পদ্মা সেতু প্রকল্প-বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রেসিডেন্টকে চিঠি লিখবেন অর্থমন্ত্রী

পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়নে বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্ত বাতিলের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য নতুন প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমকে শিগগির চিঠি লিখবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল মঙ্গলবার বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।


অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের বিকল্প পরিচালক যিনি রয়েছেন, তিনি ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সংস্থাটির বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা শুরু করেছেন, যাতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন তিনি নিজে বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রেসিডেন্টকে যে চিঠি লিখবেন, তাতে কথিত দুর্নীতির ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, এর বিস্তারিত তুলে ধরবেন।
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘আমি অচিরেই চিঠি লিখব এবং চিঠিতে আমরা কী কী করেছি তাঁর একটা বিবৃতি দেব। আমরা যা করেছি, সেটা কারও পক্ষে করা সম্ভবপর নয়। কোনো দেশের পক্ষে সম্ভব নয়। এত নমনীয় হওয়া, এতগুলো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া, এটা আমার মনে হয় না কোনো একটি দেশ সাধারণত সহ্য করতে পারবে।’
দুর্নীতিতে জড়িত বলে যাঁদের নাম এসেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেবেন—এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো আমার শেষ পদক্ষেপের কথা বলেছি। আমি যদি একটুখানি নিশ্চিত হতে পারি, তাহলে তাঁদের ছুটিতে পাঠিয়ে দেব।’
মন্ত্রী বা সচিবসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ে যাঁরা জড়িত আছেন বলে অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে ‘অত কথা আমি বলতে রাজি না’ বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী। সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে যে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী এবং সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তাকে ইতিমধ্যে অন্য মন্ত্রণালয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী সংসদে দেওয়া বিবৃতিতে পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন বাতিলের সিদ্ধান্তের জন্য বিশ্বব্যাংকের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোয়েলিককে দায়ী করেছিলেন। অভিযোগ তদন্তের আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া সঠিক হয়নি বলে তিনি এখনো মনে করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটা পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে এ জন্য যে এটা (সিদ্ধান্ত) তো সঠিক হয়নি। জাইকা বলেন, এডিবি বলেন, আইডিবি বলেন, কারও সঙ্গে আলোচনা করেনি বিশ্বব্যাংক। তাদের নোটিশ দিয়েছে, যে কারণে আপনারা বিভিন্নজনের কাছ থেকে বিভিন্ন বক্তব্য শুনতে পাচ্ছেন। সুতরাং, এটা পুনর্বিবেচনা করতেই হবে। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক পুরোনো। এ রকম একটা অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত দিয়ে এটাকে নষ্ট করা যাবে না। আমরা যতদূর সম্ভব নমনীয় হওয়া যায় তত দূর হয়েছি। কিন্তু আমার দেশকে উনি বলবেন দুর্নীতিপরায়ণ, কী করে আমি সেটা গ্রহণ করব?’

No comments

Powered by Blogger.