তুরস্কের পত্রিকার খবর-তুর্কি বিমান ভূপাতিত করার ঘটনায় আসাদ ‘অনুতপ্ত’

তুর্কি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার ঘটনায় ‘শতভাগ’ অনুশোচনা প্রকাশ করেছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। প্রেসিডেন্ট আসাদের উদ্ধৃতি দিয়ে তুরস্কেরচুমহুরিইয়েত সংবাদপত্র এ খবর দিয়েছে। তবে আসাদ আবারও দাবি করেছেন, বিমানটি সিরিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছিল।


গত মাসে সিরীয় বিমানবিধ্বংসী ইউনিটের গুলিতে তুরস্কের যুদ্ধবিমানটি ভূমধ্যসাগরে পতিত হয়। এর পর থেকেই বিমানটির দুজন পাইলট নিখোঁজ রয়েছেন। এ নিয়ে প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত সপ্তাহে তুর্কি প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সিরিয়াকে একটি ‘পরিষ্কার হুমকি’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তুরস্ক তার সিরীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় রকেট লাঞ্চার ও বিমানবিধ্বংসী অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করেছে।
তুর্কি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার ঘটনায় তিনি ‘শতভাগ অনুতপ্ত’ উল্লেখ করে চুমহুরিইয়েত পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিরীয় প্রেসিডেন্ট আসাদ বলেন, ‘আমরা ঘটনাটিকে দুই দেশের মধ্যে বিস্তৃত যুদ্ধে রূপ নিতে দেব না।’ তবে বিমানটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভূপাতিত করার খবর তিনি নাকচ করে দেন। তিনি দাবি করেন, সিরীয় বাহিনী সেটিকে ইসরায়েলের বিমান ভেবে ভুল করে। কেননা, ২০০৭ সালে ওই অঞ্চল ব্যবহার করে ইসরায়েলি বিমান সিরিয়ায় আক্রমণ চালিয়েছিল।
সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, গত রোববার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে প্রেসিডেন্ট আসাদের ওই সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। পত্রিকাটিতে আসাদের একটি ছবিও ছাপা হয়েছে। ছবিতে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট আসাদ ও পত্রিকাটির আঙ্কারা ব্যুরোর প্রধান উতকু সাকিরোজার পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছেন।
অন্যদিকে তুরস্কের গণমাধ্যমের খবরে গত সোমবার বলা হয়, তুর্কি সীমান্ত এলাকায় সিরিয়ার আরও ৮৫ জন সেনাসদস্য স্বপক্ষ ত্যাগ করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ১৪ জন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। ২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ায় বিদ্রোহ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত স্বপক্ষত্যাগী সেনাদলগুলোর মধ্যে এটাও একটা বড় দল।
‘নির্যাতনের দ্বীপপুঞ্জ’ পরিচালনা করছে সিরিয়া: এইচআরডব্লিউ
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) গতকাল মঙ্গলবার বলেছে, সিরিয়ায় বিপুলসংখ্যক বন্দী নির্যাতনকেন্দ্র রয়েছে। সেখানে আটক রয়েছে হাজার হাজার লোক। এসব কেন্দ্রকে ‘নির্যাতনের দ্বীপপুঞ্জ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনটি।
নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটির এক প্রতিবেদনে সিরিয়াজুড়ে ২৭টি বন্দীকেন্দ্রের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত হাজির করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারবিরোধী আন্দোলন ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের অভিযানে আটক ব্যক্তিদের এসব কেন্দ্রে নিয়ে রাখা হয়।
মানবাধিকার গ্রুপটি বলেছে, তারা দুই শতাধিক সাবেক বন্দী এবং সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার স্বপক্ষত্যাগী ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নিয়েছে। তাঁদের প্রায় সবাই বলেছেন, বন্দীকেন্দ্রে তাঁরা নির্যাতিত হয়েছেন বা নির্যাতন প্রত্যক্ষ করেছেন। এএফপি ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.