যৌতুক দাবি ও পরকীয়া- বরিশালে দুই গৃহবধূকে নির্মম নির্যাতন- পিঠমোড়া করে পিটুনি ও খুঁটিতে বেঁধে মাথা ন্যাড়া

 দু’লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবিতে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বড়াকোঠা গ্রামের এক গৃহবধূকে বুধবার রাতে পিঠমোড়া করে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করেছে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন।
এছাড়া, বানারীপাড়ায় অপর এক গৃহবধূকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্কে গত দু’বছর পূর্বে উজিরপুরের বড়াকোঠা গ্রামের নিহার রঞ্জন শীলের পুত্র গোপাল শীলের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নের খলিশাকোঠা গ্রামের বিনয় শীলের কন্যা শিখা রানীর বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকলোভী স্বামী গোপাল শীল ও তার পরিবারের লোকজনে দু’লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে শিখা রানীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার রাতে গোপাল ও তার পরিবারের লোকজনে শিখা রানীর হাত ও পা পিঠমোড়া করে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করে। বৃহস্পতিবার সকালে গৃহবধূ শিখা রানীর কাকি কনক শীল সাংবাদিকদের জানান, হিন্দুধর্মের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ নেই। তাই এতদিন নির্যাতন সহ্য করেও শিখা তার স্বামীর বাড়িতে পড়েছিল। এ দুর্বলতার কারণে পাষন্ডরা তাদের নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। তিনি নির্যাতিতা শিখা রানীর পার্শ্বে দাঁড়ানোর জন্য প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
জাহানারা বেগম ॥ অনৈতিক কর্মকা-ের অপবাদ দিয়ে এলাকার প্রভাবশালীরা এক গৃহবধূকে বৈদ্যুতিক খু্ঁিটর সঙ্গে বেঁধে চুল কেটে ন্যাড়া করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধূ জাহানারা বেগম বুধবার রাতে বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ বৃহস্পতিবার সকালে আলেয়া বেগম নামের এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের বানারীপাড়া পৌর শহরের আট নং ওয়ার্ডের কুন্দিহার মহল্লায়।
বানারীপাড়া থানার পুলিশ জানায়, পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডের কুন্দিহার মহল্লার রাজমিস্ত্রি হারুন হাওলাদারের স্ত্রী জাহানারা বেগমের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী গাভা মহল্লার জনৈক ইউসুফের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন প্রতিবেশী প্রভাবশালী মালেক মৃধা ও তাঁর সহযোগীরা। এ ঘটনায় মঙ্গলবার গভীর রাতে মালেক মৃধা ও তাঁর লোকজন গৃহবধূ জাহানারা বেগমকে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে চুল কেটে দিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এ সময় প্রভাবশালীরা ইউসুফকেও মারধর করে। পুলিশ খবর পেয়ে বুধবার ভোরে নির্যাতিত গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় বুধবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করা হলে বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি আলেয়া বেগমকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে থানার ওসি উল্লেখ করেন।

No comments

Powered by Blogger.