ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৮০ কিমি যানজট- যাত্রী দুর্ভোগ চরমে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪

আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। মহাসড়কের দাউদকান্দি টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা ও অতিরিক্ত যান চলাচলের কারণে বুধবার রাত তিনটা থেকে এ জট লাগে।


দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের হাবিলদার কামরুল হাসান জানান, এলোপাতাড়িভাবে অতিরিক্ত যান চলাচলের সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনা যুক্ত হওয়ায় যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো হাজারো যাত্রীর দুর্ভোগ এখন সীমাহীন। রাস্তার মাঝখানে আটকে থাকার কারণে অনেক যাত্রী সেহ্্রি পর্যন্ত খেতে পারেননি। চট্টগ্রাম থেকে রাত ১১টায় ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ইউনিক পরিবহনের যাত্রী পোশাকশ্রমিক সুমী (২২) জানান, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রাত তিনটায় যানজটে আটকা পড়ে গাড়ি। ছয় ঘণ্টা পর সকাল নয়টায় দাউদকান্দির গৌরীপুরে পৌঁছাই। অথচ রাত তিনটায় ঢাকা পৌঁছার কথা ছিল।
একই সময়ে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের যাত্রী নৌবাহিনীতে কমর্রত সামছুদ্দোহা রিপন যানজটে আটকা পড়েন স্ত্রী, আট ও সাড়ে তিন বছরের দুই মেয়েকে নিয়ে। আশপাশে খাবারের কোন দোকান না থাকায় তিনিসহ বাসের কোন যাত্রীই সেহ্রি খেতে পারেননি। হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লার পূর্বাঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন দাউদকান্দির গৌরীপুর চৌরাস্তার মোড়ে দায়িত্ব পালনকালে বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত কাভার্ডভ্যান ও লরি অন্যত্র সরানোর আগ পর্যন্ত দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। ঈদ উপলক্ষে এমনিতেই রাস্তায় যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ এবং তাঁর ওপর দুর্ঘটনা যানজটকে বাড়িয়ে তুলছে। যানজটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। বৃহস্পতিবার ভোরে কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কে লাকসামের চন্দনা কৃষ্ণপুরে বাস-কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত ও কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। নিহত ও আহতদের নাম জানা যায়নি। তবে তাদের সবার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে বলে জানা গেছে। তারা নোয়াখালীর চাটখিলে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছিলেন। আহতদের লাকসামের একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। লাকসাম থানার পরিদর্শক আবুল কাশেম চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কে লাকসামের চন্দনা কৃষ্ণপুর এলাকায় ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে বাসটি রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। এদিকে বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কের দাউদকান্দির জিংলাতলীতে লরি ও কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষের পর যানজট পরিস্থিতি আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত কাভার্ডভ্যানের চালক কাজী লিটন (৪০) ও সহকারী স্বপনকে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কাজী লিটনকে ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের গোপালপুর গ্রামে। দুর্ঘটনার এক ঘণ্টা পর রেকার এনে গাড়ি দুটি সরিয়ে নেয়া হলেও অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে যানজট রয়ে গেছে।

No comments

Powered by Blogger.