পাহাড়ে ফের ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর পাঁয়তারা- ধর্মান্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মদদ by জীতেন বড়ুয়া

ওমর ফারম্নক শামীম, খাগড়াছড়ি ॥ পার্বত্য চট্টগ্রামের শানত্মি বিনষ্টে একটি ভয়াবহ সামপ্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ঘটাতে নানামুখী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে একটি বিশেষ মহল।
ইসু্য তাদের সশস্ত্র চাঁদাবাজি বন্ধ করা। সমপ্রতি জেলার বিভিন্ন স্থানে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনার আলামত ও স্থানীয় সূত্রে পাওয়া বিভিন্ন তথ্যে এই ষড়যন্ত্রের আলামত স্পষ্ট হয়ে উঠছে। গত কয়েকদিনে দীঘিনালা উপজেলার মারিশ্যা এলাকায় বেশ ক'টি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের বেশ ক'জন বাঙালী ছাত্র পরিষদ নেতা (জামায়াত শিবির কমর্ী), দীঘিনালা এবং বাঘাইহাট ও মারিশ্যার বাঙালী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। গোপন সূত্রের খবরে জানা যায়, বৈঠকটি পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সূতিকাগার খাগড়াছড়িতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ঘটাতে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনার বৈঠক ছিল। পার্বত্য চট্টগ্রাম ইসু্যতে বর্তমান সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিকে কলুষিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেপড়ে লেগেছে এই ধর্মান্ধ রাজনৈতিক দলটি।
অপরদিকে দু'টি স্থানীয় রাজনৈতিক দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া চাঁদাবাজির ইসু্য ষড়যন্ত্রকারীদের গুজব আর মিথ্যা প্রচারণায় সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে নতুন মাত্রা যোগ করছে। এছাড়া পাহাড়ে নিয়োজিত একটি বিশেষ বাহিনীকে ব্যসত্ম রাখা, খবরদারি আর কর্তৃত্ব বহাল রাখতেই পরিকল্পিতভাবে সাজানো হচ্ছে বিভিন্ন বিরোধের ঘটনা। এসব বিরোধ নিষ্পত্তির েেত্র বিশেষ মহলটির ভূমিকা পপাতমূলক, যাতে করে সাধারণ পাহাড়ী-বাঙালীর মাঝে সৃষ্টি হয় ােভ আর আন্দোলনের রসদ। ভারসাম্যহীন এমন পরিস্থিতিই সুবিধা বয়ে আনে এই মহলটির জন্য। যে কারণে বিশেষ বিশেষ সময়ে ইসু্য তৈরির মাধ্যমে পাহাড়ে শানত্মি বিনষ্টে মরিয়া হয়ে ওঠে এই চক্রটি। উলেস্নখ্য, ১৯৮৬ সালের ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর ১৯৯৭ সালে সরকারের সঙ্গে শানত্মি চুক্তি সম্পাদিত হয়।
বিশেষ মহলের ইঙ্গিতে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সংঘাতে লিপ্ত হতে যে কোন সময়ের জন্য প্রস্তুত রয়েছে ষড়যন্ত্রকারী দলটির ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা। বিরোধপূর্ণ এলাকাগুলোতে ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় বিশেষভাবে অবস্থানের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জেলার যে ক'টি স্থানে পাহাড়ী ও বাঙালীদের মাঝে ভূমি বিরোধ আছে এমন কয়েকটি এলাকায় সাধারণ বাঙালীদের ভূূমি দখলে নিতে চলছে উদ্বুদ্ধকরণ, (যাতে সংঘাত অনিবার্য)। খালি জায়গায় নতুন বসতি স্থাপন, তুচ্ছ ঘটনা সৃষ্টির মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে উভয় সমপ্রদায়ের মানুষকে সামপ্রদায়িক উস্কানি দিতে নিয়োজিত আছে স্থানীয় মানুষকে নিয়ে বিশেষ দল। এভাবেই চলছে ভয়াবহ সামপ্রদায়িক দাঙ্গার পরিকল্পনা। যে কোন সময় কোন ঘটনাকে পুঁজি করে মুহূর্তের মধ্যেই ভয়াবহ এই দাঙ্গা সৃষ্টিতে প্রস্তুত রয়েছে উগ্রপন্থী রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনটির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা।
খাগড়াছড়ি আসনের সংসদ সদস্য ও শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান যতীন্দ্রলাল ত্রিপুরা বলেন, সামপ্রতিক কিছু ঘটনায় চক্রানত্মকারীদের ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া যাচ্ছে, যে কোন মূল্যে এসব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর জেলা সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন বলেন, পাহাড়বাসীর জন্য এমন কিছু প্রত্যাশিত নয়। এখানকার মানুষ শানত্মির জন্য অনেক ত্যাগ করেছে। অনেকেই স্বজন হারিয়েছে, ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছে হাজার হাজার পরিবার। ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও এমন জঘন্য ঘটনার সৃষ্টি করলে পাহাড়ের মানুষ তাদের মা করবে না। স্থানীয় দৈনিক অরণ্য বার্তার সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি প্রেসকাবের সভাপতি সাংবাদিক চৌধুরী আতাউর জানান, কয়েকটি তুচ্ছ ঘটনায় ঘটে যাওয়া তুলকালাম কা-, অপপ্রচার আর নানারকমের গুজবের খবরই প্রমাণ করে একটি মহল সামপ্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ঘটাতে মরিয়া হয়ে কাজ করছে। এই মুহূর্তে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে পরে কিছুই করার থাকবে না।

No comments

Powered by Blogger.