রংপুর সিটি নির্বাচন- রংপুরের প্রথম নগরপিতা সরফুদ্দীন by তানভীর সোহেল ও আরিফুল হক

রংপুরের প্রথম নগরপিতা হলেন সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে তিনি নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ২৮ হাজার ৪৫০ ভোট বেশি পেয়ে মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে তিনটায় বেসরকারিভাবে সরফুদ্দীনকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। জাতীয় পার্টির সাবেক এই সাংসদ এখন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। মেয়র পদে তিনি ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৬ হাজার ২৫৫টি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৮০৫ ভোট। জাতীয় পার্টির আরেক বহিষ্কৃত নেতা এ কে এম আবদুর রউফ মানিক পেয়েছেন ৩৭ হাজার ২০৮ ভোট।
নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মেয়র প্রার্থীরা। ফলাফল ঘোষণার পর নাগরিক কমিটির প্রার্থী সরফুদ্দীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, কারও কাছে প্রভাবিত হয়ে এবার রংপুরের মানুষ ভোট দেননি। তাঁরা স্বাধীন মতামত দিয়েছেন, নিজেদের লোক বেছে নিয়েছেন। এ বিজয় রংপুরের জনগণের। তিনি মেয়র পদের অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে নবনির্বাচিত মেয়র বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের কোনো নেতা নই। গত পাঁচ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো যোগাযোগও নেই। জেলা কমিটির উপদেষ্টা আমাকে করা হলেও এর কী কাজ তা জানি না।’ মেয়র হিসেবে প্রথম কাজ কী হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথমে রংপুরকে একটি সুন্দর নগর হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করব। রাস্তা, ড্রেন নির্মাণ, সিটি করপোরেশন এলাকার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা। এরপর সব বাড়িতে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং গ্যাসলাইনের জন্য আন্দোলন গড়ে তুলব।’
পরাজিত প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান ভোটের ফলাফল মেনে নিয়েছেন। তিনি নবনির্বাচিত মেয়রকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। মেয়র পদের অপর ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে কেবল বিএনপির নেতা কাওসার জামান কারচুপির অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার রাতে নির্বাচন বর্জন করেন। তিনি ভোট পেয়েছেন ২১ হাজার ২৩৫টি। অন্য কেউ গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে কোনো অভিযোগ দেননি।
এই সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ভোটার ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৭৪২ জন। নির্বাচনে ভোট পড়েছে ২ লাখ ৮২ হাজার ১৬৪টি। এর মধ্যে ৮ হাজার ৫৩৪টি ভোট নষ্ট হয়েছে। ভোটার উপস্থিতি ৭৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
এদিকে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদের ফলাফল নিয়ে অভিযোগ করেছেন হাকিমুজ্জামান নামের এক প্রার্থী। তিনি ওই ওয়ার্ডে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি সাত ভোটে পরাজিত হয়েছেন। এ ছাড়া ৯-১২ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে কাউকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়নি। ওই পদের প্রার্থী রিভারানী অভিযোগ করেন, তিনি ১৬০ ভোটে এগিয়ে আছেন। কিন্তু তাঁকে বিজয়ী না করার চেষ্টা চলছে।

No comments

Powered by Blogger.