রপত্রিকায় তাদের মতামত প্রকাশ করছেন। তবে যারা এসব করছেন তাদের অনেকের কাছে পুরো সমস্যার স্বচ্ছ ধারণা ছিল না। তারা দেখছেন পাবর্ত্য অঞ্চল বাংলাদেশেরই একটা এলাকা। এখানে পাহাড়ী ও বাঙালীরা বসবাস করে। পাহাড়ীরা চায় না বাঙালিরা সেখানে থাকুন। এটাকেই কেন্দ্র করে সংঘাত, যুদ্ধ ও প্রাণহানি। আসলে বাসত্মবে পুরো বিষয়টা কখনও এত সহজ বা সরল ছিল না। তখনও না এখনও নয়। পুরো সমস্যার কারণ অনেক গভীরে প্রোথিত। পুরো পার্বত্য অঞ্চল এক সময় পার্বত্য আধিবাসী অধু্যষিত এলাকা ছিল। প্রাকৃতিক সম্পদের দিক থেকে অত্যনত্ম সম্পদশালী পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল। প্রায় তেরটি আধিবাসীর বাস এই অঞ্চলে যার মধ্যে চাকমারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। সময় সময় সেখানে সমতল ভূমির বাঙালীরাও গিয়ে বসবাস করেছে। এতে কখনও শানত্মি বিঘি্নত হয়নি। ১৯৬২ সালে কাপ্তাই জল বিদু্যত কেন্দ্র চালু হলে আনুমানিক এক লৰ পাহাড়ী ভিটেচু্যত হয়। পুরো রাঙ্গামাটি শহরই পানি নিচে তলিয়ে যায়। তারপরও সেখানে সংঘাত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। তারা অন্যতম কারণ এই জলবিদু্যত কেন্দ্র নির্মাণের ফলে পাহাড়ী-বাঙালি উভয়ই ৰতিগ্রসত্ম হয়েছিল। পার্বত্য অঞ্চলে সমতল ভূমির পরিমাণ খুবই কম। চাষবাসের সুযোগও সীমিত। আধিবাসীদের অর্থনৈতিক কর্মকা- অনেকটা জুম চাষ, মাছ শিকার, আর বাঁশ-কাঠ ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর নির্ভরশীল। এসব কর্মকা-ও খুব সীমিত। ফলাফল চরম দারিদ্র্য। তাও তারা মেনে নিয়েছিল। সমস্যা দেখা দিল সত্তরের দশকে যখন রাজনৈতিক সিদ্ধানত্মের বলে সরকার সমতলের ভূমিহীন বাঙালীদের পাহাড়ে স্থানানত্মরের পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং তা বাসত্মবায়নের কাজ শুরম্ন করে। এটি শুরম্ন হয় ১৯৭৭ সালের দিকে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বাঙালীরা সেখানে গিয়ে বসতি স্থাপন করলে হয়ত তা বড় কোন সমস্যার সৃষ্টি করত না। কিন্তু যখন পাহাড়ীরা দেখল রাতারাতি হাজার হাজার বাঙালীকে বাস-ট্রাকে করে সরকার তাদের জায়গা-জমির ওপর বসতি স্থাপনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে তখনই পুরো বিষয়টি ভিন্নখাতে মোড় নিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে প্যালেস্টাইনে জোড়পূর্বক ইহুদি বসতি স্থাপনও একই সমসা সৃষ্টি করেছিল। বাঙালীদের সমস্যা তো শুধু বসতি স্থাপন করলে শেষ হবে না, তাদের চাষাবাস করার জন্য জমিও তো চাই। চাষের জমির যোগানও সীমিত। যে জমিতে আগে আধিবাসীরা চাষ করত সে সব অনেক জমি তাদের হাতছাড়া হয়ে গেল। যেসব জমিতে পাহাড়ীরা চাষাবাদ করত এর অধিকাংশেরই মালিকানা প্রচলিত অর্থে তাদের ছিল না। অর্থাৎ তাদের কাছে সঠিক কোন কাগজপত্র ছিল না। তারা বংশ পরম্পরায় এ সব জমিতে চাষ করেছে, বসবাস করেছে। তবে বাঙালীরা এসব মানবে কেন। তারা তো বুঝে জমির মালিকানা মানে রেজিস্ট্রি করা দলিল। এসব নিয়েই উত্তেজনা, সংঘাত, সংঘর্ষ আর লড়াই। মনে করা হয়েছিল পার্বত্য শানত্মি চুক্তির পর এসব সমস্যার সমাধান হবে এবং পাহাড়ে শানত্মি ফিরে আসবে। চুক্তির একটি অন্যতম শর্তই ছিল ভূমি সংক্রানত্ম সমস্যার একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান। ১৯৯৭ সালে আমাদের সফরকালে যতটুকু সম্ভব পাহাড়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি। সব সময় মনে হয়েছে তারা সরকারকে আস্থায় আনতে দ্বিধাগ্রসত্ম। চুক্তি সইয়ের পর একাধিকবার আমার সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পৰে চুক্তিতে স্বাৰরদানকারী সন্তু লারমার সঙ্গে এসব বিষয়ে নিয়ে আলাপ করার সুযোগ হয়েছে অনুষ্ঠানে। ব্যক্তিগতভাবে সন্তু লারমাকে মনে হয়েছে অত্যনত্ম অমায়িক এবং নরম প্রকৃতির কিন্তু তার নিজস্ব জনগোষ্ঠীর স্বার্থসংশিস্নষ্ট বিষয়ে খুবই সচেতন। তাকে সব সময় আৰেপ করতে দেখেছি যে চুক্তি বাসত্মবায়নে সরকারের উদ্যোগে তিনি মোটেও খুশি নন। এটি অবশ্য আওয়ামী লীগের পূর্বের সরকারের আমলের কথা। ২০০১ সালের পর আরও দুটি সরকার ৰমতায় ছিল। বেগম জিয়ার সরকার এবং ফখরম্নদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। বেগম জিয়া কখনও চাননি ১৯৯৭ সালে শেখ হাসিনা শানত্মিচুক্তি স্বাৰর করম্নক। তিনি ঘোষণাই করেছিলেন এ চুক্তি স্বাৰরিত হলে ফেনী নদী পর্যনত্ম ভারতের অধীনে চলে যাবে। সুতরাং তার শাসনামলের পাঁচ বছরে শানত্মিচুক্তি বাসত্মবায়নের কোন পদৰেপ গ্রহণ করা হবে না তা নিশ্চিতই ছিল। অবস্থা এমন যে পারলে তিনি সেখানে আবার পূর্বের যুদ্ধাবস্থায় ফিরে যান। ফখরম্নদ্দীন সরকার তো এ বিষয়ে কোন উচ্চবাচ্যই করেনি এবং এটি তাদের এজেন্ডায়ও থাকার কথা নয়।
অন্যদিকে বাঙালীদের তো কিছু নিরাপত্তার অভাবেবোধ ছিলই তার ওপর তাদের এ দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়েছে একাধিক মৌলবাদী রাজনৈতিক সংগঠন এবং বেশ কিছু ধর্মভিত্তিক এনজিও। বাঙালীদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সরকারের সাফল্য তেমন একটা নেই। ইদানীং আবার এসব সমস্যার সঙ্গে যোগ হয়েছে পাহাড়ে ব্যবসায়ীদের কাছ হতে চাঁদাবাজি। কোন কোন এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণজনিত উত্তেজনা। এক পর্যায়ে পুরো বিষয়টা গিয়ে দাঁড়াল আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যায়। দখল-বেদখল-নিয়ন্ত্রণ-সংঘাত-সংঘর্ষ। যেমনি দেশের অন্যস্থানে হয় তেমনি। পার্থক্য হচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলে এসব ঘটলে তা পাহাড়ী-বাঙালি সমস্যায় রূপ নেয়। তাতে অপরাজনীতি ঢুকে পড়ে।
গত কয়েক দিনের সংঘাতপূর্ণ ঘটনায় পাহাড়ী-বাঙালী উভয়েরই বাড়িঘর ও দোকানপাট পুড়েছে। উভয়েরই প্রাণহানি হয়েছে। কারা প্রথমে হামলা করেছিল তা নির্ধারণ করা এ মুহূর্তে না যতটা প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনের কারণগুলো খুঁজে বের করা। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে সে শঙ্কা প্রকাশ করে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাকর্তৃপৰও সরকারের উর্ধতন মহলকে জানিয়েছিল। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কেন হয়নি? তাহলে কী বুঝতে হবে সরকারের শেখ হাসিনা ও মহাজোট আর ৰমতায় অন্য কেউ? তা যদি হয় তাহলে তো বর্তমান সরকারের জন্য আরও বড় ধরনের সমস্যা সামনে অপেৰা করছে।
সরকারের শীর্ষমহল থেকে প্রায়ই শোনা যায় সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য বর্তমান বিরোধী দল নানা ষড়যন্ত্র করছে। বর্তমান বিরোধী দল মানে জামায়াত-বিএনপি জোট সরকারের কেউ যদি মনে করে থাকেন যে এ বিরোধী দল বর্তমান সরকারকে নির্বিঘ্নে তাদের পাঁচ বছর মেয়াদকাল পূরণ করতে দেবে তা হলে বুঝতে হবে সরকারের বিচারবুদ্ধিতে কোথাও একটা বড় ঘাটতি আছে। ঢাকা-রাজশাহী-চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা, পার্বত্য অঞ্চলে শানত্মিচুক্তি স্বাৰর-পূর্ববতর্ী পরিস্থি সৃষ্টির আলামত, বেগম জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের সামনে ককটেল নিৰেপ, ছাত্রলীগ নামধারীদের লাগামহীন নৈরাজ্য ইত্যাদি বিষয় খাটো করে দেখার অবকাশ নেই।
সরকার যদি সার্বিক বিষয়ে আরও বেশি সচেতন হয়ে দ্রম্নত কার্যকর পদৰেপ গ্রহণ না করে, তাহলে দেখা যাবে পরিস্থিতি দ্রম্নত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। শঙ্কাটা আরও বেশি ঘনীভূত হচ্ছে কারণ সরকার ঘোষণা করেছে আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য শুরম্ন হবে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়স্থল জামায়াত তা কেন নেমে নেবে? ইদানীং জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরের ভাঙ্গন নিয়ে বেশ হৈচৈ হচ্ছে। ছাত্রশিবির অথবা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যারা পরিচিত তারা পুরো বিষয়টাকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন না। এটা তাদের পিঠ বাঁচানোর কৌশল বৈ আর কিছু নয়। নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য জামায়াত-শিবির যে কোন ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নিতে পারে।
বর্তমান সরকারের জন্য তার মেয়াদে প্রথম বছর তেমন সুখকর ছিল না। বিডিআর ট্র্যাজেডির মতো একটা ভয়াবহ ঘটনা যে কোন সরকারের পতন ঘটাতে পারে। এ যাত্রায় বেঁচে গেছে অনেকটা শেখ হাসিনার বিচৰণতার কারণে। আগামী দিনগুলো হয়ত আরও বেশি কঠিন হবে তা প্রায় নিশ্চিত। তা মোকাবেলায় সরকারের কেমন প্রস্তুতি তা সরকার জানে। তবে পার্বত্য অঞ্চলের সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহ সরকারের বিচৰণতাকে জনগণের কাছে কিছুটা হলেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এটি সরকারের হীতাকাঙ্ৰীদের জন্য অস্বসত্মিকর। তবে সবার একটাই প্রত্যাশা, হঠাৎ সৃষ্ট সঙ্কট মোকাবেলায় সরকার আরও একটু দৰতার পরিচয় দিক। এখন অনেকটা সঙ্কট আসলে সরকার সমাধান খুঁজে অর্থাৎ সরকার জবধপঃরাব. হতে হবে উল্টো। সঙ্কট এলে তা মোকাবেলার আগাম প্রস্তুতি থাকবে। সরকার হবে চৎড়-ধপঃরাব. সরকারের কাছে বর্তমানে হাতে যে সব সঙ্কট সমাধানের জন্য অপেৰা করছে তার অন্যতম চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে হঠাৎ সৃষ্ট অশানত্মিকে প্রশমন করা এবং পুরো অঞ্চলে শানত্মি ফিরিয়ে আনা এবং তা বজায় রাখা। এর জন্য চাই ১৯৯৭ সালে স্বাৰরিত পার্বত্য শানত্মিচুক্তির দ্রম্নত বাসত্মবায়ন। এটির কোন বিকল্প নেই। পাহাড়ে বর্তমানে যারা অশানত্মি সৃষ্টিতে লিপ্ত, তাদের বড় অংশই অশানত্মি সৃষ্টি করে ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করছে। তা পাহাড়ী-বাঙালী উভয়ের ৰেত্রেই প্রযোজ্য। ১৯৯৭ সালে মনে হয়েছে এ অঞ্চলে পাহাড়ীরা যেনম শানত্মি প্রত্যাশা করে তেমনিভাবে সমতলের বাঙালীদেরও বৃহৎ অংশ শানত্মিতে বসবাস করতে চায়। এটাকে কাজে লাগিয়েই সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে। অন্যথা হলে অসনত্মোষ আরও গভীর হবে এবং প্রতিপৰ তা পুরোপুরিভাবে কাজে লাগাবে।
লেখক : শিক্ষাবিদ

No comments

Powered by Blogger.