ফেসবুকেই মতামত জরিপ by একরামুল হক শামীম

ফেসবুক সম্প্রতি একটি অ্যাপ্লিকেশন শুরু করেছে 'কোয়েশ্চেনস' নামে। ভাবতে পারেন এ আর এমনকি বিষয়? পত্রিকাগুলোতে হরহামেশাই এই ধরনের মতামত জরিপ গ্রহণ করা হয়। কোনো একটা বিষয়ে জানতে চেয়ে তার পক্ষে-বিপক্ষে পাঠকদের মতামত চাওয়া হয়।


তবে ফেসবুকের চালু হওয়া নতুন অ্যাপ্লিকেশনটি আরও উন্নত। কোনো একটা বিষয়ে মতামত চেয়ে অনেকগুলো উত্তর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে ফেসবুকের কোয়েশ্চেনস অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে।
গত বছর ফেসবুক ব্যবহারকারীদের প্রশ্ন নিয়ে একটি অ্যাপ্লিকেশন করার চিন্তাভাবনা শুরু করে। ২৯ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে তা জানানোও হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, ফেসবুকের মিলিয়ন মিলিয়ন ব্যবহারকারী প্রতিদিন নানা ধরনের প্রশ্ন করে ফেসবুকে। যেমন প্রিয় মুভি কোনটি, শহরের সেরা খাবারের দোকান কোনটি, বছরের সেরা বই কোনটি। এই বিচ্ছিন্ন প্রশ্নগুলোকে একই সুতায় অর্থাৎ একই অ্যাপ্লিকেশনে বাঁধার লক্ষ্য নিয়েই ফেসবুক কর্তৃপক্ষ 'কোয়েশ্চেনস' নামের একটি অ্যাপ্লিকেশন শুরু করার পরিকল্পনা করে। কয়েক মাসের গবেষণার ফল হিসেবে গত ২৫ মার্চ শুরু হয় এই অ্যাপ্লিকেশন। ফেসবুকের এই নতুন অ্যাপ্লিকেশন 'কোয়েশ্চেনস'-এর প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আদ্রিয়ান গ্রাহাম। তিনি অ্যাপ্লিকেশনটিকে চিহ্নিত করেছেন 'উইজডম অব ফ্রেন্ডস' হিসেবে। তার মতে, এটি ব্যবহার করে বন্ধুদের জ্ঞানকে জেনে ও বুঝে নেওয়ার সুযোগ থাকে।
এরই মধ্যে নানা ধরনের প্রশ্নও আসছে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে। বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের করা কিছু প্রশ্নের দিকে নজর দেওয়া যাক। একটি প্রশ্ন_ বাংলাদেশে কোন নদীটি আপনার প্রিয়তম? এতে ভোট এসেছে ৫৮৪টি, এই প্রশ্নের অনুসরণকারী ৩৯ জন। আবার সাহিত্য ও চলচ্চিত্র নিয়ে জানতে আগ্রহীরা প্রশ্ন রাখছেন সেসব বিষয়ে। প্রশ্ন এসেছে, আপনার দেখা সেরা রোমান্টিক মুভি কোনটি। এতে ভোট পড়েছে ৮৪৩২টি, অনুসরণকারীর সংখ্যা ৩৮৬। ১৮৩১ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছে 'অ্যা ওয়াক টু রিমেম্বার'। সাহিত্য বিষয়ে প্রশ্ন এসেছে_ জনপ্রিয়তম বাংলা উপন্যাস কোনটা? ভোট এসেছে ২৩৩৮, অনুসরণকারী ৮৯ জন। ২৭৯ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছে 'পথের পাঁচালী'। অন্যদিকে একজন ব্যবহারকারী প্রশ্ন করেছেন_ সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রশ্নে ভোট এসেছে ১ লাখ ২০ হাজার ৩৫৬টি। এতে ২৮১৩০ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছে 'সততা'। এভাবেই নানা বিষয়ে জানার সুযোগ হচ্ছে ফেসবুকের এই অ্যাপ্লিকেশনটির মাধ্যমে।
ফেসবুকে চালু হওয়া অ্যাপ্লিকেশনগুলোর ক্ষেত্রে একটি ব্যাপার খুব সাধারণ। নতুন যে কোনো অ্যাপ্লিকেশন চালু হওয়ার পর কিছুদিন তার যথেচ্ছ ব্যবহার চলে। কোয়েশ্চেনস অ্যাপ্লিকেশনও তার ব্যতিক্রম নয়। এটি ব্যবহার করে অনেক ব্যবহারকারী ইচ্ছামতো প্রশ্ন করে যাচ্ছে। সকাল-বিকেল নতুন নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে অনেকেই কিছুটা বিরক্ত হচ্ছেন। তবে কোয়েশ্চেনস অ্যাপ্লিকেশনটির ইতিবাচক সম্ভাবনার দিকটি মাথায় রাখা উচিত। ইতিবাচকভাবে এটি ব্যবহার করা গেলে গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসবে। যে কোনো ধরনের গবেষণার ক্ষেত্রে 'অনলাইন টুল' হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে অ্যাপ্লিকেশনটি। কারণ এর মাধ্যমে সহজেই লাখ লাখ ব্যবহারকারীর সামনে মতামত জানতে চাওয়া যাচ্ছে, ইচ্ছামতো অপশন যোগ করে দেওয়া যাচ্ছে, নানা বয়সী, নানা পেশার লোকজনের কাছে প্রশ্ন রাখা যাচ্ছে। সুতরাং এই অ্যাপ্লিকেশনটির ইতিবাচক ব্যবহারই কাম্য।
samim707@gmail.com
 

No comments

Powered by Blogger.