চাতালের ছাই-দায়িত্বশীলতাও কি উড়ে গেছে?

ধান ভাঙানোর চাতালে কর্মরত শ্রমিকের অধিকারহীনতা, বয়লার দুর্ঘটনার ঝুঁকি কিংবা মোটাদাগে পরিবেশ দূষণের কথা আমরা জানি; কিন্তু এগুলোর ভয়াবহতা কতটা, তার খণ্ডচিত্র ফুটে উঠেছে রোববার সমকালের লোকালয় পাতায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে।


সেখানে বলা হয়েছে, পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার জয়নগর শিমুলতলা এলাকায় গত ১৫ বছরে তিন হাজারের বেশি মানুষ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। চোখের সমস্যায় পড়েছে ছয় হাজারেরও বেশি। জানা যাচ্ছে, কেবল ছলিমপুর ইউনিয়নেই রয়েছে সাড়ে চারশর বেশি চাতাল। কিন্তু এগুলো থেকে প্রতিদিন যে বিপুল ছাই উৎপন্ন হয়, সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। রাস্তার পাশেই স্তূপ করে রাখা এসব ছাই গোটা এলাকায় উড়ে বেড়ানোর কারণে চোখের সমস্যায় পড়ছে মানুষ। এটা রীতিমতো সামাজিক অপরাধ ছাড়া আর কিছু নয় এবং তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। চাতাল ব্যবস্থাপনার গ্রহণযোগ্য নানা উপায় থাকা সত্ত্বেও যেভাবে সেখানকার জীবন ও প্রকৃতিতে ছাই ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা অবিশ্বাস্য। এ সংক্রান্ত অসুবিধার জন্য ১৯৯৫ সালের আগস্ট মাসে সেখানে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে চাতালের মালিকদের পক্ষে বিদ্যালয়ে ক্লাস চলা অবস্থায় ধান সেদ্ধ বা চুলা না জ্বালানোর লিখিত অঙ্গীকার করা হয়। কিন্তু তা তিন মাসের বেশি মেনে চলা হয়নি। আমরা মনে করি, কেবল স্কুল চলাকালে চুলা বন্ধ নয়, সেখানকার চাতালগুলোকে সম্পূর্ণভাবে স্বাস্থ্য ও পরিবেশসম্মত উপায়ে পরিচালনা করতে হবে। গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর কারণে দায়িত্বহীনতার কারণে গোটা জনপদের অসুবিধা মেনে নেওয়া যায় না। স্থানীয় প্রশাসন এ পরিস্থিতিতেও চোখ-কান বন্ধ করে আছে কেন বোধগম্য নয়। চাতালের ছাইয়ের সঙ্গে তাদের দায়িত্বশীলতাও কি উড়ে গেছে? কেবল শিমুলতলা নয়, ঈশ্বরদীর আরও জনপদ নিশ্চয়ই এমন অসুবিধার সম্মুখীন। বস্তুত গত দুই দশকে দেশে, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে শত শত চাতাল প্রতিষ্ঠিত হলেও এগুলোর ব্যবস্থাপনা এখনও পুরোপুরি ব্যক্তির মর্জির ওপর নির্ভরশীল। ধান ভাঙানোর এসব বিশাল আয়োজন নিয়ন্ত্রণহীনও। চাতালগুলোর কারিগরি কিংবা শ্রম ব্যবস্থাপনার ধরন দূরে থাক, এর সংখ্যাও বোধহয় সরকারের
 

No comments

Powered by Blogger.