গোলটেবিল বৈঠক- মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন: বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা ১৪ জানুয়ারি ২০১৩, ‘মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন: বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সহযোগিতায় ছিল ওয়ার্ল্ড ভিশন, বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।
যাঁরা অংশ নিলেন
শফিক আহমেদ
মন্ত্রী, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়
মাইন উদ্দিন খন্দকার
অতিরিক্ত সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
কাজী জিয়া উদ্দিন
এআইজি, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স
আবু বকর আবু
লে. কর্নেল ডিরেক্টর (অপারেশন), বিজিবি, সদর দপ্তর
এলিনা খান
প্রধান নির্বাহী, বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন
চন্দন গমেজ
অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর, ওয়ার্ল্ড ভিশন, বাংলাদেশ
শৈবাল সাংমা
ডিভিশনাল ডিরেক্টর, ওয়ার্ল্ড ভিশন, বাংলাদেশ
প্রভাস চন্দ্র বিশ্বাস, প্রজেক্ট ডিরেক্টর
চাইল্ড সেফটিনেট প্রজেক্ট, ওয়ার্ল্ড ভিশন, বাংলাদেশ
সালমা আলী
অ্যাডভোকেট ও নির্বাহী পরিচালক, বিএনডব্লিউএলএ
কামরুল আহসান, কান্ট্রি ফোকাল পয়েন্ট, ইউএনওডিসি
সুরাইয়া বানু
সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার, উইনরক ইন্টারন্যাশনাল
এহ্ছানুর রহমান
নির্বাহী পরিচালক, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন
নিশাত চৌধুরী, ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার, আইওএম
সঞ্চালক
আব্দুল কাইয়ুম, সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো

আলোচনা
আব্দুল কাইয়ুম: বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নারী ও শিশুদের পাচার করা হয়। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে মানব পাচার প্রতিরোধে আইন হয়েছে। কিন্তু বিধিমালা এখনো হয়নি। অধিকাংশ সময় অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। অনেকে পাচার হয়েছেন। তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আরও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা দরকার। অপরাধী চক্রকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এখন এ বিষয়ের ওপর আলোচনা করবেন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ
শফিক আহমেদ: আপনারা জানেন, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইনটি পাস হয়। এ আইনের নাম, ‘মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন’। দেশে একটি প্রতারক চক্র আছে। তারা নারী ও শিশুদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখায়। চাকরির কথা বলে বিদেশে পাঠায়। এসব নারী ও শিশু বিদেশে অমানবিক জীবন যাপন করেন। তাঁরা চাকরি পান না। তাঁদের দিয়ে অসামাজিক কাজ করানো হয়। এসব বিষয় প্রতিরোধের জন্য আইনটি করা হয়েছে। ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল (বিচারালয়) গঠন করা হয়। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনের ভাষা ছিল এ রকম—‘মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২। ৩ নম্বর আইনের ধারা ২১-এর উপধারা ২-এর ক্ষমতাবলে ট্রাইব্যুনাল গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালকে উক্ত জেলার মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ট্রাইব্যুনাল হিসেবে ক্ষমতায়িত করা হলো।’ এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা হওয়ার খবর পায়নি। ট্রাইব্যুনালের অভাবে মামলা হচ্ছে না, এমন কোনো ঘটনা শোনা যায়নি। মানব পাচার অপরাধের সঙ্গে একশ্রেণীর মানুষ জড়িত। তাদের বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল আছে। প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয় মানুষকে জানানোর জন্য। বিধি না হলে, আইনের প্রয়োগ বন্ধ থাকবে না। কারণ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া যাবে। আর কোথাও কোনো সমস্যা হলে, সেটা জানতে পারলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
চন্দন গমেজ: ওয়ার্ল্ড ভিশন একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। ওয়ার্ল্ড ভিশন কয়েকটি কাজ করে থাকে। এর মধ্যে অ্যাডভোকেসি (মতবিনিময় ও সচেতনতা সৃষ্টি) একটি উল্লেখযোগ্য কাজ। বিশেষ করে শিশু ও নারী সুরক্ষার অ্যাভোকেসি করে যাচ্ছে । বর্তমানে ২৭টি জেলার ৯১টি উপজেলায় আমাদের কাজ হচ্ছে। ২ লাখ শিশু সরাসরি সেবা পাচ্ছে। বিশ্বের ১১০টি দেশে আমরা শিশুদের জন্য কাজ করে থাকি। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশে শিশু পাচার রোধে কাজ করছি। আইন আছে। কিন্তু আইনের ব্যাখ্যা নিয়ে বিভাগীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সমস্যা রয়েছে। আইনের সহজ ব্যাখ্যা প্রয়োজন। তাহলে আইনটি বাস্তবায়নে আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে পারব।
শৈবাল সাংমা: ওয়ার্ল্ড ভিশনের শিশু সুরক্ষা নিয়ে কাজ করি। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি জেলা এ কাজের অন্তর্ভুক্ত। কাজের মধ্যে রয়েছে শিশু পাচার প্রতিরোধ। এ জন্য আমাদের একটি বেজ লাইন সার্ভে (ভিত্তি জরিপ) আছে। ১১টি জেলার দুই হাজার ৯১৬ জনের মধ্যে ভিত্তি জরিপ করা হয়। এ জরিপে মানব পাচারের কিছু কারণ পাওয়া গেছে। যেমন, জরিপে অংশ নেওয়া ৮৪ দশমিক ৯ শতাংশের ক্ষেত্রে দারিদ্র্যই পাচারের মূল কারণ। অশিক্ষার জন্য ৪৬ দশমিক ৯ শতাংশ, মা-বাবার অসতর্কতার জন্য ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ১০ দশমিক ২ শতাংশ শিশুশ্রমের জন্য পাচার হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিই। শিশু পাচারের বিষয়ে একটি যুগান্তকারী আইন প্রণীত হয়েছে। আইনটি পড়ে দেখেছি, অনেক জরুরি বিষয় এখানে অন্তর্ভুক্ত আছে। একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র ও কল্যাণকর মানসিকতা ছাড়া এ রকম একটি আইন হতে পারে না। সামগ্রিক সফলতা নির্ভর করে মানুষের সচেতনতার ওপর। ইভ টিজিংয়ের ক্ষেত্রে সরকার, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যমসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষ সম্পৃক্ত ও সচেতন হয়েছে। তাই ইভ টিজিংকে বন্ধ করা গেছে। ইভ টিজিংয়ের মতো মানব পাচারের ক্ষেত্রেও সবাইকে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
এহ্ছানুর রহমান: প্রথমে মানব পাচার রোধে আইন করা হয়েছে। তারপর ন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশন (জাতীয় কর্মপরিকল্পনা) তৈরি করা হয়। কাছাকাছি সময় এ দুটো কাজ হয়েছে। অনেক বিষয় আলোচনার বাইরে চলে যেতে পারে। তাই হয়তো এখন এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এটি একটি ভালো দিক। কর্মপরিকল্পনার মধ্যে চারটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ছিল। শেষ লক্ষ্যটি হলো, যৌথ অংশীদারি, সবার মধ্যে সমন্বয় ও আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক। অভ্যন্তরীণ ও বিদেশে দুই ক্ষেত্রে মানব পাচার হয়। বিদেশে পাচার ঠেকাতে হলে আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক জোরদার করতে হবে। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। দেশ থেকে একটা ব্যাপক জনসংখ্যা বিদেশে কাজের জন্য যায়। পাচারকারীরা এ সুযোগটি কাজে লাগায়। পাচারকারী অপরাধী চক্র অনেক শক্তিশালী ও সংঘবদ্ধ। দেশে-বিদেশে তাদের শক্ত নেটওয়ার্ক আছে। বিদেশে বাড়ি ভাড়া করে তারা এ কাজ চালায়। এ রকম একটি শক্তিশালী চক্রকে মোকাবিলার জন্য আমরা কতটুকু প্রস্তুত। তবে একটি ভালো খবর হলো, দু-তিন বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথ্য সংরক্ষণে যথেষ্ট কাজ করেছে। ভবিষ্যতে তথ্যের সুফল পাওয়া যাবে। এখন প্রতিবেশী ভারতসহ প্রধান জনসংখ্যা রপ্তানিকারক দেশের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় সমন্বয় সাধন করতে হবে। আইনের বিষয়গুলো কার্যকর করতে হলে আনুষঙ্গিক সব বিষয়কে সমন্বিত করে একটি ফলপ্রসূ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
প্রভাস চন্দ্র বিশ্বাস: ২০১১ সাল থেকে খুলনা অঞ্চলের ১১টি জেলায় কাজ করি। কাজের মধ্যে রয়েছে সুরক্ষা ও পুনর্বাসন। গণমাধ্যম ও এনজিওদের মাধ্যমে সচেতনতার কাজটি আমরা ভালোভাবে করতে পারছি। কিন্তু ক্রস বর্ডার কোলাবরেশনের (আন্তসীমান্ত সহযোগিতা) ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। ভারতে পাচার হওয়ার তথ্য পাচ্ছি। কোথায় আছে, সেটাও জানতে পারছি। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এমন একটি অবস্থাতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন পাস হলো; এ আইন পাসের সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়সহ যেসব এনজিও জড়িত আছে, তারা অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। কারণ, আশপাশের দেশে মানব পাচারের ক্ষেত্রে এমন একটা ভালো আইন নেই। আইন তৈরির সময় নাগরিক সমাজ, এনজিওসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। উদ্ধার, পুনর্বাসন, শাস্তি—সব ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। এ আইনকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে মানব পাচার রোধের ক্ষেত্রে বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বহিনীর প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। মোটকথা, সবকিছুর মধ্যে একটা সমন্বয় করতে হবে। আইন আছে। জাতীয় কর্মপরিকল্পনা আছে। এখন দরকার সমন্বয়।
সালমা আলী: দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের মানব পাচার আইনটি অন্যতম। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতকে সামনে নিয়ে এ আইনটি করা হয়েছে। বিধি এখনো হয়নি। একটি বিধি হতে এক বছর সময় লাগে। তড়িঘড়ি করে বিধি করলেই হবে না। বিধিটি যেন ফলপ্রসূ হয়, সে জন্য কিছুটা সময় নেওয়া প্রয়োজন। এ আইন তৈরির সঙ্গে আমরা অনেকে সম্পৃক্ত। সবাই মিলে একটি ভালো আইন করতে ছেয়েছি। যে কারণে বলতে পারছি, এটি একটি আন্তর্জাতিক মানের আইন হয়েছে।
আইন হলেই হবে না। আইনের যথার্থ প্রয়োগ হতে হবে। কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কী হবে। কোন সংস্থা কী করবে—সব বিষয় বিধির মধ্যে আসতে হবে। দেশে কাজের দীর্ঘসূত্রতা আছে। জানামতে, নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের বিধি এখনো হয়নি। পাচার হওয়া ব্যক্তিদের দেশে ফিরিয়ে আনা একটি বড় বাধা। একবার একজনকে ফিরিয়ে আনলাম। সরকার বলল, সে এ দেশের নাগরিক নয়। তখন সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করতে হয়েছিল। ভিকটিম (নির্যাতিত ব্যক্তি) সুরক্ষার কোনো আইন এখনো নেই। যে কারণে আসামি বের হয়ে ভিকটিমকে হত্যা করার ঘটনা দেখে থাকি। ভিকটিম সুরক্ষার বিষয় নিশ্চিত না হলে, আইনের প্রয়োগ সম্ভব নয়। এ আইনে, বিশেষভাবে ভিকটিম সুরক্ষার কথা বলা আছে। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। ক্যামেরা ট্রায়ালের (গোপন বিচার) ব্যবস্থা আছে। ভিডিও কনফারেন্সের ব্যবস্থা আছে। এ আইনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। বিধি হলে এগুলো নিয়ে কাজ করতে পারব।
ভারতের সঙ্গে এমওইউ (সমঝোতা স্মারক) করার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে পাচার হওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার ও দেশে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে। বায়রার প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও শ্রমিক পাচারের বিষয়টি এ আইনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখন শ্রমিক পাচার হলে নিয়োগ এজেন্সিকে (রিক্রুটিং এজেন্সি) আইনের আওতায় আনতে পারব। পাচার কারিরা এখন বিভিন্ন দেশে বাড়ি ভাড়া নিয়েছে। তারা আরও বেশি সংগঠিত হয়ে পাচারের কাজ করছে। তাই আমাদেরও সতর্ক হয়ে কাজ করতে হবে।
সুরাইয়া বানু: সবাই একমত যে আইনটি ভালো হয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা করা হয়েছে। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার। দেশের বাইরে তদন্তের (এক্সট্রা টেরিটোরিয়াল ইনভেস্টিগেশন) ক্ষেত্রে কৌশল, ট্রাইব্যুনালের (বিচারালয়) নারী-শিশু আইনের ক্ষেত্রে দেখেছি। কিন্তু এই নতুন আইনে বিশেষ কিছু বিষয় এসেছে। যেমন, দেশি-বিদেশি প্রমাণের গ্রহণযোগ্যতা।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি প্রতিবেদনও আইনের বিচারের ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। এখন আদালতকে উদ্যোগী হয়ে এগুলো সংগ্রহ করতে হবে। পাচার হওয়া ব্যক্তিদের দেশে ফিরিয়ে আনার পর মামলার ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়। এমনিতে থানা সহজে মামলা নিতে চান না। তার ওপর কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বাধার সৃষ্টি করেন।
পাবলিক প্রসিকিউটর (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) ও পুলিশের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা যায়। পুলিশ প্রতিবেদন দেওয়ার পর পাবলিক প্রসিকিউটর তাঁর মতামত দেন। প্রসিকিউটর মতামত দিতে দেরি করলে বা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না দিলে সমস্যা হয়। এবং অনেক ক্ষেত্রেই এমন সমস্যা হয়ে থাকে। পাবলিক প্রসিকিউটরদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মতামত দেওয়ার বাধ্যবাধকতার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। পুরোনো মামলাগুলো নতুন আইনের সঙ্গে যুক্ত হবে। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিতে হবে। এই আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কয়েকটি মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত আছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এই সমন্বয়টি কীভাবে জোরদার করা যায়, সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে।
কামরুল আহসান: মানব পাচাররোধ আইনকে যুগান্তকারী আইন বলতে চাই। কারণ এ আইনের মধ্যে আছে, প্রিভেনশন (প্রতিরোধ), প্রটেকশন (সুরক্ষা), প্রসিকিউশন (অভিযোগ), পার্টিসিপেশন (অংশগ্রহণ) ও প্রন্সিপ্যাল (নীতি)—এ জন্য আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্যই প্রশংসা পাবে। কিন্তু ২০০৯-১০ সালের তুলনায় বর্তমানে আইনের প্রয়োগ ও অভিযোগ দুটোই কমে গেছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ধারণার অভাব থাকে। ফলে সময় সময় তাদের অরিয়েন্টেশনের (বিষেশ বিষয়ে ধারণা দেওয়া) ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। দেশে ১৪টি রেডিও, অনেকগুলো টেলিভিশন চ্যানেল ও প্রিন্ট মিডিয়া রয়েছে। সবাইকে এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব নিতে হবে।
এলিনা খান: এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো আইন। সে বিষয়ে কোনো বিতর্ক নেই। কিন্তু সবকিছুর পর একটা জায়গায় আমরা ঠেকে যাই। সেটা হলো তদন্ত। স্পষ্ট বলা আছে, তদন্ত করতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে। শর্তসাপেক্ষে আরও কয়েক দিন লাগতে পারে। বাস্তবে চার থেকে পাঁচ বছর লেগে যাচ্ছে। জাতীয় লিগ্যাল এইড কমিটি (আইন সহায়তা কমিটি) আছে। এ কমিটির কাছে জানতে চাওয়া উচিত, তদন্তে কেন এত সময় লাগে। তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে। আর লিগাল এইড কমিটি, মানব পাচারের মামলাগুলো সব সময় যেন মনিটরিং করে। যাতে মামলাগুলোর তদন্ত দ্রুত হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশেষ কিছু মামলা হয়। মানব পাচার মামলাকে সে পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। ভিকটিম হাজির না হয়েও ভিডিওসহ অন্যান্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সাক্ষী দিতে পারবে। মানব পাচার আইনের ক্ষেত্রে কোর্ট ফি মওকুফ করে দিতে হবে। পাচার হওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে তহবিল গঠন করতে হবে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় পাচারের ঘটনা বেশি ঘটে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে। স্থানীয় প্রতিনিধিরা এলাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানসহ প্রায় সব বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। মানব পাচারের ক্ষেত্রে এদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
নিশাত চৌধুরী: মানব পাচার আইনের ক্ষেত্রে আন্তমন্ত্রণালয়ের মধ্যে সহযোগিতা প্রয়োজন। যেমন, পাচার হওয়া মানুষের আশ্রয়ের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজন। কারণ, তারা এদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করবে। শিশু পাচারের জন্য দরকার আছে নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা। বিদেশে অনেকে চাকরির জন্য যান। তাঁদের জন্য প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দরকার আছে। পাচারকৃতদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা দরকার। তাই বাধ্যতামূলকভাবে, মানব পাচার আইনের ক্ষেত্রে আন্তমন্ত্রণালয় সহযোগিতা প্রয়োজন। সব কটি মন্ত্রণালয়ের উপস্থিতিতে আইন হয়েছে এবং বিধিও হবে। তাই নিঃসন্দেহে এ আইনের সফল প্রয়োগ দেখব। বিধি আইনকে সম্পূর্ণতা দেয়। শুধু ভালো আইনই যথেষ্ট নয়। সবাই বলেছেন, আইনের ব্যাপক প্রচার প্রয়োজন। আমরা এ আইনের একটি সহায়ক বই করেছি। বইটি পুলিশের প্রধান অফিসে দিয়েছি। তারা যেন বাংলাদেশের থানাগুলোতে পৌঁছে দেয়। সংশ্লিষ্ট অন্য সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা রিক্রুটিং এজেন্সিসহ কিছু প্রতিষ্ঠানকে ধরতে পারি। কিন্তু মাফিয়ারা ধরাছোঁয়ার বইরে থেকে যায়। এদের ধরার ব্যবস্থা করতে হবে। পাচার হয়ে যখন অন্য দেশে ধরা পড়ে। তখন আমাদের দেশের পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে পারে না। কারণ, পুলিশের সে দেশে যারওয়ার এখতিয়ার নেই। মানব পাচারের বিষয়টি সামগ্রিকভাবে না দেখতে হবে। তা না হলে পাচার বন্ধ হবে না। এবং এ ক্ষেত্রে আমাদের সফলতা আসবে না।
আবু বকর আবু: বাংলাদেশর সঙ্গে মোট চার হাজার ৪২৭ কিলোমিটার সীমান্ত আছে। এর মধ্যে মাত্র ২৭১ কিলোমিটার মিয়ানমারের সঙ্গে। অবশিষ্ট্য বর্ডার ভারতের সঙ্গে। এ বিশাল সীমান্তের মধ্যে ৬২৭টি ক্যাম্প (অস্থায়ী সেনাছাউনি) আছে। একজন অফিসারের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ সদস্য অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান করে। আমাদের বিভিন্ন দায়িত্বের মধ্যে মানব পাচারের বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্ব সহকারে দেখি। আপনারা জেনে খুশি হবেন, ২০১২ সালে ৩০১ নারী ও ১০৪ জন ছেলে ও কন্যাশিশুকে উদ্ধার করেছি। ২০০৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মোট এক হাজার ৬০০ নারী ও ৮৭১ জন শিশুকে উদ্ধার করেছি । এবং ১৪৬ জন অপরাধীকে আইনে সোপর্দ করেছি। সীমান্ত এলাকায় সবচেয়ে দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ বাস করে। এখানকার মানুষের প্রধান পেশা চোরাচালান। সীমান্ত এলকার মানুষগুলোকে সংঘবদ্ধ করতে হবে। সচেতন করতে হবে। তাহলে মানব পাচারের ক্ষেত্রে সফলতা আসবে। আমি প্রধান অফিসে আসার আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছিলাম। এখানে এনজিওগুলোর সাহায্যে মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। সচেতন করেছি এবং ভালো ফল পেয়েছি। মানব পাচার ও চোরচালানের বিষয় আমাদের বিশেষ উদ্যোগ আছে। যেমন, এ উদ্যোগের আওতায় বিভিন্ন সীমান্তে ১২টি কর্মশালা করেছি। ১১টি আলোচনা সভা করেছি। এসব কাজে স্কুল-কলেজ, এমনকি মাদ্রাসার লোকজনকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করি। প্রয়োজনীয় বিষয়টি সিডি করে ওই এলাকার বাজারগুলোতে প্রচার করছি। সবচেয়ে বড় বাধা হলো দারিদ্র্য বিমোচন। তাদের দারিদ্র্য দূর করতে পারছি না। যে করণে আমাদের অনেক উদ্যোগ ব্যর্থ হচ্ছে।
কাজী জিয়া উদ্দিন: বিশ্বব্যাপী মানব পাচার একটি বড় সমস্যা তৈরি করেছে। বিশ্বায়নের ফলে সবকিছুকে একধরনের বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে। এখানে মানুষকেও পণ্যে রূপান্তরের প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে। মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় হয়েছে। পৃথিবীজুড়ে সমাজের রূপান্তর ঘটেছে। মাদক পাচারকারীরা মানব পাচারের সঙ্গেও জড়িত। পাচারকৃতদের পাচারকারীরা ভিন্ন একটি দেশে কেবল একটি কাজে নিয়োগ করে না। অনেক সময় বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকমের কাজে তাদের ব্যবহার করে। একজন মানুষ এভাবে কয়েকবার ক্রয়-বিক্রয় হয়। এর পরও যদি আমরা উদ্ধার করতে পারি, সমাজব্যবস্থা আবার তাকে ভিকটিমে পরিণত করে।
কেন এ রকম হচ্ছে, সেটি একটি বড় আলোচনা। এ বিষয়ে আমাদের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গবেষণা করেছি। এর মধ্যে একটা বিষয় হলো, পুস ফ্যাক্টর এবং পুল ফ্যাক্টর। এ বিষয়গুলোকে আমরা মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হই। কারণ, এসব বিষয় মোকাবিলার বিশেষ এক ধরনের দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রয়োজন। দেশে সে ধরনের দক্ষতা-যোগ্যতার অভাব রয়েছে। বিভিন্ন দেশে এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। আমাদের দেশে নেই। যে কারণে আমরা প্রতিকূল অবস্থাকে দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারি না। এ থেকে উত্তরণ চাই। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক কাঠামোকে শক্তিশালী করতে হবে। রাষ্ট্র সব মানুষের কর্মসংস্থান করলে, মানবিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করলে এ অবস্থা থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব। বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষে কৌশলগত পরিকল্পনা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে সর্বিক সহযোগিতা পাচ্ছে। তাই পুলিশ মানব পাচার রোধের ক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। যেমন, প্রতিটি জেলায় একটি করে দল আছে। সচেতনতা তৈরি, মতবিনিময় ও পাচার হওয়া ব্যক্তিদের পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে রয়েছে। দুটি ভিকটিম সেন্টার আছে। সেখানে খুব সংবেদনশীলভাবে তাদের সেবা দেওয়া হয়। আরও তিনটি ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে। মামলার ক্ষেত্রে অনেক অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা কাজের অনেক চাপ থাকে। তিনি কতটুকু সময় কতটুকু চাপ নিতে পারেন, সে বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করলে সফলতা অর্জন করতে পারব।
মাইন উদ্দিন খন্দকার: সবাই বলেছেন আইনটি আধুনিক ও বিশ্ব মানের, এ জন্য আপনাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। বিষয়টি অনেক জটিল। অনেকগুলো বিষয় এ আইনের সঙ্গে জড়িত। দিনে দিনে সমাজের অনেক অবক্ষয় হয়েছে। মানব পাচারের তদন্ত ও বিচারের ক্ষেত্রে ঘাটতি আছে। সেটা সমাজের অন্যান্য বিষয় থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। ভিকটিমদের নিয়ে কাজ করার সময় কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাই না। বরং তাঁরা বলেন, এগুলো ভুলে যান। এ রকম অনেক ঘটনা আছে। জীবনে ১২ বছর ফৌজদারি আদালতের হাকিম ছিলাম। অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি। এ ক্ষেত্রে কেউ এগিয়ে আসে না। সমাজকে ভোগবাদে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। মুদ্রা মোহগ্রস্ত করে ফেলেছে। ‘তোরা যে যা বলিস ভাই, মুদ্রা আমার চাই। নৈতিকতার নেই বালাই।’ সব ক্ষেত্রে এ রকম চলছে। এ অবস্থায় দরিদ্র, ক্ষুদ্র ও বিপন্ন মানুষটির বিচার বের করে আনা খুবই কঠিন ব্যাপার। দেশপ্রেমিকদের হাত থেকে রাজনীতি চলে গেছে মুদ্রাপ্রেমিকদের হতে। মুদ্রাপ্রেমিকেরা মুদ্রার ব্যাকরণ ও অভিব্যক্তি নিয়ে কথা বলে। একজন বিপন্ন মানুষ টিকে থাকবে কি থাকবে না, এটা তাদের কাছে কোনো বিষয় নয়। এ সমাজের ভেতর থেকে অসহায় মানুষের বিচার বের করে আনা দুরূহ কাজ। দুই দশক ধরে মূল্যবোধের অবক্ষয় হচ্ছে। সোভিয়েত রাশিয়ার পতন এবং পূর্ব ইউরোপের সমাজতন্ত্রের পতনের পর থেকে এটি আরও জোরালো হয়েছে। এই সমাজের ভেতর থেকে ভালো কাজ করার মতো ভালো মানুষ বা ভালো সংগঠন উঠে আসছে না। এই অবক্ষয়ের মধ্যেও কাজটি হয়েছে। এ কাজ করার ক্ষেত্রে সাতটি এনজিও আমাদের সহযোগিতা করেছে। এ এনজিওগুলো তমসার মধ্যে আলোর প্রদীপ নিয়ে ঘুরছে। তারা সবাই মৌলিক কাজ করছে। সবার সহযোগিতায় মানব পাচার শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে পারব।
শফিক আহমেদ: আপনারা সবাই বলেছেন আইনটি যুগোপযোগী। এ অপরাধগুলো অনেক দিন ধরে আমাদের সমাজ ও দেশের ক্ষতি করছে। অপরাধ থেকে মানুষকে কতটুকু মুক্তি দিতে পেরেছি, সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু আইন না থাকলে সব অন্যায়-অপরাধ অবাধে চলত। এখন আমরা চাচ্ছি মানব পাচার কীভাবে বন্ধ করা যায়। অপরাধীরা এখন বুঝতে পারবে, তারা এ ধরনের কাজ করলে শাস্তি পাবে। এটি একটি নতুন আইন। এ বিষয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাতে হবে এবং সে কাজটি হচ্ছে। আইনজীবী ও বিচারকদের এ আইন সম্পর্কে আরও বেশি করে জানাতে হবে; যাতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ হয়। কয়েক দশক আগে এ ধরনের অপরাধ ছিল না। এখন আর্থসামাজিক অবস্থা, বিশ্বায়ন সবকিছু মিলিয়ে এ ধরনের অপরাধ হচ্ছে।
মানুষ ভাগ্যবদলের জন্য বিদেশে গিয়ে নানা রকম দুর্ঘটার কবলে পড়ছে। আইনটির জন্য পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করছে। স্বীকার করতে হবে, তদন্তের ঘাটতি আছে। আইনেরও ঘাটতি আছে, যেহেতু নতুন আইন। এখন বিধি হবে। বিধির পরও আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য আসবে। আইনকে কার্যকর করার জন্য বিধি হয়। আইনে নির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে, বিধি কী থাকবে। এ আলোচনায় কিছু মানুষ উপস্থিত আছেন। তাঁরা এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। আলোচনা থেকে কিছু সুপারিশ এসেছে। সবকিছু মিলিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আমরা এসব বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
আব্দুল কাইয়ুম: মানব পাচার রোধ আজ আমাদের সামনে এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। আইন আছে। বিধিও হবে শিগগিরই। আমরা চাই আইনের কঠোর প্রয়োগ। আজকের প্রধান অতিথি আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। সম্মানিত আলোচকদের ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.