কিডনি নষ্ট হয়ে ঘণ্টায় ৫ জনের মৃত্যু ঘটছে

 দেশে প্রায় দু’ কোটি লোক কোন না কোনভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত। কিডনি বিকল হয়ে প্রতিঘণ্টায় ৫ জনের অকাল মৃত্যু ঘটছে। সাধারণত শতকরা ৭৫ ভাগ কিডনি নষ্ট হওয়ার আগে রোগী বুঝতেই পারে না যে, সে ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত।
কিডনি যখন বিকল হয়ে যায়, তখন বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় কিডনি সংযোজন বা ডায়ালিসিস। কিডনি বিকল রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় এদেশের শতকরা ৫ ভাগ লোকও চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে পারেন না। পাশাপাশি কিডনি সংযোজনের সুযোগ অত্যান্ত সীমিত। তাই কিডনি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার। প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগের কারণ ও কিডনি রোগ শনাক্ত করে কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব।
শনিবার রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে ‘কিডনি এ্যাওয়ারনেস মনিটরিং এ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস) আয়োজিত ‘ভয়াবহ কিডনি রোগ প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনায় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন। ক্যাম্পাসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এমএস সামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বারডেম হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা: মির্জা মাজহারুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ, কন্টিনেন্টাল ইনর্সুরেন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ হাসমত আলী, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পি চের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী, গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর ও এ্যারে ওয়ারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ হাফিজুর রহমান চৌধুরী (পলাশ)। সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন ডা. সুব্রত ঘোষ এবং মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ক্যাম্পসের সাধারণ সম্পাদক শাহীন রেজা নূর।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, কিডনি রোগের কারণ ও কিডনি রোগ শনাক্তকরণে সচেতনতামূলক কার্যক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার পাশে থাকবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যও কিডনি স্ক্রিনিং পরিচালনা করা দরকার। এক্ষেত্রে তিনি কিডনি বিশেষজ্ঞদের আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ডাঃ এমএস সামাদ বলেন, কিডনি বিকল রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় এদেশের শতকরা ৫ ভাগ লোকও চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে পারেন না। পাশাপাশি কিডনি সংযোজনের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। তাই কিডনি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার। প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগের কারণ ও কিডনি রোগ শনাক্ত করে কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে প্রায় দু’ কোটি লোক কোন না কোনভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত। কিডনি বিকল হয়ে প্রতিঘণ্টায় ৫ জনের অকাল মৃত্যু ঘটছে। সাধারণত শতকরা ৭৫ ভাগ কিডনি নষ্ট হওয়ার আগে রোগী বুঝতেই পারে না যে, সে ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত। কিডনি যখন বিকল হয়ে যায়, তখন বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় কিডনি সংযোজন বা ডায়ালিসিস। কিডনি রোগ একটি জটিল ব্যাধি। চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। যেখানে সেখানে কিডনি অপসারণ ও প্রতিস্থাপন করা যায় না। কিডনি অপসারণ ও প্রতিস্থাপনের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো থাকতে হয়। আর এই অবকাঠামো তৈরি করাটাও বেশ ব্যয়বহুল। দেশের খুব স্বল্পসংখ্যক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে কিডনি প্রতিস্থাপন কার্যক্রম চালু রয়েছে। প্রবন্ধে আরো বলা হয়, বিভিন্ন কারণে কিডনি অকেজো হয়ে পড়ে। এদের মধ্যে কারও কারও কিডনি হঠাৎ করে অকেজো হয়ে যায়। বাংলাদেশে ডায়রিয়া, অতিরিক্ত বমি, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, বিভিন্ন রকম ইনফেকশন, ম্যালেরিয়া, প্রসবকালীন জটিলতা, সাংঘাতিক ধরনের নেফ্রাইটিস, বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও কিডনির পাথরের কারণে হঠাৎ করেও কিডনি অকেজো হয়ে যায়। এ ধরনের কিডনি অকেজো হয়ে যাওয়ার ভাল দিক হচ্ছে, এগুলো অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিরোধ করা যায়। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা করলে অনেকের কিডনি পুনরায় স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ফিরে পায়।

No comments

Powered by Blogger.