আবহাওয়া- হঠাৎ বেড়েছে শীত, কুয়াশা কেটে গেলে আরও বাড়বে

হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। সঙ্গে ঘন কুয়াশা। এর প্রভাব পড়ছে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের জনজীবনে। ঢাকায় গতকাল মঙ্গলবার দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশার কারণে ব্যাহত হয়েছে সড়ক-নৌ-রেলপথে চলাচল।
কুয়াশার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ এবং মাওয়া-কাওরাকান্দি নৌপথে গত সোমবার দিবাগত রাত একটা থেকে গতকাল সকাল ছয়টা পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টা ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল। আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ বুধবারও দেশের অধিকাংশ নদীতে ঘন কুয়াশা থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে।
হঠাৎ শীত ও কুয়াশা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদেরা দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়াকে দায়ী করেছেন। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, আজ দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। তবে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমে শীতের অনুভূতি আরও বাড়বে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে কুয়াশা কেটে যেতে পারে। তখন তাপমাত্রা আরও কমে শীত জেঁকে বসতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে সাধারণত দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে চলে যায়। গত দুই দিন দেশের কোথাও দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামেনি। তবে বৃহস্পতিবারের পর থেকে কুয়াশা কেটে গিয়ে তাপমাত্রা কমতে পারে। এতে উত্তরাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।
গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ঈশ্বরদীতে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনাজপুরে ছিল ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শ্রীমঙ্গলে ১২ দশমিক ৩ এবং রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আমাদের মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্র জানায়, ঘন কুয়াশার কারণে একপর্যায়ে দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে সোমবার রাত একটার দিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ করা হয়। পথ দেখতে না পেয়ে মাঝ নদীতে যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে কেরামত আলী, শাহ আলী, আমানত শাহ ও কুমারী নামের চারটি ফেরি আটকা পড়ে। এদিকে পাটুরিয়া প্রান্তে কাবেরী ও কপোতী এবং দৌলতদিয়ায় ভাষাশহীদ বরকত, এনায়েতপুরী, শাহজালাল, শাহপরান ও মতিউর রহমান নামের ছয়টি ফেরি যানবাহন নিয়ে নোঙর করে থাকে। এতে কনকনে শীতে যাত্রী ও যানবাহনের শ্রমিকেরা দুর্ভোগের শিকার হন।
গতকাল সকাল ছয়টার দিকে কুয়াশা কমে গেলে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) বিদ্যুৎ কুমার সাহা বলেন, পাঁচ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীবাহী দুই শতাধিক কোচ, তিন শতাধিক ট্রাক ও শতাধিক ছোট গাড়ি উভয় ঘাটে আটকা পড়ে। ফেরি চলাচল শুরু হলে অগ্রাধিকারভিত্তিতে যাত্রীবাহী কোচ পারাপার করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.