হত্যাকারীর উদ্দেশ্য নিয়ে তদন্ত শুরু- যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র আইন নিয়ে বিতর্ক

যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাটে বিদ্যালয়ে হত্যাযজ্ঞের পর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। দাবি উঠেছে অস্ত্র আইন কঠোর করার। হোয়াইট হাউস এ ধরনের দুঃখজনক সহিংসতা দমনে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিকে ‘জটিল’ সমস্যা বলে উল্লেখ করেছে।
এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে গত সোমবার শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারদের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
পুলিশ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ওই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা হত্যাকারী অ্যাডাম ল্যানজার ব্যক্তিগত কম্পিউটারে কোনো তথ্য পাওয়া যায় কি না, তা তদন্ত করে দেখছেন।
অ্যাডাম গত শুক্রবার কানেটিকাটের স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুলে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ২০ শিশুসহ ২৬ জনকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন। গত সোমবার নিহত দুই শিশুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। অন্যদের শেষকৃত্য চলতি সপ্তাহের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা।
প্রেসিডেন্ট ওবামা গত রোববার কানেটিকাটে নিহতদের স্মরণসভায় যোগ দেন। সেখানে বক্তৃতায় তিনি অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন করার ইঙ্গিত দেন। এরপর গত সোমবার ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, শিক্ষামন্ত্রী আর্নে ডানকান, অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডার এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী ক্যাথলিন সেবেলিয়াসের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। বৈঠকে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে সহিংসতা কমিয়ে আনার ব্যাপারে বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। মার্কিন প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, এ ধরনের সহিংসতা কমিয়ে আনার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার দায়িত্ব ভাইস প্রেসিডেন্টের হাতে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
এর আগে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জে কার্নে জানান, এ ধরনের সহিংসতার একটি জবাব ছিল অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোর করা। তিনি বলেন, ‘এটি একটি জটিল সমস্যা। এই সমস্যার জটিল সমাধানই প্রয়োজন।’
অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোর করার ব্যাপারে অনীহা ছিল ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির। তবে এর আগে আইন কঠোর করার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া দুই ডেমোক্র্যাট সিনেটরও এবার আইন পরিবর্তন করার পক্ষে বলেছেন। তাঁদের একজন পশ্চিম ভার্জিনিয়ার সিনেটর জো মানচিন, অন্যজন ভার্জিনিয়ার সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার। সিনেটর মানচিন গত সোমবার এমএসএনবিসি নেটওয়ার্ককে জানান, এখন আর কথা নয়, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কাজ করার সময় এসেছে। সিনেটর ওয়ার্নার যুক্তিসংগতভাবে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানান।
কানেটিকাট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য খুঁজে বের করতে হত্যাকারী অ্যাডামের কম্পিউটারে তাঁর ই-মেইল খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর আগে তিনি কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কি না বা কোনো ওয়েবসাইট ঘেঁটেছেন কি না তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এসব বিষয় জানা গেলে হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সহজ হবে। কানেটিকাট পুলিশের কর্মকর্তা জে. পল ভ্যান্স বলেন, অ্যাডামের অস্ত্র ব্যবহারের ইতিহাসও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আত্মহত্যার পর তাঁর পাশে তিনটি অস্ত্র পাওয়া গেছে। পরে তাঁর গাড়ির পাশ থেকে একটি শটগানও উদ্ধার করা হয়। বিবিসি, সিএনএন।

No comments

Powered by Blogger.