মতিঝিলের মামলায় ফখরুলের জামিন- হাতবোমা বিস্ফোরণ

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় মতিঝিল থানায় দায়ের হওয়া মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট।
সোমবার ফখরুল ইসলামের করা এক জামিন আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও শেখ মোঃ জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ছয় মাসের এই অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে। জামিন মঞ্জুরের পর ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের জানান, মামলার এফআইআরের আসামি কলামে মির্জা ফখরুলের নাম ছিল না। এরপরও কেবল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই মামলায় তাকে জড়ানো হয়েছে। মামলার বাদীও এজাহারে বলেছেন, তিনি নির্দেশিত হয়ে এই মামলা করেছেন। তার মানে তিনি নিজ ইচ্ছায় এই মামলা করেননি।
অন্যদিকে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, মামলার এজাহারে রয়েছে, আসামী মির্জা ফখরুল মানুষকে গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের না হতে হুমকি দিয়েছেন। এই পর্যায়ের একজন নেতা কেন মানুষকে হুমকি দিবেন? এখানে রাজনীতি আর সাধারণ মানুষের অধিকারকে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে। বোমা নিক্ষেপ, গাড়ি ভাংচুর কারো রাজেনৈতিক অধিকার হতে পারে না। তিনি আরও বলেন, আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে জামিন দিয়েছে। এই আদেশের বিরুদ্ধে আপীলের সিদ্ধান্ত এখনও নেইনি।
মির্জা ফখরুলের পক্ষে জামিন আবেদনকারী আইনজীবী মোঃ সগীর হোসেন লিওন সাংবাদিকদের জানান, আদালত মির্জা ফখরুলকে ৬ মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন। পাশাপাশি কেন তাঁকে জামিন দেয়া হবে না, এ মর্মে রুলও জারি করেছে। তিনি বলেন, বাকি যে দুই মামলার গ্রেফতার আছেন, উভয় মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ মহাসচিবকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেছে। আগামী ২৪ জানুয়ারি নিম্ন আদালতে আবেদনের শুনানি হবে। এরপর সেখানে আমরা জামিন আবেদন করব। এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি মহানগর দায়রা জজ মোঃ জহুরুল হক মতিঝিল থানার মামলায় ফখরুলের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। পরে রবিবার তিনি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন, যা সোমবারের কার্যতালিকায় আসে।
উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মির্জা ফখরুলকে আটক করা হয়। ওইদিন তাকে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ময়লাবাহী গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে পল্টন থানার একটি মামলায় এবং শেরেবাংলানগর থানার আরেকটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এ দুটি মামলা দায়ের করা হয় ৯ ডিসেম্বর অবরোধ কর্মসূচীর দিন। এ ছাড়া অবরোধ কর্মসূচী চলাকালে গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় মোট ৩৭টি মামলা করা হয়। পল্টন ও শেরেবাংলানগর থানায় করা দুই মামলায় মির্জা ফখরুল ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।

No comments

Powered by Blogger.