গ্রামীণফোনের প্রভাবে সূচক কমেছে ৩৪ পয়েন্ট- বাজারে আবার দরপতন

দেশের শেয়ারবাজারে গতকাল মঙ্গলবারও দরপতন ঘটেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক এই দিন ৪৯ পয়েন্ট কমেছে। মূলত গ্রামীণফোনের শেয়ারের দর কমে যাওয়ার প্রভাবেই এটি হয়েছে।
ঢাকার বাজারে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির পরও মূল্যসূচক ছিল ঋণাত্মক। ডিএসইর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রামীণফোনের দর কমার প্রভাবেই মূলত মূল্যসূচকে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। জানা গেছে, এই দিন গ্রামীণফোনের দর প্রায় ১০ টাকা কমে যাওয়ার ফলে সাধারণ সূচক কমেছে প্রায় ৩৪ পয়েন্ট।
একই সঙ্গে ডিএসইর লেনদেনের পরিমাণও আগের দিনের চেয়ে কমে ৬০০ কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক কমেছে ১৩০ পয়েন্ট। ঢাকার বাজারের মতো সিএসইতেও লেনদেন কমেছে।
আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের দৈনিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে তৈরি হওয়া সংশয় বাজারের গতিকে কিছুটা মন্থর করে দিয়েছে। একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশের মধ্যে ছিল মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মুনাফা তুলে নেওয়ার পর বিনিয়োগকারীরা পুনর্বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এ খাত ছেড়ে অন্য খাতে স্থানান্তরিত হচ্ছেন। এতে করে দাম কমার ক্ষেত্রে খাতভিত্তিক প্রভাবটা বেশি হচ্ছে। দর হ্রাসের ক্ষেত্রে এ দিন শীর্ষে ছিল টেলিযোগাযোগ খাতের একমাত্র কোম্পানি গ্রামীণফোন। মঙ্গলবার এক দিনেই কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ১০ টাকা। এরপরের অবস্থানে ছিল যথাক্রমে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলো।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ঈদের আগে-পরে কয়েক দিন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মূল্যবৃদ্ধির পর দুই দিন ধরে সেগুলোর কিছুটা মূল্য সংশোধন হয়েছে।
আগের দিনের মতো গতকালও ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচকে কিছুটা ওঠানামা ঘটেছে। এই দিন সাধারণ সূচকের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন অবস্থানের মধ্যকার ব্যবধান ছিল ৮৬ পয়েন্টের। ঢাকার বাজারে এই দিন ২৬৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে ১২৭টিরই দাম বেড়েছে, কমেছে ১১৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। দিন শেষে ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় চার হাজার ২৯২ পয়েন্টে। লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৮১ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৪৯ কোটি টাকা কম। লেনদেনের শীর্ষ পাঁচ কোম্পানির তালিকায় ছিল যথাক্রমে: ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস, আরএন স্পিনিং, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্লস ও বেক্সিমকো লিমিটেড।
চট্টগ্রামের বাজারে এই দিন ১৯৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭টির, কমেছে ৯৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১২টির দাম। দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৬৫ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় সাত কোটি টাকা কম। সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক কমে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৯৬৭ পয়েন্টে।

No comments

Powered by Blogger.