ইসরায়েলে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাল ইরান

ইসরায়েলে আঘাত হানতে সক্ষম এমন একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে ইরান। যুদ্ধ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়। স্থানীয় গণমাধ্যম প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
ইরানের আল-আলম টেলিভিশন জানায়, গ্রেট প্রফেট-৭ নামে সামরিক মহড়ার দ্বিতীয় দিনে রেভল্যুশনারি গার্ড গতকাল


কাভির মরুভূমি থেকে ওই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়, যা এক হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইসরায়েলে সহজেই আঘাত হানতে সক্ষম। শাবাব-৩ নামে মাঝারি পাল্লার ওই ক্ষেপণাস্ত্র মরুভূমির একটি সাজানো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। ক্ষেপণাস্ত্রটি দুই হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। আজ বুধবার তিন দিনের মহড়াটি শেষ হচ্ছে।
আল-আলম টেলিভিশন আরও জানায়, মহড়ার সময় শাহাব-১ ও শাহাব-২ নামে ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরপাল্লার আরও দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। রেভল্যুশনারি গার্ডের ক্ষেপণাস্ত্র-ব্যবস্থার ভারপ্রাপ্ত প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ফারসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাভির মরুভূমির ওই নির্দিষ্ট লক্ষ্যস্থলে বিভিন্ন ধরনের আরও বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। বার্তা সংস্থা ইসনার এক খবরে বলা হয়, আজ বুধবার মহড়ার শেষ দিনে চালকবিহীন বিমান (ড্রোন) হামলার মহড়া চলবে।
রেভল্যুশনারি গার্ডের দ্বিতীয় প্রধান কর্মকর্তা জেনারেল হোসেইন সালামি বার্তা সংস্থা ইরনাকে বলেছেন, তেহরান এর আগেও শাহাব ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। আবার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর মাধ্যমে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তারা এই বার্তা দিল যে, ইরানে হামলা চালানোর আগে তারা যেন দ্বিতীয়বার চিন্তা করে।
জেনারেল সালামি আরও বলেন, ‘জাতীয় স্বার্থ ও মূল্যবোধ রক্ষায় ইরানের জনগণের যথেষ্ট ইচ্ছা ও সামর্থ্য আছে—গ্রেট প্রফেট-৭-এর মহড়া সেই মনোবলকেই তুলে ধরেছে।’ এ ছাড়া ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা শতভাগ সফল হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সমস্যার সব সম্ভাব্য সমাধানই আলোচনার টেবিলে রয়েছে বলে যারা ইরানের জনগণকে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করতে চায়, তাদের জন্য এটা একটা উপযুক্ত জবাব।’
পারমাণবিক কর্মসূচির প্রশ্নে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলোর আলোচনার টেবিলে নেই ইসরায়েল। তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই বলেছে, অবরোধ আরোপ ও কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে তেহরানকে পরমাণু কর্মসূচি থেকে বিরত করা না গেলে তারা ইরানে সামরিক অভিযান চালানোর বিষয়ে অগ্রসর হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও বেশ কয়েকবার বলেছেন, ‘সমস্যা সমাধানের সব সম্ভাবনাই আলোচনার টেবিলে রয়েছে।’
১৯৮৮ সালের ৩ জুলাই ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় তেহরানের ২৯০ জন যাত্রী বহন করা একটি বেসামরিক বিমান ভূপাতিত করে যুক্তরাষ্ট্র। এর ২৪তম বার্ষিকী পালন উপলক্ষে ইরান এই মহড়ার আয়োজন করেছে। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.