মুক্তিযোদ্ধাদের আজ সংবর্ধনা দেবে বিএনপি-জামায়াতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি : তরিকুল

আজ মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিচ্ছে বিএনপি। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে দলটি। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, তাঁরা দলমত-নির্বিশেষ সবাইকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাঁদের দলীয়করণ করতে চান না তাঁরা। তিনি আরো জানান, ওই আয়োজনে জামায়াতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তরিকুল বলেন, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের এই সমাবেশকে ঘিরে কালের কণ্ঠসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের ভূমিকার সমালোচনা করে তরিকুল বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ শাসক দলের অঙ্গসংগঠন হিসেবেই কাজ করছে। সুতরাং তারা ক্ষমতাসীনদের বাঁশিতেই ফুঁ দেবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে বহুল প্রচারিত বেশ কয়েকটি দৈনিক মনগড়া অলীক কাহিনী ছেপে দায়িত্বশীলতার মর্যাদা বিনষ্ট করেছে। প্রকাশিত সংবাদকে তিনি অসত্য ও ভিত্তিহীন এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বানকে অগণতান্ত্রিক, অন্যায় বলে উল্লেখ করেন। সব রাজনৈতিক দলের মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সব সদস্যকে অনুষ্ঠানে আসার আহ্বান জানান তিনি। এক প্রশ্নের উত্তরে তরিকুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা কোনো দলের নন। তাঁরা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। বিএনপি সর্বশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের দল।
জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বাম দলগুলোর হরতাল প্রসঙ্গে 'এই হরতাল কর্মসূচি থেকে বিরোধী দলের শিক্ষা নেওয়া উচিত যে, শান্তিপূর্ণভাবেও আন্দোলন করা যায়'- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাহিনী কিভাবে আজকের হরতাল পালন করছে, তা দেশবাসী দেখেছে। রামুর ঘটনা, বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড, পদ্মা সেতুর ঋণচুক্তি বাতিল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বাধাদান একই সূত্রে গাঁথা- বিরোধী দলের দিকে ইঙ্গিত করে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জবাবে তরিকুল ইসলাম বলেন, 'উনি ঠিকই বলেছেন, উনারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।'
তিনি বলেন, ক্ষমতার দম্ভে এই সরকার বাক ও ব্যক্তিস্বাধীনতা, মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করে দেশকে বিরোধী দলশূন্য করার যে মহা-উদ্যোগ ও উন্মাদনায় মেতে আছে তাতে তাদের অনিবার্য নির্মম পরিণতির দিন ঘনিয়ে আসছে। তবে সেটি তারা টের পাচ্ছে না।
মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আজকের কর্মসূচি বানচাল করতে সরকার নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অনুষ্ঠানে না যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রস্তুতি : সংবর্ধনা উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে দুপুর ২টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ৭৫টি সাংগঠনিক জেলা থেকে এরই মধ্যে অনেক মুক্তিযোদ্ধা এসেছেন বলে জানিয়েছেন শাহজাহান ওমর। গতকাল দুপুরে অনুষ্ঠানের কেন্দ্রস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি এবং মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি অধ্যক্ষ সোহরাব হোসেন বলেন, সংবর্ধনায় সারা দেশ থেকে ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেবেন। অনুষ্ঠানে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতা এবং শিক্ষাবিদ-পেশাজীবীদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠান সফল করতে সাতটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। www.bnplive.com অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।

No comments

Powered by Blogger.