মিসরজুড়ে বিক্ষোভ- চরম অস্বস্তিতে মুরসি

মিসরে সরকার-সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে গতকাল রোববার টানা চার দিনের মতো সংঘর্ষ হয়েছে। চার দিনের এই সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ৪১ জনে পৌঁছেছে। বর্তমান পরিস্থিতিকে দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির জন্য সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
মিসরে হোসনি মোবারকের পতনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে গত বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরকার-সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। পরদিন বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা চলে। এসব ঘটনায় গুলিতে অন্তত নয়জন নিহত হয়।
গত বছর মিসরে ফুটবল স্টেডিয়ামে সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে গত শনিবার ২১ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হলে নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়। এতে শুধু পোর্ট সৈয়দে ৩২ জন নিহত হয়। সব মিলিয়ে গতকালও সহিংসতা অব্যাহত ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পোর্ট সৈয়দ ও সুয়েজে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
মিসরের রাজধানী কায়রোয় গতকাল বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীরা তাহরির স্কয়ারের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এরপর বেশ কিছু সময় ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে।
এই পরিস্থিতিতে তাহরির স্কয়ারের পাশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়। দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায়’ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংলাপের আহ্বান: আগামী মার্চের মধ্যে মিসরে পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু এরই মধ্যে এমন সহিংস পরিস্থিতি মোকাবিলা করা মুরসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করা হচ্ছে। সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে সরকারবিরোধীদের প্রতি আহ্বান জানানোর পর এবার সরকারের পক্ষ থেকে সংলাপে বসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মুরসির নেতৃত্বাধীন জাতীয় প্রতিরক্ষা পরিষদ গতকাল সংলাপে বসতে বিরোধীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারাও এই পরিষদে রয়েছেন। বিরোধীরা অবশ্য এই আহ্বানের ব্যাপারে সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। মুরসিবিরোধী দলগুলোর জোট ন্যাশনাল সলভেশন ফ্রন্ট (এনএসএফ) সংলাপের আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে সংলাপের জন্য তারা বিষয় সুনির্দিষ্ট করা এবং যেকোনো বিষয়ে ঐকমত্য হলে সরকারকে তা বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। রয়টার্স ও এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.