শেরপুরে কালভার্ট বিক্রি করেছেন আ.লীগ নেতা

বগুড়ার শেরপুরের গাড়িদহ ইউনিয়নের খামারকান্দি-শিবপুর সড়কের শিবপুর গ্রামে একটি কালভার্ট ভেঙে রড ও ইট বিক্রি করে দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা আবদুস সালাম। এই ঘটনায় উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কর্মরত দুজনের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
গত মঙ্গলবার দিনে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) এ কালভার্টটি ভেঙে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। কালভার্টটি ভেঙে নেওয়ায় ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী শিবপুর, খামারকান্দি, পারভবানিপুর, নগর ও ঘোড়দৌড় গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রকৌশলী ওবায়দুল ইসলাম গত বুধবার আবদুস সালাম ও তাঁর সহযোগী শফিকুল ইসলামের নামে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, কালভার্টটি ভেঙে এর ইট ও রড খুলে নেওয়ায় ওই স্থানে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এ কারণে ওই স্থান দিয়ে কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। লোকজনকে হেঁটে চলাচল করতে হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্যমতে, প্রায় ২০ বছর আগে পানি নিষ্কাশনের সুবিধার্থে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়। শিবপুর গ্রামের সেরাব আলী জানান, গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আবদুস সালামের নেতৃত্বে ১০-১২ জন লোক কালভার্টটি ভেঙে রড ও ইট খুলে নেয়। এ সময় বাধা দিলে আবদুস সালাম বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তার কথামতো ভাঙা হচ্ছে। আমি সরকারি দল করি। তোমাদের কথায় কিছু হবি না।’
গাড়িদহ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল বারী জানান, আবদুস সালাম গ্রামের জনগণকে বিপদে ফেলে কালভার্ট ভেঙে নিয়ে গেছে। এতে শিবপুরসহ পাঁচটি গ্রামের কৃষকেরা উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্ভোগে পড়েছেন।
যোগাযোগ করা হলে আবদুস সালাম নিজেকে গাড়িদহ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পরিচয় দিয়ে ওই কালভার্ট ভেঙে রড ও ইট বিক্রি করে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, কালভার্টটি ভেঙে নেওয়ায় জন্য তাঁকে উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের কার্য সহকারী আমিনুল ইসলামের মাধ্যমে ওই কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী আনছার আলীকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। তিনি দাবি করেন, টাকা নেওয়ার পর আমিনুল তাঁকে কালভার্টটি ভেঙে নিতে বলেছেন।
তবে আমিনুল ইসলাম আবদুস সালামের কাছ থেকে টাকা গ্রহণের কথা অস্বীকার করেন। আর আনছার আলীও টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। গাড়িদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান জানান, আবদুস সালাম ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি।
উপজেলা প্রকৌশলী ওবায়দুল ইসলাম জানান, ১৫ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১১ ফুট প্রস্থের ওই কালভার্টটি ভেঙে নেওয়ার সরকারি কোনো অনুমতি নেই। কালভার্টটি ভেঙে নেওয়ায় তিনি শিবপুর গ্রামের আবদুস সালাম ও তাঁর সহযোগী রফিকুলের নামে থানায় ডায়েরি করেছেন। এ ঘটনায় তাঁর কার্যালয়ের কেউ সম্পৃক্ত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

No comments

Powered by Blogger.