ডিজিটাল চ্যালেঞ্জের সামনে অর্থনীতি by রুহুল আমিন

থমাস ম্যানের দ্য ম্যাজিক মাউন্টেন বইয়ে একজন তরুণ ব্যবসায়ী তার অসুস্থ কাজিনকে দেখতে সুইস আল্পাসের দ্যাভোসের একটি সানাটোরিয়ামে গেলেন।
গন্তব্যে পৌঁছার পর থেকে তিনি অসুস্থ বোধ করতে লাগলেন। তখন সানাটোরিয়ামের প্রধান চিকিৎসক ওই তরুণ ব্যবসায়ীকে বিশ্রাম নেয়ার পরামর্শ দিলেন। টানা সাত বছর বিশ্রাম নিলেন তিনি।

বিরতিহীন ঝুঁকির খবর পাঠের প্রতিক্রিয়া ঝুঁকিগ্রস্ত হওয়ার মতো সমান প্রভাব ফেলতে পারে। ঝুঁকির খবর যত পড়া হবে ততই স্মৃতিপটে ঝুঁকি ভাসতে থাকবে। এতে মানবশরীরে তৈরি হবে নার্ভাসনেস। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ২০১৩ সালের বৈশ্বিক ব্যবসায়-বাণিজ্যের যত ঝুঁকি নিয়ে দু’টি রিপোর্ট প্রকাশিত হলো। ‘গ্লোবাল রিস্ক ২০১৩’ নামে প্রকাশ করল ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)। আর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইউরো-এশিয়া গ্রুপ নাম দিয়েছে ‘টপ রিস্ক ২০১৩’। অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি হতে পারে ওই সব বিষয় হ্যান্ডলিংয়ের প্ল্যান নিয়ে ভূভাগের প্রতাপশালী রাষ্ট্রনায়ক থেকে শুরু করে করপোরেট দুনিয়ার মুঘলরা গত সপ্তাহ যাবৎ বাদানুবাদ করলেন। যেটার চূড়ান্ত রূপরেখা এখনো প্রকাশিত হয়নি। কয়েক দিন অপেক্ষার পর জানা যাবে কোন পথে নতুন নতুন এসব সঙ্কটের সমাধান সম্ভব।

ডব্লিউইএফ ও ইউরো-এশিয়ারÑ দু’টি রিপোর্টেই বলা হয়েছে, ব্যবসায়-বাণিজ্যের মূল কথা হচ্ছে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা।  একই সাথে এবার দু’টি অগতানুগতিক বিষয়ের ওপর বিশেষ দৃষ্টি দেয়া হলো ডব্লিউইএফের রিপোর্টে। ওই দু’টি বিষয়ই আবার মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সাথে ওতোপ্রতভাবে জড়িত। প্রথমটি হলো, ওষুধের কৌটা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, খবরের ঝুড়ি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ফোরাম বলছে,ক্রমবর্ধমান ডিজিটালাইজেশন পুরো বিশ্ববাণিজ্যের চেহারা মুহূর্তেই ওলটপালট করে দিতে পারে। ইন্টারনেটের কল্যাণে বিশ্ব এখন মানুষের চোখের এক কোণে জমা হয়েছে। ব্যবসায়ী, মানুষ ও রোবট কাজ করছে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে। গেল বছরের জুলাইয়ে রাশিয়ান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে জৈনক ব্যক্তি টুইটারে লেখেন, সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাশার আল-আসাদ আহত কিংবা মারা গেছেন। ওই বার্তা প্রকাশের পর মুহূর্তেই বিশ্ববাজারে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১ ডলার বেড়ে গেল। একই বছরের অক্টোবরে আয়-সংক্রান্ত গোপন তথ্য প্রকাশে ইন্টারনেট জায়ান্ট গুগলের শেয়ার কেনাবেচা বন্ধ করে দেয় নাসডাক। এতে মুহূর্তের মধ্যেই পুঁজিবাজারে গুগলের মূল্যমান পড়ে যায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর এক মাস না যেতেই ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং সেন্টারে (বিবিসি) তুলকালাম ঘটে গেল টুইটার ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি একটি প্রোগ্রামে অদায়িত্বশীল এক খবর প্রকাশে। উল্লিখিত ঝুঁকিগুলো এড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় দেখছে না ডব্লিউইএফ। তারা মনে করছে, ডিজিটালাইজেশনের ওই সব প্রতিবন্ধকতা আয়ত্তে আনা মোটেও সহজ নয়।  তবে বসে নেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। ট্রুথি কিংবা তেয়াসে অথবা অসাধারণ নামের খোলসে অর্থাৎ লেজিট্রুথি প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে ইন্টারনেট থেকে উৎসারিত খবরের নির্ভুলতা যাচাই করা সম্ভব হবে।

অ্যান্টিবায়োটিকস ইস্যুতে ডব্লিউইএফ যে মেসেজ দিয়েছে, তা অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিলো মানবের নিরবচ্ছিন্ন ভবিষ্যতের ওপর। জীবন বাঁচাতে অন্য যেকোনো বিস্ময় সৃষ্টির চেয়েও বেশি পরিমাণ মানুষকে নতুন জীবনের স্বাদ দিয়ে চলেছে অ্যান্টিবায়োটিক। এ দিকে দিনদিন বাড়ছে বস্তুটির চাহিদা। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন নতুন ইনফেকশনের মোকাবেলায় আসছে দিনগুলোতে বছরে প্রায় ২১ থেকে ৩৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের হেলথ কেয়ার সেক্টরে। অতি সম্প্রতি ধরা পড়ল বাজারে ওই মেডিসিনের সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। এর জন্য অবশ্য সবচেয়ে বেশি দায়ী অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ অপব্যবহার। একই সাথে উৎপাদক কোম্পানিগুলো এখন ডায়াবেটিক কিংবা হাইপারটেনশনের প্রতিশেধক আবিষ্কারে বেশি মনোযোগী হয়ে উঠেছে। অনেকে আবার প্রাধান্য দিচ্ছেন, নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে। এখন আবার সবারই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে কেবল ন্যানো প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার।থমাস ম্যানের দ্য ম্যাজিক মাউন্টেন বইয়ে একজন তরুণ ব্যবসায়ী তার অসুস্থ কাজিনকে দেখতে সুইস আল্পাসের দ্যাভোসের একটি সানাটোরিয়ামে গেলেন। গন্তব্যে পৌঁছার পর থেকে তিনি অসুস্থ বোধ করতে লাগলেন। তখন সানাটোরিয়ামের প্রধান চিকিৎসক ওই তরুণ ব্যবসায়ীকে বিশ্রাম নেয়ার পরামর্শ দিলেন। টানা সাত বছর বিশ্রাম নিলেন তিনি।

বিরতিহীন ঝুঁকির খবর পাঠের প্রতিক্রিয়া ঝুঁকিগ্রস্ত হওয়ার মতো সমান প্রভাব ফেলতে পারে। ঝুঁকির খবর যত পড়া হবে ততই স্মৃতিপটে ঝুঁকি ভাসতে থাকবে। এতে মানবশরীরে তৈরি হবে নার্ভাসনেস। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ২০১৩ সালের বৈশ্বিক ব্যবসায়-বাণিজ্যের যত ঝুঁকি নিয়ে দু’টি রিপোর্ট প্রকাশিত হলো। ‘গ্লোবাল রিস্ক ২০১৩’ নামে প্রকাশ করল ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)। আর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইউরো-এশিয়া গ্রুপ নাম দিয়েছে ‘টপ রিস্ক ২০১৩’। অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি হতে পারে ওই সব বিষয় হ্যান্ডলিংয়ের প্ল্যান নিয়ে ভূভাগের প্রতাপশালী রাষ্ট্রনায়ক থেকে শুরু করে করপোরেট দুনিয়ার মুঘলরা গত সপ্তাহ যাবৎ বাদানুবাদ করলেন। যেটার চূড়ান্ত রূপরেখা এখনো প্রকাশিত হয়নি। কয়েক দিন অপেক্ষার পর জানা যাবে কোন পথে নতুন নতুন এসব সঙ্কটের সমাধান সম্ভব।

ডব্লিউইএফ ও ইউরো-এশিয়ারÑ দু’টি রিপোর্টেই বলা হয়েছে, ব্যবসায়-বাণিজ্যের মূল কথা হচ্ছে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা।  একই সাথে এবার দু’টি অগতানুগতিক বিষয়ের ওপর বিশেষ দৃষ্টি দেয়া হলো ডব্লিউইএফের রিপোর্টে। ওই দু’টি বিষয়ই আবার মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সাথে ওতোপ্রতভাবে জড়িত। প্রথমটি হলো, ওষুধের কৌটা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, খবরের ঝুড়ি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ফোরাম বলছে,ক্রমবর্ধমান ডিজিটালাইজেশন পুরো বিশ্ববাণিজ্যের চেহারা মুহূর্তেই ওলটপালট করে দিতে পারে। ইন্টারনেটের কল্যাণে বিশ্ব এখন মানুষের চোখের এক কোণে জমা হয়েছে। ব্যবসায়ী, মানুষ ও রোবট কাজ করছে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে। গেল বছরের জুলাইয়ে রাশিয়ান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে জৈনক ব্যক্তি টুইটারে লেখেন, সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাশার আল-আসাদ আহত কিংবা মারা গেছেন। ওই বার্তা প্রকাশের পর মুহূর্তেই বিশ্ববাজারে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১ ডলার বেড়ে গেল। একই বছরের অক্টোবরে আয়-সংক্রান্ত গোপন তথ্য প্রকাশে ইন্টারনেট জায়ান্ট গুগলের শেয়ার কেনাবেচা বন্ধ করে দেয় নাসডাক। এতে মুহূর্তের মধ্যেই পুঁজিবাজারে গুগলের মূল্যমান পড়ে যায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর এক মাস না যেতেই ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং সেন্টারে (বিবিসি) তুলকালাম ঘটে গেল টুইটার ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি একটি প্রোগ্রামে অদায়িত্বশীল এক খবর প্রকাশে। উল্লিখিত ঝুঁকিগুলো এড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় দেখছে না ডব্লিউইএফ। তারা মনে করছে, ডিজিটালাইজেশনের ওই সব প্রতিবন্ধকতা আয়ত্তে আনা মোটেও সহজ নয়।  তবে বসে নেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। ট্রুথি কিংবা তেয়াসে অথবা অসাধারণ নামের খোলসে অর্থাৎ লেজিট্রুথি প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে ইন্টারনেট থেকে উৎসারিত খবরের নির্ভুলতা যাচাই করা সম্ভব হবে।

অ্যান্টিবায়োটিকস ইস্যুতে ডব্লিউইএফ যে মেসেজ দিয়েছে, তা অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিলো মানবের নিরবচ্ছিন্ন ভবিষ্যতের ওপর। জীবন বাঁচাতে অন্য যেকোনো বিস্ময় সৃষ্টির চেয়েও বেশি পরিমাণ মানুষকে নতুন জীবনের স্বাদ দিয়ে চলেছে অ্যান্টিবায়োটিক। এ দিকে দিনদিন বাড়ছে বস্তুটির চাহিদা। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন নতুন ইনফেকশনের মোকাবেলায় আসছে দিনগুলোতে বছরে প্রায় ২১ থেকে ৩৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের হেলথ কেয়ার সেক্টরে। অতি সম্প্রতি ধরা পড়ল বাজারে ওই মেডিসিনের সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। এর জন্য অবশ্য সবচেয়ে বেশি দায়ী অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ অপব্যবহার। একই সাথে উৎপাদক কোম্পানিগুলো এখন ডায়াবেটিক কিংবা হাইপারটেনশনের প্রতিশেধক আবিষ্কারে বেশি মনোযোগী হয়ে উঠেছে। অনেকে আবার প্রাধান্য দিচ্ছেন, নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে। এখন আবার সবারই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে কেবল ন্যানো প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার।

No comments

Powered by Blogger.