‘অসত্য’ বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান- প্রধানমন্ত্রীকে তারেক রহমানের লিগ্যাল নোটিশ

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে মানহানিকর বক্তব্য দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছে।
আগামী ২৮ দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে জনসম্মুখে নিঃশর্ত মা চেয়ে ‘অসত্য ও মানহানিকর’ বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে। শর্ত দিয়ে নোটিশে বলা হয়েছে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংসংক্রান্ত বক্তব্য প্রত্যাহার না করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতকাল রেজিস্ট্রি ডাক ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নোটিশটি পাঠানো হয়েছে। তারেক রহমানের পে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এমপি এটি পাঠান।

এ বিষয়ে এক ব্রিফিংয়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমানের গ্রহণযোগ্যতা ুণœ করতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ বক্তব্য দেয়া হয়েছে। তারেক রহমান মানি লন্ডারিংয়ের সাথে জড়িত নন। আমেরিকায় তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে কোনো মামলা হয়নি। লন্ডনে তার কোনো বাড়ি বা রেস্টুরেন্ট নেই। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাধারণ জীবনযাপন করছেন।  প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অসত্য ও মানহানিকর। এই বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য তারেক রহমানের পে নোটিশটি দিয়েছি। আগামী ২৮ দিনের মধ্যে জনসম্মুখে নিঃশর্ত মা প্রার্থনা করে তা প্রত্যাহার না করা হলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, গত ১ ডিসেম্বরের সমাবেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছেন তার ছেলেরা নাকি সৎ জীবনযাপন করে। যে দিন তিনি এ কথা বলেছেন সে দিনই তার ছেলেদের মানি লন্ডারিংয়ের টাকা দেশে ফেরত এসেছে। এ মামলা আওয়ামী লীগ সরকার করেনি। মামলা হয়েছে আমেরিকার কোর্টে। এই এলাকার অনেকে প্রবাসে থাকেন। আপনারা একটু খোঁজ নিয়ে দেখেন, তার ছেলে লন্ডনের কোনো এলাকায় থাকে। কী গাড়ি ব্যবহার করে, কী রকম বিলাসবহুল জীবন যাপন করছে, কোথা থেকে এ টাকা আসবে? দুর্নীতি ছাড়া এত টাকা কোথা থেকে আসে?’ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তার ছেলেরা বিদেশে রেস্টুরেন্ট করেছে, বাড়ি করছে, গাড়ি কিনছে। ভাঙা সুটকেস থেকে কি এসব টাকা বের হচ্ছে। বিএনপি মতায় থাকাকালে মানি লন্ডারিং করে এসব টাকা পাচার করে এখন লন্ডনে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে তারেক। এ বক্তব্য পর দিন ২ ডিসেম্বর দেশের সব শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রকাশ ও প্রচারিত হয়েছে। এ ধরনের মানহানিকর ও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে জনসাধারণের কাছে তার সুনাম ুণœ করার উদ্দেশ্যে।

ব্যারিস্টার খোকন বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) একনিষ্ঠ ও নিবেদিত নেতা।  ২০০৯ সাল থেকে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে। দেশে-বিদেশে তিনি জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তিনি কোনো মানি লন্ডারিং বা দুর্নীতির সাথে জড়িত নন। বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো টাকা ফেরত আনেনি এবং যুক্তরাষ্ট্রে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলাও নেই। তার কোনো রেস্টুরেন্ট নেই ও লন্ডনে বাড়ি নেই। তিনি লন্ডনে সাধারণ জীবনযাপন করছেন। শুধুমাত্র চিকিৎসার কারণে তিনি সেখানে থাকছেন। বিদেশে তার নিজের বা পরিবার, আত্মীয়স্বজন বা অন্য কোনো ব্যক্তির নামে কোনো সম্পত্তি নেই। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও সততা, স্বচ্ছতা, নিবেদিত হয়ে তিনি তা পরিচালনা করেন। তিনি নিয়মিত আয়কর দেন। তার গোপন কোনো সম্পত্তি নেই। অভিযোগ করা দুর্নীতি বা মানি লন্ডারিংয়ের সাথে তিনি জড়িত নন। এ বক্তব্য তার গ্রহণযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত ও তাকে ঘৃণার পাত্র হিসেবে উপস্থাপন করেছে। সরকার প্রধান হিসেবে তার বক্তব্য যৌক্তিক ও দায়িত্বশীল হবে এটাই সবাই আশা করেন। তা সত্ত্বেও তিনি মানহানিকর মন্তব্য করেছেন, যা অপ্রত্যাশিত এবং দুঃখজনক। এই বক্তব্যের আইনগত কোনো ভিত্তি নেই।

No comments

Powered by Blogger.