হলমার্ক কেলেঙ্কারিঃ দুদকে জেসমিনের রিমান্ড শুরু

দেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে বৃহত্তম ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদের স্ত্রী ও কোম্পানির চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামের প্রথম দিনের রিমান্ড দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) শুরু হয়েছে।

শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তাকে রমনা থানা থেকে নিয়ে আসা হয়। ১১টা ৫০ মিনিটে প্রথম দিনের রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন দুদকের তদন্ত টিমের প্রধান ও জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচারক মীর জয়নুল আবদীন শিবলী ও সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান।

শুক্রবার দুদকের পক্ষ থেকে আদালতের কাছে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুদকের দায়ের করা দুর্নীতি মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা শাহরিয়ার খান এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান তাকে একটি মামলায় আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চান।

রিমান্ডে নেওয়ার পক্ষে শুনানি করেন দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল। এ সময় দুদকের আইনজীবী মো. কবির হোসাইন ও মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

কাজল শুনানিতে বলেন, “দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে এ মামলাটি দায়ের করেছে। আসামি হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান। আসামি আনোয়ারা স্পিনিং মিলস নামক একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে এলসি খুলে এ মামলায় সোনালী ব্যাংকের ২০৮ কোটি ৮ লক্ষ ৭৬ হাজার ২০০ টাকা আত্মসাত করেছেন। এই টাকা কোথায় আছে তা এ আসামি জানেন। সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই আসামিকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।”

রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিন চান জেসমিনের আইনজীবী কাজী নজীব উল্লাহ হিরু।

তিনি বলেন, “ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭ ধারার বিধান মোতাবেক একমাত্র কোনো পুলিশ কর্মকর্তাই রিমান্ড চাইতে পারেন। দুদকের কোনো কর্মকর্তা রিমান্ড চাওয়ার কথা আইনে বলা নেই। তাছাড়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর বৃহস্পতিবার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও তাতে আসামি জেসমিনের নাম বলেননি। তাই তাকে রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।” তিনি সবক’টি মামলায় আসামির জামিন চান।

উত্তরে কাজল বলেন, “দুদক রিমান্ডে নিতে পারে। দুদক আইনটি হয় ২০০৪ সালে। ২০০৭ সালে এর বিধি প্রণীত হয়। এ বিধিতে বলা আছে, মামলা তদন্তের সময় একজন দুদক কর্মকর্তা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে গণ্য হবেন। সুতরাং, দুদক আসামিকে রিমান্ডে নিতে পারে। এতে আইনগত কোনো বাধা নাই।”

এর আগে শুক্রবার দুপুরে জেসমিন ইসলামকে রমনা থানা থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) এনে সাড়ে ৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

রিমান্ড শুরু হওয়ার আগে দুদকের দুদকের জ্যেষ্ঠ উপপরিচালক জয়নুল আবেদীন শিবলী বাংলানিউজকে বলেন, অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের করা ১১টি মামলায়ই জেসমিন এজাহারভুক্ত আসামি।

ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে ঋণ কেলেঙ্কারির মামলায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মানিকগঞ্জ সার্কিট হাউজের পেছনে বেওথা রোডের ১০ নম্বর বাসা থেকে তাকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৪ ও র্যাবের গোয়েন্দা শাখার একটি যৌথ দল।

সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল (সাবেক শেরাটন) শাখা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে দুই হাজার ৬৬৭ কোটি আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে হলমার্ক গ্রুপের বিরুদ্ধে।

No comments

Powered by Blogger.