চট্টগ্রামে পুলিশের সঙ্গে কওমীদের ব্যাপক সংঘর্ষ, গুলি, টিয়ার- ১০ পুলিশসহ আহত ৩০, গ্রেফতার ২০

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানাধীন বালুছড়া এলাকায় কওমী মাদ্রাসাপন্থী হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ-এর নেতাকমর্ী ও সমর্থকদের মধ্যে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ অর্ধশতাধিক ফাঁকা গুলি ও ৮/১০ রাউন্ড টিয়ারসেল নিপে করে। এ ঘটনায় ওসি ও ১০ পুলিশসহ ৩০ জন আহত হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে এ সংগঠনের ২০ জনকে। প্রশাসন সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পূর্ব কোন অনুমতি না নিয়ে হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশের প েবুধবার বিকেলে লালদীঘি ময়দানে সমাবেশের ডাক দেয়া হয়। অনুমতি ছাড়া এ ধরনের সমাবেশ অনুষ্ঠানে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপরও দুপুর ১২টার পর থেকে উত্তর ও দণি চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার কওমী মাদ্রাসার ছাত্র ও সমর্থকরা সমাবেশের উদ্দেশে রওনা দেয়। বায়েজিদ থানাধীন বালুছড়া এলাকায় দুপুরে এ ধরনের নেতাকমর্ী ও সমর্থকবাহী প্রায় ১শ' গাড়িবহরকে নগরীতে প্রবেশে পুলিশ বাধা প্রদান করে। বাধাপ্রাপ্ত হয়ে সংগঠন নেতাকমর্ীরা জঙ্গী কায়দায় পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এতে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল ও ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। পুলিশী বাধায় ছত্রভঙ্গ হয়ে হেফাজতে ইসলামীর বিুব্ধ নেতাকমর্ীরা ঐ এলাকায় বেশকিছু দোকানপাট ভাংচুর করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে আহত হন বায়েজিদ থানার ওসিসহ ১০ পুলিশ। এদের মধ্যে দু'জন ককটেল বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন। এছাড়া হেফাজতে ইসলামীর ২০ নেতাকমর্ী আহত হয়। পুলিশ জানায়, হাটহাজারীতে সংগঠনের প্রায় ৫ সহস্রাধিক নেতাকমর্ী সমর্থক লালদীঘির উদ্দেশে রওনা দেয়। এর আগে হাটহাজারীতে রাউজান, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, পটিয়াসহ উত্তর ও দণি চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা কওমী মাদ্রাসার ছাত্ররা এসে জড়ো হয়। এরপর তারা ৭০টি বাস, ১৫ মাইক্রোবাস ও ২০টি মোটরসাইকেলযোগে সরকারবিরোধী সেস্নাগান দিয়ে শহরের দিকে এগুতে থাকে। হাটহাজারী থেকে গাড়িবহর শহরের বালুছড়া এলাকায় পেঁৗছলে এতে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। পুলিশ অনুমতি ছাড়া সমাবেশস্থলে যেতে তাদের নিষেধ করে এবং উস্কানিমূলক সেস্নাগান বন্ধ করার পরামর্শ দেয়। এ ঘটনায় বিুব্ধরা চড়াও হয় পুলিশের ওপর। একপর্যায়ে নেতাকমর্ীরা পুলিশের ওপর একটি হাতবোমা ছুড়ে মারে। এতে বায়েজিদ থানার ওসি আবদুস সবুর পায়ে স্পিন্টার ঢুকে মারাত্মকভাবে আহত হন। তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিপে শুরম্ন করে। পুলিশও এ সময় বিুব্ধ নেতাকমর্ীদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রথম পর্যায়ে লাঠিচার্জ শুরম্ন করে। পুলিশের লাঠিচার্জে নেতাকমর্ীরা ছত্রভঙ্গ হলেও দূর থেকে ইটপাটকেল নিপেসহ পার্শ্ববতর্ী এলাকার দোকানপাটে ভাংচুর চালায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় ৫০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও ৭/৮ রাউন্ড টিয়ারসেল নিপে করে। বিুব্ধদের মধ্য থেকে ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে, পরণে গাড়িবহর নিয়ে নেতাকমর্ীরা হাটহাজারীর উদ্দেশে রওনা দিয়ে বিকেল ৩টার দিকে চৌধুরীহাট এলাকায় তারা সড়ক অবরোধের সৃষ্টি করে। দীর্ঘ সময় ধরে রাসত্মায় ব্যারিকেড সৃষ্টির কারণে যান চলাচল বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি যাত্রীদের ভোগানত্মি চরমে ওঠে। পরবতর্ীতে উত্তর জেলা পুলিশ ও হাটহাজারী পুলিশের তত্ত্বাবধানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ ব্যাপারে নগর বিশেষ শাখা সূত্রে জানা গেছে, এ সংগঠনটি লালদীঘি ময়দানে সমাবেশের বিষয়ে কোন প্রকার অনুমতি নেয়নি। অনুমতি ব্যতীত সিএমপির আঙিনায় এ ধরনের সমাবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সংগঠনের প থেকে মঞ্চ তৈরির জন্য ডেকোরেশনের জিনিসপত্র আনয়ন করা হলে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি ব্যতীত মঞ্চ তৈরিতে পুলিশ নিষেধ করে। এ সময় লালদীঘি মাঠকে কেন্দ্র করে সংগঠনের নেতাকমর্ীরা জড়ো হতে থাকলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের প থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। বিশৃঙ্খলা এড়াতে বিকেল পর্যনত্ম পুলিশ প্রহরায় ছিল লালদীঘি ও আশপাশ এলাকা।

No comments

Powered by Blogger.