দূতাবাসে আশ্রয়ের ছয় মাস-আগামী বছর ১০ লাখ দলিল প্রকাশ করবে উইকিলিকস

বিকল্প ধারার সংবাদমাধ্যম উইকিলিকস আগামী বছর ১০ লাখ গোপন দলিল প্রকাশ করবে। আর এ দলিলগুলো বিশ্বের সব দেশকে প্রভাবিত করবে। গত বৃহস্পতিবার উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেওয়া এক বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
ইকুয়েডর দূতাবাসে অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়ার ছয় মাস পূর্ণ হয় বৃহস্পতিবার। এ উপলক্ষে গত ১৯ আগস্টের পর এই প্রথম তিনি জনসমক্ষে এলেন। তিনি বলেন, আগামী বছরটিও একই রকম ব্যস্ত। এরই মধ্যে ১০ লাখেরও বেশি দলিল প্রকাশের জন্য উইকিলিকস প্রস্তুতি নিয়েছে। এ দলিলগুলো বিশ্বের প্রতিটি দেশকে প্রভাবিত করবে। তিনি কথাটায় জোর দিয়ে দ্বিতীয়বার উচ্চারণ করেন, 'এই বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশকে'।
প্রায় ১০০ সমর্থকের সামনে দেওয়া বক্তব্যে অ্যাসাঞ্জ তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরিয়াকে ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় সরকারগুলোর কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, সত্যিকারের গণতন্ত্র মানে হোয়াইট হাউস নয়। সত্যিকারের গণতন্ত্র মানে ক্যামেরাও নয়। সত্যিকারের গণতন্ত্র হলো তাহরির থেকে লন্ডন পর্যন্ত সত্যের অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মিথ্যার বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধ। তবে তিনি বলেন, আলোচনার দরজা সব সময় খোলা আছে। যে কেউ চাইলে সমস্যা সমাধানের জন্য তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন।
অ্যাসাঞ্জ দাবি করেন, যদি তাঁকে সুইডেনে পাঠানো হয়, তবে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও কূটনৈতিক গোপন দলিল ফাঁসের দায়ে মামলা হবে। তিনি বলেন, তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এমনকি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে। বক্তৃতা শেষে তিনি মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলে সমর্থকদের অভিবাদন জানান।
অ্যাসাঞ্জের সমর্থক এক চাকরিহীন বাবা ব্লেক কোহেন বলেন, 'আমি তাঁর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে জানি না। আমি দেয়ালে বসে থাকা কোনো মাছি নই। কিন্তু আমি জানি, উইকিলিকস এমন একটি সংগঠন, যা শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে।' তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি ফাঁদে ফেলার পুরনো কৌশল বলে তিনি মন্তব্য করেন।
লন্ডনে ইকুয়েডরের রাষ্ট্রদূত এক বিবৃতিতে বলেন, এ বছর জনগণের ঐক্যবদ্ধ দাবির মুখে ইকুয়েডর এমন এক ব্যক্তির প্রতি সংহতি জানাল, যিনি জনগণের স্বাধীন চিন্তা ও মত প্রকাশের জন্য হয়রানির স্বীকার হয়েছেন। ইকুয়েডরের পক্ষ থেকে তিনি আবারো অ্যাসাঞ্জের প্রতি সমর্থন জানান।
গত জুনে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে যুক্তরাজ্যের আদালত অ্যাসাঞ্জকে সুইডেন সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আদালতের এ আদেশ এড়াতেই তিনি ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নেন। এ বিষয়েও আলোচনার দরজা খোলা আছে বলে অ্যাসাঞ্জ জানান। সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.