ফিল্মস্টারদের প্রতি অখুশি ‘আজমীর শরীফ’ কর্তৃপক্ষ

আজমীর শরীফ দরগাহ্ সব ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিখ্যাত কারণ সবাই বিশ্বাস করেন এখানে কোনো দোয়া চাইলে সেটা ব্যর্থ হয় না। তাইতো সব ধর্মের, সব শ্রেণীর মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায় পীর সাহেবের দরগাহ্ শরীফে। এমনকি ফিল্ম স্টারদেরও দরগাহ্ শরীফে বিপুল আনাগোনা দেখা যায়। যাদের ভাগ্য প্রতিটা ফিল্মের সঙ্গে সঙ্গেই পরিবর্তিত হয়। ফিল্মস্টারদের এই আনাগোনাতে অখুশি দরগাহ্ কর্তৃপক্ষ।

দরগাহ্ দেওয়ান জয়নুল আবেদীন আলি খান যিনি খাজা মঈনুদ্দীন হাসান চিশতীর বংশধর বিশ্বাস করেন, পবিত্র এই জায়গাকে ইসলামী আইনে নিষিদ্ধ এমন কিছুর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করা ঘোরতর অন্যায়। গত রোববারে খান একটি বিবৃতি দিয়েছেন যাতে তিনি উল্লেখ করেন, নাচ এবং সিনেমা ইসলামে নিষিদ্ধ। এখনকার প্রায় সব সিনেমাই অশ্লীলতা প্রচার করছে যেটা সমাজের নৈতিক অবক্ষয় সৃষ্টি করছে। ফিল্ম স্টাররা যত্রতত্র এই দরগাহ্ শরীফে আসছেন, তাদের ছবির সফলতার জন্য পীরের করুণা ভিক্ষা করতে। সেই ছবি আবার তারা ফলাও করে মিডিয়ায় প্রচারও করছেন। এধরনের প্রচারণামূলক কার্যাদি মেনে নেয়া হবে না।
দরগাহ্ দেওয়ান এই বিষয়ে আরো বলেন, “ফিল্মস্টাররা দরগাতে আসুক, ১০ জনের জায়গায় ১০০ জন আসুক আমাদের তাতে কোনো অসুবিধা নাই। কিন্তু তারা নিজেদের ফিল্ম হিট করানোর জন্য দরগাতে আসে এবং মাজারে ফিল্মের সিডি রেখে যায়, সেটা অন্যায়। আমরা তো জানিনা সেই ফিল্মে কি আছে আর কি নাই। দেখা গেল সেই ফিল্মে একটি ধর্ষণ দৃশ্য আছে যেটা দর্শকদের দেখিয়ে তারা ফিল্মটি হিট করাবে। আর এই ধরনের ফিল্মের জন্য তারা খাজাজির কাছে দোয়া মাঙ্গতে আসে। এটা ঘোরতর অন্যায়।”

ধর্মীয় প্রধান হিসেবে তিনি ইসলামী বিশেষজ্ঞ এবং আলেম উলেমাদের কাছে এই ইস্যুটি গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন বলে জানান। কিন্তু তিনি রীতিমত অবাক হয়েছেন তাদের চুপ থাকা দেখে। তাদের অবশ্যই এই ইস্যুতেও ভূমিকা রাখা দরকার যেমন তাদের সরব দেখা যায় অন্যান্য ইস্যুতে।

নিজামুদ্দীন দরগাহর ইনচার্জ সৈয়দ আফসার আলি নিজামী বলেন, “এটা খাজা বাবার দরগাহ্। আমরা তো কাউকে আসতেই নিষেধ করি না। সবাই তার কাছে দোয়া মাঙ্গতে আসেন। যার দোয়া কবুল হয় সে বারবার আসে। কিন্তু এই বিষয়টাকে বাণিজ্যিক দিক দিয়ে দেখা এবং সেই বাণিজ্যিকিকরণ বিষয়টা মিডিয়ায় আলোতে আনা অন্যায়। যদি ফিল্মস্টাররা বিশ্বাস করেন আজমীর শরীফে তাদের দোয়া চাওয়ার ফলে তাদের ফিল্ম বক্স অফিস হিট হয়েছে তাতে আমাদের তো কোনো অসুবিধা নাই। বাবার দোয়াতে যদি কারো কাজকারবার চলে তাতে খারাপের কি আছে!”

ইসলাম আলাদা, দরগাহ্ আলাদা। এখানকার মসজিদ মুললিমদের কিন্তু দরগাহ্ শরীফ সবার জন্য উন্মুক্ত। সবাই দোয়া চাইতে আজমীর শরীফে আসতে পারেনঅ কথা হলো -ইসলামে গান নিষিদ্ধ। কিন্তু দরগার ভেতরে কাওয়ালীর আয়োজন চোখে পড়ার মতো। কয়েকদিন আগে নমস্তে লন্ডনের শু্যটিং হয়েছে এই দরগাতে। দরগাহ্ কর্তৃপক্ষ যদি ধর্ম নিয়ে এতই যৌক্তিক বিবেচনা করেন তাহলে দরগার ভেতরে কেন ফিল্মের শু্যটিং করার অনুমতি দেন! এসব প্রশ্ন ভেসে বেড়াচ্ছে সবার মুথে মুখে। ফিল্মস্টারদেরও এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে বিভিন্ন রকম মতামত দিতে দেখা যাচ্ছে। সূত্র: টাঅই

No comments

Powered by Blogger.