ঘনিষ্ঠরা কে কোথায়

লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে হত্যার এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ শনিবার। গত বছরের ২০ অক্টোবর তিনি সিরত শহরে বিদ্রোহীদের হাতে ধরা পড়েন। পরে তাঁকে হত্যা করা হয়। যদিও কিভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে তা নিয়ে আজও সব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।


গাদ্দাফির মৃত্যুর পর সংবাদমাধ্যমগুলো কিছুদিন তাঁর পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখলেও পরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব উত্তেজনা চাপা পড়তে থাকে। সরকারবিরোধী আন্দোলন চলার সময়েই গাদ্দাফির তিন ছেলে মারা যান। বাকিদের মধ্যে কে কোথায় কিভাবে আছেন এক নজরে তা দেখে নেওয়া যাক-

সাফিয়া গাদ্দাফি
গাদ্দাফির স্ত্রী এবং তাঁর ঔরসজাত আট সন্তানের জননী। সাফিয়া ফারকাস নামেও পরিচিত ছিলেন। গত বছরের ২৯ আগস্ট বিদ্রোহীরা ত্রিপোলির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর পরিবারের আরো কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে আলজেরিয়ায় পালিয়ে যান। 'মানবিক কারণে' আলজেরীয় সরকার তাঁদের আশ্রয় দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, আলজিয়ার্সের কাছের স্তাউয়েলি শহরে সুরক্ষিত এক বাড়িতে আছেন তিনি। লিবিয়ার ব্যাপারে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে আলজেরীয় সরকারের বিধিনিষেধ আছে।

সাইফ আল ইসলাম
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস থেকে স্নাতক পাস করা সাইফকেই গাদ্দাফির উত্তরাধিকারী ভাবা হতো। কিন্তু বাবার মৃত্যুর এক মাস পরেই তিনি ধরা পড়েন। বর্তমানে লিবিয়ার পার্বত্য শহর জিনতানে আটক আছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে লিবিয়া তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করতে চায়। একই অভিযোগে আইসিসিও তাঁর বিচার করতে চাইছে।

আয়শা গাদ্দাফি
গাদ্দাফির ঔরসজাত একমাত্র কন্যা আয়শা তাঁর মা ও ভাইয়ের সঙ্গে আলজেরিয়ায় আছেন। আলজেরিয়ায় পেঁৗছানোর তিন দিন পরেই একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। আলজেরীয় সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণের পরও সিরিয়ার একটি টেলিভিশন চ্যানেলের মাধ্যমে নতুন সরকারের বিরুদ্ধে লিবীয়দের আন্দোলনের ডাক দেন তিনি।

হানা গাদ্দাফি
গাদ্দাফি বেশ কয়েকবার দাবি করেছেন, তাঁর পালিত কন্যা হানা ১৯৮৬ সালে বিমান হামলায় মারা গেছেন। তবে কয়েক বছর পর পারিবারিক ভিডিওতে তাঁকে বাবা (গাদ্দাফি) ও ভাইদের সঙ্গে দেখা গেছে। গাদ্দাফির বাব আল আজিজিয়া প্রাসাদে চিকিৎসাসংক্রান্ত কয়েকটি দলিলপত্র ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের একটি সনদে হানা গাদ্দাফির নাম পাওয়া গেছে। হানা বেশ কয়েক বছর ত্রিপোলি মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছেন বলে ধারণা করা হয়। তবে তাঁর বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কোনো খোঁজ মেলেনি। সূত্র : বিবিসি।

মুহাম্মাদ গাদ্দাফি
পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে তিনি হয়তো এ বছরের লন্ডন অলিম্পিকে যোগদানকারী লিবীয় দলের প্রধান থাকতেন। এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ত্রিপোলি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার পর তিনিও আলজেরিয়া পালিয়ে যান। গাদ্দাফির প্রথম স্ত্রী ফতিহার গর্ভে জন্ম নেওয়া মুহাম্মাদ লিবিয়ার মোবাইল ফোন ও স্যাটেলাইট যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার চেয়ারম্যান ছিলেন। গণ-আন্দোলন দমনে বড় ধরনের কোনো ভূমিকা না থাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) তাঁর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

সাদি গাদ্দাফি
গাদ্দাফির শাসনামলে তিনি লিবিয়ান ফুটবল ফেডারেশন ও বিশেষ বাহিনীগুলোর প্রধান ছিলেন। বর্তমানে নাইজারের আশ্রয়ে আছেন। সেখানে সরকারি এক অতিথিশালায় আছেন। প্লেবয় ধরনের জীবনাচরণের জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। 'লিবিয়ায় ফেরত পাঠালে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে' আশঙ্কায় সাদিকে প্রত্যর্পণের লিবীয় অনুরোধ নাইজার ফিরিয়ে দিয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইন্টারপোল সাদির নামে রেড নোটিশ জারি করে। গত ডিসেম্বরে মেঙ্কিান কর্মকর্তারা দাবি করেন, মাদক পাচারকারী একটি চক্র ছদ্মনামে সাদিকে মেক্সিকোয় নেওয়ার চেষ্টা করছে।

No comments

Powered by Blogger.