রাজধানীর পাঁচ স্থানে খালেদা জিয়ার পথসভা-নির্দলীয় সরকারের বিল আনুন, সংসদে যাব

জালেম ও দুর্নীতিবাজ সরকারকে বিদায় না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল বুধবার গণসংযোগের সময় তিনি রাজধানীতে পাঁচটি পথসভায় বক্তব্য দেন।
এ সময় বিরোধীদলীয় নেতা সরকারের উদ্দেশে বলেন, 'আগামী অধিবেশনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের বিল আনুন, আমরাও সংসদে যাব। বিল পাস না করা হলে কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।' এ ছাড়া গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করে দেন খালেদা জিয়া।
গতকাল সারা দেশে ১৮ দলীয় জোটের এই গণসংযোগ কর্মসূচি পালিত হয়। রাজধানীতে এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন খালেদা জিয়া। বক্তব্য দেন বিভিন্ন পথসভায়। এ সময় তিনি বলেন, 'বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম আবার বাড়ানো হলে হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।' সরকারের প্রতি সংসদে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল আনার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, 'ক্ষমতায় আসার পর থেকে আপনারা খুন, হামলা-মামলা, গুমসহ অনেক অনৈতিক কাজ করেছেন। একটিও ভালো কাজ করেননি। সংসদে বিল এনে অন্তত একটি ভালো কাজ করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনলে সরকারের বাকি মেয়াদে বিরোধী দল আর আন্দোলনে যাবে না।'
খালেদা জিয়া বলেন, 'সরকার সত্যিকার অর্থে যুদ্ধাপরাধের বিচার করতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়স্বজন ও ক্ষমতাসীন দলের ভেতরে যারা যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত, তাদের বিচারের আওতায় আনুন। তাহলে মানুষ বুঝবে যুদ্ধাপরাধের সত্যিকার ও স্বচ্ছ বিচার হচ্ছে।' বিএনপি যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটকদের রক্ষায় আন্দোলন করছে- ক্ষমতাসীনদের এমন অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, 'সরকার কথায় কথায় বলে, আমরা যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকানোর জন্য আন্দোলন করছি। এটা মিথ্যা কথা। জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তারা এসব বলছে। সরকারের দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আমরা আন্দোলনে নেমেছি। সরকার হটাতে গণ-অভ্যুত্থানই একমাত্র পথ। আর কোনো বিকল্প নেই। আমি সেই ডাক দিতে রাস্তায় নেমেছি।'
বিরোধীদলীয় নেতা আরো বলেন, 'সাপকে বিশ্বাস করা যায়, কিন্তু এই জালেম ও দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করা যায় না। আওয়ামী লীগ সাপের চেয়েও খারাপ। এ জন্য আমরা আজ গণসংযোগে নেমেছি। মা-বোনসহ দেশের মানুষকে জেগে উঠতে হবে।'
গতকাল দেশব্যাপী ১৮ দলীয় জোটের গণসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীতে পাঁচটি পথসভায় খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবিতে গাবতলী, কাওরান বাজার, যাত্রাবাড়ী, বাসাবো বালুর মাঠ ও বাড্ডার ভাটারায় পথসভায় বক্তব্য দেন তিনি। ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তিনি আট ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার পথে গণসংযোগ করেন। পথসভাগুলোতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটে। গণসংযোগ চলাকালে বিভিন্ন সড়কে যানজট দেখা দেয়।
মূল দাবি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা হলেও এর সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, বিচার বিভাগ দলীয়করণের প্রতিবাদ এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জোটের নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও ছিল। গণসংযোগে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দলের সমন্বয়ক তরিকুল ইসলামসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় এবং ১৮ দলীয় জোটের শরিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
পথসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম, মির্জা আব্বাস, আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল মান্নান, বরকতউল্লাহ বুলু, আমানউল্লাহ আমান, ফজলুল হক মিলন, মহানগর সদস্যসচিব আবদুস সালাম, খায়রুল কবীর খোকন, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, জামায়াতে ইসলামীর নেতা মজিবুর রহমান, সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, নুরুল ইসলাম বুলবুল, ডা. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, সাইফ উদ্দিন আহমেদ মনিকসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতারা।
গাবতলীর পথসভা : গাবতলীতে প্রথম গণসংযোগ কর্মসূচির পথসভায় বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। সকাল সোয়া ১১টায় তিনি গাবতলীর হানিফ পরিবহন বাস ডিপো (পুরনো বিউটি সিনেমা হল) প্রাঙ্গণের মঞ্চে পৌঁছালে নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা করতালি দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানায়। সকাল থেকেই মিরপুর, আমিনবাজার, কাফরুলসহ আশপাশের এলাকা থেকে বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা গাবতলীতে জড়ো হয়। সেখানে ৪০ মিনিট বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। এই পথসভায় সভাপতিত্ব করেন সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক এস এ খালেক।
বর্তমান সরকারের আমলে দেশে 'জংলি শাসন' চলছে- এমন মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, 'আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দিন।' তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'তোমরা এই সরকারের আমলে কোনো চাকরি পাওনি। তোমাদের নেশা খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখে তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চায়। তাই তোমাদের আজ জেগে উঠতে হবে। আমরা তোমাদের জন্য রাস্তায় নেমেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানোর জন্য নয়- আমরা সরকারের দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আন্দোলনে নেমেছি।' গাবতলী থেকে কল্যাণপুর, আগারগাঁও সড়ক ও ফার্মগেট হয়ে গণসংযোগ করতে করতে তিনি কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারসংলগ্ন পথসভা মঞ্চে উপস্থিত হন।
কারওয়ান বাজারে পথসভা : দুপুর সাড়ে ১২টায় কারওয়ান বাজারে প্রগতি টাওয়ারের সামনে দ্বিতীয় পথসভা করেন খালেদা জিয়া। এতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাহাবুদ্দিন। এ সভায় খালেদা জিয়া বলেন, সরকার এ পর্যন্ত ছয় দফা বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দামও কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে। আবারও তেল, গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে হরতালের মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের দুর্নীতি মামলার প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, দুই আবুলকে বাদ দিয়ে তারা (দুদক) মামলা করেছে। দুদক সরকারের আজ্ঞাবহ বলেই সরকারের দুর্নীতিবাজদের চোখে দেখে না। দুর্নীতিবাজদের রক্ষার অভিযোগে একদিন দুর্নীতি দমন কমিশনকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুলকে ধরা হয় না, কারণ তাঁকে ধরলে সরকারের আপামণি, দিদিমণি, জামাই বাবু ও রুই-কাতলা সবাই বেরিয়ে আসবে। আর এ জন্য দুদক তাদের ধরতে চায় না। তিনি বলেন, নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা মেনে নেওয়ার জন্য সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হলে বিএনপি তাতে যোগ দেব।
খালেদা জিয়া দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদককে 'দেশপ্রেমিক' অভিহিত করে খালেদা জিয়া বলেন, 'সত্য কথা বলেন বলেই মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেছে।
যাত্রাবাড়ীর পথসভা : কারওয়ান বাজার থেকে এফডিসি সড়ক হয়ে মগবাজার লেভেলক্রসিং, মগবাজার মোড়, রমনা থানা সড়ক, বেইলি রোড, কাকরাইল মসজিদ, মৎস্য ভবন, হাইকোর্ট হয়ে কার্জন হল সড়ক, নগর ভবন, গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজার সড়ক, নর্থ সাউথ সড়ক, রায়সাহেব বাজার সড়ক হয়ে বিএনপি নেত্রী ধোলাইখাল যান। সেখানে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে দয়াগঞ্জ সড়ক হয়ে যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক সড়কে তৃতীয় পথসভায় যোগ দেন তিনি। সেখানে খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সিরাজ শিকদার, ইলিয়াস আলীসহ সব গুম ও হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে। এসব মামলায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হুকুমের আসামি হতে পারেন। এর আগে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে গিয়ে বলেছিলেন, 'একটার বদলে ১০টা লাশ চাই।' ওই কথার ভিত্তিতেই প্রধানমন্ত্রীকে হুকুমের আসামি করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে খালেদা জিয়া বলেন, 'আপনার পরিবারের অনেক সদস্যের দুর্নীতির কাগজ আমাদের হাতে আছে। আপনি বড় গলায় চিৎকার করেন আর আমাকে বলেন, চোরের মার বড় গলা। চোরের মার বড় গলা আপনারই, আমার নয়। তিনি বলেন, পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এই সরকারের যাত্রা শুরু। বিডিআরের ঘটনা সরকার আগেই জানত, যদি তা না হতো ওই ঘটনার আগের দিন রাতে কেন সেখানকার ডিনার অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছিল।' জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে বামদলগুলোর সাম্প্রতিক সময়ের হরতাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'গত ১৮ ডিসেম্বরের হরতাল ছিল সরকারি হরতাল। ওই দিন পুলিশ হরতাল পালন করেছে। বিআরটিসি বাস কেন রাস্তায় নামানো হয়নি আমরা তা জানতে চাই।'
বাসাবো বালুর মাঠে পথসভা : যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক সড়কে পথসভা শেষে সায়েদাবাদ, মানিকনগর, বৌদ্ধমন্দির হয়ে খিলগাঁওয়ের বালুর মাঠে চতুর্থ পথসভায় যোগ দেন খালেদা জিয়া। এই পথসভায় প্রধানমন্ত্রীকে 'রং হেডেড (বিকৃত মস্তিষ্ক)' উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, 'এমন নারী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন না। এ প্রধানমন্ত্রী লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ খুন করিয়েছেন। গানপাউডার দিয়ে গাড়িতে আগুন লাগিয়েছেন। একটি লাশের পরিবর্তে ১০টি লাশ চেয়েছেন। বিশ্বজিৎকে তাঁর ছেলেরা (ছাত্রলীগ) হত্যা করেছে।'
প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে খালেদা জিয়া বলেন, 'তাঁদের নির্দেশেই যেহেতু এসব হয়েছে- তাই তাঁরাও রক্ষা পাবেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হুকুম দিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগকে অস্ত্র হাতে রাস্তায় নামিয়েছেন। কুপিয়ে বিশ্বজিৎকে হত্যা করিয়েছেন।' তিনি আরো বলেন, কিভাবে একটা মানুষকে এভাবে হত্যা করেছে! কী দোষ ছিল তাঁর, তিনি একজন পথচারী ছিলেন। এখন হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে নিতে পোস্টমোর্টেম নিয়ে রাজনীতি চলছে। তারা তদন্তে বলেছে, বিশ্বজিতের শরীরে নাকি কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এটা জনগণের সঙ্গে বেইমানি। বিশ্বজিতের রক্ত দিয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, বিশ্বজিতের বিচার দিয়েই তা শেষ হবে।'
ভাটারার নতুন বাজারে পথসভা : সবুজবাগের বাসাবো বালুর মাঠের পথসভা শেষে খালেদা জিয়া মালিবাগ মোড়, রামপুরা সড়ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস অতিক্রম করে বাড্ডার ভাটারার নতুন বাজার এলাকার মাঠে পঞ্চম ও শেষ পথসভায় অংশ নেন। সন্ধ্যা ৬টায় সমবেত নেতা-কর্মীরা তুমুল করতালি ও স্লোগান দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানায়। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবিতে খালেদা জিয়ার পথসভায় আগমন উপলক্ষে আগেই নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে জড়ো হয়। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ কাইয়ুম। খালেদা জিয়া বলেন, 'সরকার কক্সবাজারের রামুর ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের পুরস্কার হিসেবে বিদেশ সফরে নিয়ে গেছে। এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনতার মঞ্চ করে রাষ্ট্রদ্রোহের কাজ করেছিলেন। আমরা তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের মামলা দিইনি, তাঁকে মাফ করে দিয়েছিলাম।'
সরকারের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, 'আপনারা বলছেন, অনির্বাচিত কারো হাতে ক্ষমতা দেবেন না। তাহলে দেড় বছর ধরে নির্বাচিত মেয়র সরিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা বসিয়ে রেখেছেন কেন, মাল কামানোর জন্য? আগামী অধিবেশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল এনে আমাদের বলুন আমরাও সংসদে যাব। সংসদে গিয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।'
ছয় বিভাগীয় শহরে গণসংযোগ : তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালসহ বিভিন্ন দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বিভাগীয় শহরগুলোতেও গণসংযোগ করেছে ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা।
আমাদের চট্টগ্রাম অফিস জানায়, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট মহানগরের বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ ও পথসভা করেছে। কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বক্তব্য দেন। কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতা জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রমুখ।
রাজশাহী অফিস জানায়, সকাল ১০টায় নগরীর বিনোদপুর বাজার থেকে গণসংযোগ কর্মসূচি শুরু হয়। এর আগে সেখানে পথসভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিনুসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। নগরীর ছয়টি স্থানে কর্মসূচি পালিত হয়। তবে এসব কর্মসূচিতে জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে ১৭টিরই নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন না। দুপুরে নগরীর নিউ মার্কেট এলাকায় জামায়াত ঝটিকা মিছিল করে।
বরিশাল অফিস জানায়, নগরের সিঅ্যান্ডবি রোড চৌমাথা, নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসহ কয়েকটি এলাকায় গণসংযোগ করে ১৮ দলীয় জোট। গণসংযোগের আগে অশ্বিনী কুমার টাউন হলের সামনে পথসভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায়। এতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ার।
খুলনা অফিস জানায়, সকালে নগরীর রূপসা ট্রাফিক মোড়, ময়লাপোতা মোড়, দুপুরে নিউ মার্কেট চত্বর, বিকেলে খালিশপুর প্লাটিনাম গেট ও সন্ধ্যায় ফুলবাড়িগেট জনতা মার্কেট চত্বরে পথসভা করে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট। কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. মঈন খান। এ সময় খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট অফিস জানায়, নগরীর রংমহল এলাকা থেকে গণসংযোগ শুরু হয়ে আম্বরখানায় গিয়ে শেষ হয়। গণসংযোগ শুরুর আগে রংমহল এলাকায়, এরপর কোর্ট পয়েন্টে এবং শেষে আম্বরখানা এলাকায় পথসভা হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী এম কে আনোয়ার কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন।
রংপুর অফিস জানায়, নগরে ১৮ দলীয় জোটের গণসংযোগ ও পথসভা কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান। পায়রা চত্বরে গিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়।

No comments

Powered by Blogger.