সান্তাহার স্টেশনের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ-কানুনগোর বিরুদ্ধে রেলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

বগুড়ার সান্তাহার রেলওয়ে জংশন স্টেশনের ভূ-সম্পত্তি বিভাগের কানুনগো জিয়াউল হক ও সাবেক আমিন আলী হোসেনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে রেলভূমির লাইসেন্স নবায়নের কয়েক লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।


আলী হোসেন বর্তমানে লালমনিরহাটে চেইনম্যান হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। জালিয়াতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে তিনি দাবি করেন, কানুনগো জিয়াউল হকের নির্দেশে তিনি কাজটি করেছেন। এই নির্দেশ-সংক্রান্ত চিঠি তাঁর কাছে রয়েছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, সান্তাহার কানুনগো কার্যালয় থেকে সান্তাহার, নাটোর, রানীনগর, আত্রাই, আক্কেলপুরসহ বিভিন্ন স্টেশনের রেলভূমি ব্যবহারের ফি আদায় করা হয়। লাইসেন্সধারীরা ব্যাংকের ডিমান্ড ড্রাফটের (ডিডি) মাধ্যমে ফি জমা দেন। ২০১০ অর্থবছরে ওই কার্যালয়ের আমিন আলী হোসেন লাইসেন্স ফি গ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন। লাইসেন্স গ্রহীতা গোলাম মোর্শেদ বলেন, সম্প্রতি ২০১২ সালের লাইসেন্স নবায়ন ফি জমা দিতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, গত বছরে তাঁর জমা দেওয়া ডিডির টাকার সঙ্গে মূল হিসাব বইয়ে গরমিল রয়েছে। তাই চলতি বছরের নবায়ন ফি জমা নেওয়া সম্ভব হবে না।
গোলাম মোর্শেদ অভিযোগ করেন, ২০১০ সালের ১৪ জুন তিনি দুটি ডিডির মাধ্যমে মোট ৬৫ হাজার ১৬ টাকা জমা দেন। কিন্তু পাঁচ হাজার ৪০০ টাকার ১৭১০৪০ নম্বর রসিদে মূল বইয়ে জমা দেওয়া হয় দুই হাজার ৪৭৫ টাকা। একইভাবে ১৫৭০৯০ নম্বর রসিদে ২৮ হাজার ৬০০ টাকার স্থলে ১০ হাজার ৮০০ টাকা জমা করা হয়। তাঁর মতো সান্তাহার শহরের শাহাজাহান, মোজাম্মেল হক, বেলাল হোসেনসহ আরও অনেকের জমা দেওয়া কয়েক লাখ টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে ৯ জুলাই পাকশী বিভাগীয় ভূ-সম্পদ কর্মকর্তা কিরণ চন্দ্র বলেন, ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে গতকাল পর্যন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি।
যোগাযোগ করা হলে আলী হোসেন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, কানুনগো জিয়াউল হক তাঁকে একটি চিঠির মাধ্যেমে ডিডি জালিয়াতি করে অর্থ জমা করার নির্দেশ দেন। ওই টাকা রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিতে হবে বলে তাঁকে ওই চিঠিতে জানানো হয়। চিঠিতে এ কাজ না করলে তাঁকে সাসপেন্ড করার হুমকি দেন জিয়াউল হক। জিয়াউল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ওই চিঠি তাঁর হাতের লেখা নয় বলে তিনি দাবি করেন। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথমে সহকারী এস্টেট অফিসার আশীষ কমুার ও তাঁকে তদন্ত কমিটিতে রাখা হয়েছিল। পরে তাঁকে বাদ দিয়ে সার্কেল অফিসার (রাজস্ব) রেদোয়ান আহম্মেদকে রাখা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.